অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ লড়াইয়ের পরও ম্যাচ হেরে যাওয়ায় বেশ হতাশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে নাকানিচুবানি খাওয়ালেও ম্যাচ তারা জিততে পারেননি। 

নিজেদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স হতাশাজনক হলেও আম্পায়ারের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা ক্ষুদ্ধ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড্যারেন স্যামি দ্বিতীয় দিনের ম্যাচের পর আম্পায়ারিং নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। কথা বলেন ম‌্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথের সঙ্গে। অধিনায়ক রোস্টন চেজ ম্যাচের পর আম্পায়ারদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা বলেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে রোস্টন চেজ বলেছেন, ‘‘ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিয়ে… এটা হতাশাজনক, কারণ খেলোয়াড় হিসেবে যখন আমরা ভুল করি, যখন আমরা সীমা ছাড়িয়ে যাই, তখন আমাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। কখনও কখনও নিষিদ্ধও করা হয়। আর্থিক জরিমানা বা অন্য কিছুও হতে পারে। কিন্তু ম্যাচ অফিসিয়ালদের? তাদের কখনও কিছুই হয় না। তাদের কেবল একটি ভুল সিদ্ধান্ত বা প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হয়েই রয়ে যায় এবং সবকিছু চলতে থাকে।”

আরো পড়ুন:

দুই মেরুতে শান্ত-আমিনুল, ভবিষ্যৎ কী?

টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল ক্ষোভ টিভি আম্পায়ার আড্রিয়ান হোল্ডস্টকের কয়েকটি সিদ্ধান্তে। এর মধ্যে প্রথম ইনিংসে চেজের আউটও ছিল। এলবিডব্লিউ দেন টিভি আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছিল তার ব্যাটে। আল্ট্রা এজেও ব্যাটের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু টিভি আম্পায়ার মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে বহাল রাখেন।

পরবর্তীতে অ্যালেক্স ক্যারির একটি ক্যাচ নিয়েও সন্তুষ্ট ছিল না স্বাগতিকরা। শেই হোপের ক্যাচ দারুণভাবে লুফে নিয়েছিলেন ক্যারি। কিন্তু বল মাটিতে স্পর্শ করেছিল কি না তা নিয়ে ছিল সংশয়। এছাড়া ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া ট্রেভিস হেড যিনি দুই ইনিংসে ফিফটি পেয়েছেন তার আউটের সিদ্ধান্তও পক্ষে যায়নি ক্যারিবীয়ানদের। কিপার হোপের গ্লাভসে বল ঠিকঠাক গেলেও আম্পায়ারের মনে হয়েছে বল মাটিতে স্পর্শ করেছে।

টিভি আম্পায়ার হোল্ডস্টকের কড়া সমালোচনা করে চেইজ আরো বলেছেন, ‘‘ছেলেদের ক্যারিয়ারের কথা বললে, একটি খারাপ সিদ্ধান্ত একজনের ক্যারিয়ার গড়তে বা ভেঙে দিতে পারে। তাই আমি মনে করি, সবার ক্ষেত্রে ক্ষেত্র সমান হওয়া উচিত। কারও বিপক্ষে খারাপ সিদ্ধান্ত গেলে, কিছু শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।”

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম প য় র

এছাড়াও পড়ুন:

রূপবদলের গল্প

ছোটপর্দায় শুদ্ধ অভিনয়ের জন্য তাসনিয়া ফারিণ অনেক আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কখনও গল্পের আবেগঘন কেন্দ্রবিন্দু, কখনও বা কাঁধে চেপে থাকা সম্পর্কের ভার–সবই তিনি বহন করেছেন সুনিপুণ দক্ষতায়। সিনেমার পর্দা তো ভিন্ন মেজাজের। আবার যদি হয় বাণিজ্যিক সিনেমা? সেটি যেন এক অন্য মহাকাব্য; যেখানে আবেগের পাশাপাশি লাগে অ্যাকশন, গ্ল্যামার আর সঠিক ‘স্ক্রিন প্রেজেন্স’। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইনসাফ’ যেন সেই পরীক্ষাতেই ফারিণের সাহসী অংশগ্রহণ। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন অনিন্দ্য মামুন

মুনীর চৌধুরীর বিখ্যাত উক্তি ‘মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে-অকারণে বদলায়’। মানুষের এই বদলে যাওয়াটা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হয়। কখনও তা নান্দনিক, কখনও তা জরাজীর্ণ। তবে মানুষ সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে থাকে। সেটি নানাভাবে নানামাত্রায়। এই বদলে যাওয়া কখনও প্রশংসিত, কখনও বা তিরস্কৃত। 

