রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান বিএনপির
Published: 30th, June 2025 GMT
সম্প্রতি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল চীন সফর করেছে। এ সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চীনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, পাঁচ দিনের সফরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং চীন সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। তাদের মধ্যে ছিলেন- চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য ও ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংসং, কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও এবং আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার সান হাইয়ান।
আরো পড়ুন:
আন্তর্জাতিক সহায়তা কমছে, সংকটে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির
নোয়াখালীতে এনআইডি করতে এসে রোহিঙ্গা আটক
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী সম্প্রতি উদযাপন করা হয়েছে। এটা সেই ঐতিহাসিক সম্পর্ক, যা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চীন সফরের মধ্যে দিয়ে সূচিত হয়েছিল এবং যা পরবর্তী সময়ে খালেদা জিয়ার সফরের মাধ্যমে আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকে চীনা নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক উন্নয়নে এই দুই ব্যক্তিত্বের অবদান সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ওই বৈঠকে পলিট ব্যুরোর সদস্য লি হংসং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীতে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মেডিকেল ও স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চ শিক্ষা, যোগাযোগ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, এসএমই বিজনেস, ব্লু ইকোনমির উন্নততর প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে চীনের অধিকতর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। চীনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সুং ওয়ে ডংয়ের সঙ্গে সফরের দ্বিতীয় দিনে আমরা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশের অবকাঠামো, পরিবেশ ও প্রযুক্তি উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছি। বাংলাদেশে শ্রমশক্তির সক্ষমতা, উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ ও বিনিয়োগের নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা ইতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করেছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, গত ১৭ বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সহনীয় করতে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতার বিষয়েও চীনের সহায়তা চেয়েছে বিএনপি। এটা তারা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদী রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব করা হয়েছে। তা আমরা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তারা (চীন) বলেছেন যে, অত্যন্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিকতার সঙ্গে বিষয়টির (রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে) ওপর কাজ করা হচ্ছে। মিয়ানমার সরকারকে তারা রাজি করানোর চেষ্টা করছেন, যেন দ্রুত প্রত্যাবাসন করানো যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চীন সফরের প্রতিনিধিদলের সদস্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার।
ঢাকা/রায়হান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ফখর ল ইসল ম র আহ ব ন র সদস য চ ন সফর ব এনপ র সফর র
এছাড়াও পড়ুন:
পানির ন্যায্য হিস্যা ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে জোর দেবে বিএনপি
জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতের ‘দাদাগিরি’ বন্ধ করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া, পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে 'পদ্মা বাঁচাও’ গণসমাবেশে যোগদানের আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীর উপর নির্মিত রাবার ড্যাম পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন পেছালে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে: মির্জা ফখরুল
জামায়াত দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে: ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “পানির হিস্যা, সীমান্ত হত্যা বন্ধে আমরা বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই, আমাদের ওপর দাদাগিরি বন্ধ করতে।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তাদের তো আরো বেশি করে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা দরকার।”
“মোদি সরকারের আমলে দেখেছি উল্টা তারা বাংলাদেশেকে চাপে ফেলেছেন, সব নিয়ে গেছেন, কিন্তু বিনিময়ে আমাদের কিছু দেয়নি” বলেন মির্জা ফখরুল।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ ভারতের কাছ থেকে কিছুই নিতে পারেনি।”
তিনি বলেন— “দুদেশের মধ্যে সমমর্যাদা রাখতে হবে, এদেশের স্বার্থটাকে সবার আগে দেখতে হবে।”
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ—১ আসনে বিএনপি ঘোষিত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাবেক এমপি অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদসহ আরো অনেকে।
ঢাকা/সিয়াম/ইভা