আমরা যখন কোনো দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপের মতো মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় পড়ি, তখন বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তা শেয়ার করি। এতে কখনও সমাধান হয়, কখনও হয় না। অন্তত হালকা লাগে। আবার কখনও এমন সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হই, যা পরিবার বা বন্ধুবান্ধবকেও বলা যায় না। সে ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপির সহযোগিতা নেওয়া উচিত।
সাইকোথেরাপি হলো এক ধরনের মানসিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে মানসিক সমস্যা বা রোগের সমাধানে কথা বলার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। এটি ওষুধবিহীন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে একজন প্রশিক্ষিত থেরাপিস্ট রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাঁর সমস্যা চিহ্নিত করেন এবং মনোবৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে তার সমাধান দেন। যারা পেশাগতভাবে এ চিকিৎসাসেবা দেন, তাদের সাইকোথেরাপিস্ট বা কাউন্সেলর বলে। সেবা গ্রহণকারীকে বলে ক্লায়েন্ট– রোগী নয়। যারা কাউন্সেলিং করেন, তারাই সাইকোথেরাপি দেন। তবে কিছু পার্থক্য তো রয়েছেই। কাউন্সেলিং স্বল্পমেয়াদি একটি সেবা। কাউন্সেলিং মূলত ক্লায়েন্টের বর্তমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। যেমন– দাম্পত্য জীবনে অশান্তি। এ ক্ষেত্রে কাউন্সেলর মাত্র কয়েকটি সেশনে ক্লায়েন্টের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধান বাতলে দেন। আর সাইকোথেরাপি দীর্ঘ সময় নিয়ে চলা একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এতে সমস্যার একদম গভীরে গিয়ে শিকড়কে উপড়ে ফেলা হয়। এতে ব্যক্তির অতীত ও অতীতের সমস্যাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়, যেন এর প্রভাবে বর্তমান জীবন সুন্দর হয়। যখন কারও ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে মানসিক সমস্যার প্রভাব তীব্রভাবে লক্ষ্য করা যায়, তখন একজন সাইকোলজিস্টের সহযোগিতা নেওয়া উচিত। এর মধ্যে একাগ্রতা ধরে রাখতে না পারা, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা, আবেগিক সমস্যা, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, সন্দেহবাতিকতা, দাম্পত্য ও পারিবারিক সম্পর্কে সমস্যা, আত্মহত্যাপ্রবণতা, মাদকাসক্তি অন্যতম। সাইকোথেরাপি একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি, যা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গল প ক উন স ল ক সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
যানজটে রেললাইনে আটকা পড়া অটোকে ট্রেনের ধাক্কা, মা ও ছেলে নিহত
ফেনীতে যানজটে রেললাইনে আটকা পড়া সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় ট্রেন। এতে হাফিজুল ইসলাম (৪২) ও তার মা ফাতেমাতুজ জোহরা (৬২) নিহত হয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অটোরিকশাচালক।
নিহত হাফিজুল ইসলাম ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঠানগড় গ্রামের মিয়াজী বাড়ির বাসিন্দা মৃত হারেস আহম্মেদ সন্তু মিয়ার ছেলে। তিনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেট অতিক্রম করার সময় সড়কে আটকে পড়া একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় যানজটে রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল অটোরিকশা। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে থাকা তিনজনই গুরুতর আহত হন।
আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাফিজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথে তিনি মারা যান। আহত অটোচালককে আটক করা হয়েছে।
রেলের গেইটম্যান বাবু বলেন, ‘আমি ৭টা ২০ মিনিটে গেট বন্ধ করি। কিন্তু উল্টো পথে অনেক গাড়ি আসায় যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় একটি অটোরিকশা রেললাইনের ওপর আটকে যায়। বারবার সরাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। ট্রেনটিকে লাল সিগনাল দিয়ে থামাতে চাইলেও দূরত্ব কম থাকায় তা সম্ভব হয়নি।’
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের একজন হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান। অপরজনের মাথা ও পায়ে মারাত্মক জখম রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’
ফেনী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, গোডাউন কোয়ার্টার রেলগেটে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও দু’জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর শুনেছি। তাদের খোঁজখবর নিতে অফিসার হাসপাতালে গেছেন।
ফেনী মডেল থানার ওসি শামসুজ্জামান বলেন, ট্রেন-অটোরিকশার সংঘর্ষে একজন নিহত, দুইজন আহত আছেন। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। পুলিশ সেখানে গেছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।