নাটক ও ওটিটি কনটেন্টের অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণও বদলে গেলেন। তাঁর এই বদলে যাওয়া প্রশংসিত হলেও ঢের অবাক হয়েছেন দর্শকরা। যে ফারিণকে এতকাল যারা দেখেছেন কলেজ-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া প্রেমিকার চরিত্রে, পাশের বাসার মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে কিংবা ঝগড়াটে প্রেমিকা হিসেবে। সেই ফারিণ সিনেমায় এসে হয়ে উঠলেন অ্যাকশন গার্ল! শাড়ি পরে ভারতের দক্ষিণী নায়িকাদের মতো তুমুল মারপিট করলেন। পুলিশের পোশাকে তাঁর ক্যারিশমা দেখলেন সবাই। শুধুই কী তাই, ফারিণ আইটেম গানেও নাচলেন। নাচালেন দর্শকদেরও। কীভাবে ফারিণ এতটা বদলালেন? প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ, কয়েক বছর আগেও নাটকের অভিনেত্রীরা সিনেমায় এসে এমন চরিত্র করবেন তা যেন কল্পনারও বাইরে ছিল। যারাও এসেছেন তারাও আর্টফিল্ম টাইপের সিনেমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন। নাচগান আর অ্যাকশনে ভরপুর সিনেমায় তাদের ভাবাও যায়নি। অথচ ফারিণ সেটি করে দেখালেন। কোমল ফারিণ হয়ে উঠলেন মারকাটারি জাহান খান। জাহান থেকে ফারিণ ইনসাফ ফারিণের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক সিনেমা। নাটক-ওটিটি কিংবা ভিন্ন ধারার গল্পের সিনেমার পর ‘ইনসাফ’-এ ফারিণ নিজেকে যে রূপে উপস্থাপন করেছেন, তা সাহসী, শারীরিক ও মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং–একজন ‘অ্যাকশন হিরোইন’। এই রূপান্তরের পেছনে লুকিয়ে আছে তাঁর পরিশ্রম, প্রস্তুতি এবং আত্মনিবেদন। ফারিণের মতে, পুরো প্রজেক্টে তাঁর আত্মবিশ্বাস এসেছিল মূলত স্ক্রিপ্ট পড়ে, নির্মাতা ও সহ-অভিনেতাদের প্রতি বিশ্বাস থেকে। জাহান চরিত্রটি শুধু মানসিক গভীরতা নয়, চাইছিল শারীরিক প্রস্তুতিও। এখানেই ফারিণের রূপান্তর সবচেয়ে দৃশ্যমান। ট্রেনিং, স্টান্ট রিহার্সাল, দিনের পর দিন কঠিন শুটিং–সব কিছু মিলিয়ে ফারিণ যেন নিজেকেই নতুন করে চিনেছেন। যারা ছবিটি দেখেছেন, তারা জানেন–এই অভিনেত্রী শুধু সংলাপে নয়, শরীরী অভিব্যক্তি, লড়াইয়ের দৃশ্য–এমনকি গানেও দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য দেখিয়েছেন। বিশেষ করে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গানে তাঁর পারফরম্যান্স, যা এখন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত। ফারিণ বলেন, ‘চরিত্রটা যখন পড়ি, মনে হচ্ছিল, ভিন্ন কিছু হবে। আমি এতদিন যে চরিত্রগুলো করে এসেছি, সিনেমায় যেন এমন চরিত্র না হয় সেটিরই অপেক্ষায় ছিলাম। পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার দাদা গল্প বলার পর যেন সে চরিত্রই খুঁজে পেলাম। বুঝেছিলাম চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তোলা চ্যালেঞ্জের, পরিশ্রমের। আমি সে চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছি। নিয়েছিও। জাহান খান হয়ে উঠতে আমাকে দফায় দফায় টিমের সঙ্গে বসতে হয়েছে। ফাইট শিখতে হয়েছে, নাচও শিখতে হয়েছে মাসখানেক। এই পুরো প্রক্রিয়াটি অনেক পরিশ্রমের ছিল। পরিচালকের মনে হয়েছে আমি জাহান খান হয়ে উঠতে প্রস্তুত। এরপরই ক্যামেরা ওপেন করা হয়েছে।’

প্রস্তুতি নিয়ে শুটিংয়ে যাওয়ার পরও বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে ফারিণকে। পেতে হয়েছে আঘাতের পর আঘাত। সেই অভিজ্ঞতার গল্প শুনুন ফারিণের মুখেই, ‘শুটিংয়ে আমি যখন অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে যাই, তখন ফিজিক্যাল ও মেন্টাল ট্রেনিং নিয়েছি। ফাইট ডিরেক্টরদের কাছ থেকে ধারণা নিয়ে এরপর প্রতিটি শট দিয়েছি। ক্যামেরার সামনে অ্যাকশন পারফর্ম করা একেবারেই আলাদা অভিজ্ঞতা। সত্যি বলতে, এই দৃশ্যগুলো করতে গিয়ে আমি একাধিকবার আঘাত পেয়েছি। আমি সিনেমায় কাজ করে একটি বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম।’

