লক্ষ্মীপুরে দলীয় পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
Published: 29th, June 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি এবং হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মেহেদী হাসান তুষার নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা তাকে জামায়াতের কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তুষার তাদের কোনো পর্যায়ের সদস্য নন।
অভিযুক্ত তুষার পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাহার ভেন্ডারের ছেলে। ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
কৃষক লীগ কর্মী শরিফুল ইসলামের অভিযোগ, তুষার নিজেকে জামায়াত কর্মী পরিচয় দিয়ে তাকে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করেন। পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ও মামলার হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা আদায় করেন তুষার। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার সমঝোতার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বর্তমানে তুষার তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
Notice: Undefined variable: rsContent in /var/www/risingbd.
com/details.php on line 707
Notice: Trying to access array offset on value of type null in /var/www/risingbd.com/details.php on line 707
ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: রেজাউল করীম
জুলাই অভ্যুত্থান: জামায়াতের ৩৯ দিনের কর্মসূচি
এদিকে, তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তুলেছেন সাবেক স্কুল শিক্ষক আবুল হোসেন। তার অভিযোগ, “বাহার ভেন্ডারের ছেলে তুষার কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে বাগবাড়ি এলাকা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যান। রসুলগঞ্জ থেকে আরো ভেতরের নদীর পাড়ে আমাকে চার ঘণ্টা আটক রেখে ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা আদায় করেন তুষার। কথা ছিল, আমাকে ছেড়ে দেবেন। তবে, ছেড়ে না দিয়ে লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যানিকেতনের সামনে এনে পুলিশ ডেকে তাদের কাছে তিনি আমাকে তুলে দেন।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় আমার স্ত্রী হাসিনা আক্তার বাদী হয়ে তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। আমাকে হয়রানি ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তুষারের বিচার চাই।”
সম্প্রতি ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলার খসড়া এজাহার বিভিন্ন ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন লক্ষ্মীপুর শহরের বহু মানুষ। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এ তালিকা বানিয়ে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে, যার মূলহোতা তুষার বলে মনে করছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, তুষার প্রভাব বিস্তার করে নিরীহ লোকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করেন।
জামায়াত সম্পৃক্ততা জানতে চাইলে মেহেদী হাসান তুষার বলেন, “আমি জামায়াত নেতা বা কর্মী সেটা সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাবে।”
মামলার খসড়া এজাহার সম্পর্কে তিনি বলেন, “এজাহারের বিষয়ে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অন্য যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তাও মিথ্যা। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমির এস ইউ রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, “তুষারের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ শুনেছি, তবে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি। তিনি জামায়াতের কেউ না। তিনি জামায়াতের কর্মীও না, কোনো দায় দায়িত্বেও নেই। তিনি যদি জামায়াতের নাম ব্যবহার করে কোনো অপকর্ম করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
লক্ষ্মীপুর মডেল থানার ওসি মো: আব্দুল মোন্নাফ বলেন, “যে এজাহারটি ঘুরপাক খাচ্ছে সেটি ভুয়া। চাঁদা দাবির বিষয়ে আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থ নেব।”
তিনি বলেন, “সাবেক এক শিক্ষকের দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলায় তুষারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে আছেন।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ লক ষ ম প র
এছাড়াও পড়ুন:
বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ ও তাদের দোসররা
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি বলেছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘বিচারকাজে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। প্রশ্নের জবাব ও সূচনা বক্তব্য দেন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল। এ সময় ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদল, ফোরামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, গ্রেপ্তারের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হট্টগোল সৃষ্টি করে বিচারকার্যের পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।
সংবাদ সম্মেলন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ফ্যাসিস্ট রেজিমের যাঁরা তল্পীবাহক আছেন, তাঁরা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট রেজিমের প্রধান পলাতক শেখ হাসিনা। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনজীবীরা ও দেশের মানুষ মনে করছে, সেই বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত ও প্রতিহত করার একটা ট্রায়াল (মহড়া) ছিল গত ১১ আগস্ট। অর্থাৎ শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর যিনি গণতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন, খায়রুল হকের জামিন চাওয়ার নামে আইনজীবীরা যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেকেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের দোসর। তাঁরা সেদিন আদালতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রমাণ করার অপপ্রায়স চালিয়েছিলেন যে আদালত সঠিকভাবে কাজ করছেন না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘খায়রুল হকের কীর্তি বা কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ জানে। তিনি আজকে আইনের আওতায় এসেছেন।…তাঁর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি। বিচার চাই যেন ভবিষ্যতে আর নতুন কোনো খায়রুল হক এই জুডিশিয়ারি থেকে সৃষ্টি না হয়। আর জামিনের বিষয়ে অবশ্যই সবাই চাইতে পারে। কিন্তু জামিন চাওয়ার আবেদন সামনে নিয়ে আদালতের পরিবেশ নষ্ট করা, আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা—তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।’
লিখিত বক্তব্যে আদালতের ভেতরে বিশৃঙ্খলাকারী আওয়ামী লীগের দোসর আইনজীবী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানিয়েছে ফোরাম। একই সঙ্গে আদালতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করে সংগঠনটি।
উন্মুক্ত আদালতে বিচারপতিদের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি আদালতের প্রতি অবহেলা এবং সহকর্মী আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলা পেশাগত অসদাচরণের শামিল উল্লেখ করে আইনজীবীদের এই অপেশাদার আচরণের বিরুদ্ধে ‘পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচার বিধিমালা’ অনুসারে ‘ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন’ গ্রহণ করে সনদ বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রতিও দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এই সংগঠনটি।