যমুনা ব্যাংকের ২৪ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন
Published: 28th, June 2025 GMT
বেসরকারি মালিকানাধীন যমুনা ব্যাংক পিএলসি ২০২৪ সালের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ ও বোনাস মিলিয়ে মোট ২৪ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে নগদে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং স্টক বা বোনাস শেয়ারে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রদান করা হবে। সম্প্রতি ব্যাংকের ২৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এই লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়।
যমুনা ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ভার্চ্যুয়াল তথা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান রবিন রাজন সাখাওয়াত। এতে ব্যাংকের পরিচালকবৃন্দ ও স্বতন্ত্র পরিচালকগণ; ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন আহম্মদ, কোম্পানি সচিব এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার অংশ নেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বার্ষিক সাধারণ সভায় যমুনা ব্যাংকের ২০২৪ সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক বিবরণী উত্থাপন করলে শেয়ারহোল্ডাররা অনুমোদন করেন। তাঁরা ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর নিজ নিজ মতামত দেন এবং নানাবিধ বিষয়ে প্রস্তাব পেশ করেন। অন্যদিকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে সব শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও অংশীজনের প্রতি তাঁদের নিরবচ্ছিন্ন আস্থা, সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ব্যাংকিং কার্যক্রমে উদ্ভাবন, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও গুণগত মান নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
এদিকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইট দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, যমুনা ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের এর আগে ২০২৩ সালে নগদে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ও বোনাস শেয়ারে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ২০২২ সালেও নগদে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ও বোনাস শেয়ারে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। এ ছাড়া ২০২০ ও ২০২১ সালে নগদে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করে লভ্যাংশ দেয় শেয়ারহোল্ডারদের।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে যমুনা ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১০ পয়সা বেড়ে ১৭ টাকা ৮০ পয়সায় উন্নীত হয়। বেসরকারি মালিকানায় ২০০১ সালের ৩ জুন যমুনা ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ য় রহ ল ড র র পর চ
এছাড়াও পড়ুন:
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রকল্পে অর্থায়ন রয়েছে প্রাইম ব্যাংকের
কৌশলগতভাবে পরিবেশ ও সমাজের উন্নতি করে, একই সঙ্গে ভালো মুনাফা দেয়—এমন টেকসই প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। এতে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ তৈরি হয় এবং ব্যাংকের সুনাম বাড়ে। প্রাইম ব্যাংকও টেকসই অর্থায়নের মাধ্যমে পরিবেশ ও সমাজে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরিতে কাজ করছে। আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও কার্বন নিঃসরণ কমায় এমন বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়মিত অর্থায়ন করছি।
প্রাইম ব্যাংক টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসনের বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিশেষ করে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) এবং নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় সহযোগিতা করা হয়। গ্রিন ফাইন্যান্স সাপোর্ট ডেস্ক ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে ব্যাংকটি। প্রাইম ব্যাংকের এসব নীতির ফলে একদিকে দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি কমছে; অন্যদিকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও মুনাফার স্থিতিশীলতা বাড়ছে। পাশাপাশি অনাদায়ি ঋণের আশঙ্কা কমছে।
টেকসই ঋণের আওতায় পরিবেশগত দিকের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের খাতকেও বুঝায়। আর পরিবেশবান্ধব বা গ্রিন অর্থায়নের আওতায় শুধু পরিবেশবান্ধব খাতে ঋণ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে প্রাইম ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকের মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। ২০২৩ সালে এই খাতে ঋণ ছিল বিতরণ করা মোট ঋণের ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৪ সালে প্রাইম ব্যাংকের টেকসই ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮০ হাজার ৪১৬ কোটি টাকায়, যা ব্যাংকের মোট ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালে এটি ছিল মাত্র ৩৮ শতাংশ।
অর্থাৎ, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব—উভয় খাতেই ভালো করছে প্রাইম ব্যাংক। এটি সম্ভব হয়েছে মূলত ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন নীতির সঠিক বাস্তবায়ন এবং পরিবেশ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে বিনিয়োগের ফলে। এ প্রচেষ্টার কারণেই প্রাইম ব্যাংক তিন বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন রেটিংয়ে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক হিসেবে স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া ইউরোমানি প্রকাশনা সংস্থা বাংলাদেশে ইএসজি মানদণ্ডে সেরা ব্যাংক হিসেবে প্রাইম ব্যাংককে টানা তিন বছর ধরে পুরস্কৃত করছে।
প্রাইম ব্যাংক ২০১৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বার্ষিক টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি জাতিসংঘের নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সে যোগ দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় গত বছর ব্যাংকের প্রথম জলবায়ু কৌশল প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ঋণ প্রদানে ইএসজি মানদণ্ড অনুসরণ শুরু করে প্রাইম ব্যাংক।
প্রাইম ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন প্রকল্পগুলো দেশের ব্যাংকিং খাতে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় প্রাইম ব্যাংক। উন্নত যন্ত্রপাতি ক্রয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণে এসব ঋণ দেওয়া হয়। যেমন নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ফারিহা স্পিনিং মিলসকে প্রাইম ব্যাংক প্রায় ১২৭ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এই টাকা ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের স্পিন্ডল বা সুতা পাকানোর যন্ত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে। এতে একদিকে কাজের গতি বেড়েছে; অন্যদিকে, বছরে প্রায় ৩ হাজার ৯৭৩ টন কার্বন নির্গমন কমাতে সহায়তা করছে। এই সম্প্রসারণের ফলে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ১ হাজার ৮২৪ জনের। আরেক রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এবিআর স্পিনিং মিলসে ১২৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করে প্রাইম ব্যাংক। এই অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে বছরে প্রায় ৪৫ লাখ ৮৭ হাজার কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারছে; এতে কার্বন নির্গমন কমবে প্রায় ৩ হাজার ৭৩ টন।
ফারেবা নাজ শাওলী
উপপ্রধান, টেকসই অর্থায়ন, প্রাইম ব্যাংক