পরিচালক যেভাবে ফারিণকে দেখলেন

জাহান চরিত্রটির জন্য নাটকের অনেক অভিনেত্রীই মাথায় ছিল পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দারের। এরমধ্যে ফারিণ অন্যতম। তবে ফারিণ চরিত্রটি হয়ে উঠতে পারবেন, কী পারবেন না এ বিষয়ে সংশয় ছিল ইনসাফ টিমের অনেকের। পরিচালকের থেকে গল্প শোনার পরেই অভিনেত্রী বিনাবাক্যে বলে দিয়েছিলেন তিনি চরিত্রটি করবেন। সে সময় ফারিণের কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা; যেটি পরিচালককে আত্মবিশ্বাসী করেছিল বহুগুণ। সঞ্জয় সমাদ্দারের ভাষ্যে, ‘ফারিণ চরিত্রটি পারবে সেটিতে বিশ্বাস ছিল। এতটা ভালো করবে সেটি ভাবিনি। ইনসাফের শুটিং শুরুর আগে ফারিণ প্রায় মাসখানেক সময় নিয়ে নিজেকে তৈরি করেছে। নিয়মিত মারাপিটের রিহার্সাল, নাচের প্র্যাক্টিস সব নিজ উদ্যোগেই করেছে সে। এমনকি অ্যাকশন দৃশ্যে বারবার চোটও পেয়েছে। তবুও সে দমে যায়নি। ফারিণ তার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমার মনে হয়ে পেরেছেও। ফলাফল সিনেমা মুক্তির পর যখন আমরা সিনেমা হল ভিজিটে গিয়েছি সবাই একবাক্যে ফারিণের প্রশংসা করেছেন। সবাই বলেছেন, এতদিন বাংলা সিনেমায় নায়িকাদের যেভাবে দেখেছেন ফারিণ একেবারে ভিন্নভাবে হাজির হয়েছেন। বিশেষ করে নারী দর্শকরা দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন ফারিণকে।’ 

ফারিণ কি নিয়মিত থাকবেন

নাটকের অভিনেত্রীরা সিনেমায় এলেও এখানে খুব কমসংখ্যকই নিয়মিত হন। হুট করে দেখা যায় ফের নাটক আর ওটিটিতেই নিয়মিত হয়ে পড়ছেন। ফারিণের বেলাতেও কি এমনটি ঘটবে? নাকি বাণিজ্যিক সিনেমার নায়িকা হিসেবে জয়া আহসান ও মিমদের উত্তরসূরি হবেন তিনি। উত্তর ফারিণ নিজেই দিয়েছেন। যদিও সে উত্তরে খোলাসা করে বলেননি কিছুই। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘‘একটা সময় আমি নাটকে নিয়মিত কাজ করতাম। সেখান থেকে কিছুটা বিরতি নিয়ে ওটিটিতে গিয়েছি। তখন অনেকে বলেছেন, নাটকেই তো ভালো ছিলাম। ওটিটিতে যাওয়ার কী দরকার ছিল। ওটিটিতে সাফল্য পাওয়ার পর আবার সিনেমায় পথচলা শুরু করলাম। তখনও অনেকেই একই কথা বলেছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে, একটি জায়গায় আমি খুব বেশি দিন ভালো থাকি না। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে খুব ভালো লাগে। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই ‘ইনসাফ’ সিনেমাটি করেছি। বাণিজ্যিক সিনেমায় যেহেতু কাজ শুরু করেছি, থামার জন্য করিনি। অবশ্যই আমাকে নিয়মিত থাকতে হবে। তবে ব্যতিক্রমী চরিত্র তো লাগবে।’’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যত্নে থাকুক মন...
  • আ.লীগ আর কখনও সুস্থ ন্যারেটিভ নিয়ে ফিরতে পারবে না: মান্না
  • জয়া আহসান কবে বিয়ে করবেন?
  • নাটকে ভালোবাসার গল্পের প্রাধান্য
  • আমাদের অনেক আগেই বিচ্ছেদ হওয়ার কথা ছিল: কাজল
  • সাদামাটা ফারিণ যেভাবে জাহান হয়ে উঠলেন
  • রূপবদলের গল্প
  • গাছ-বই নিয়ে অবিরাম ছোটেন মাহমুদুল
  • না বুঝে ডাউনলোড অনুমতি ঝুঁকিপূর্ণ