ইশারা ভাষার সহায়তায় সেই বাকপ্রতিবন্ধী শিশুর জবানবন্দি
Published: 30th, June 2025 GMT
এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আট বছরের বাকপ্রতিবন্ধী পথশিশুর ধর্ষণকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে আদালতের নির্দেশে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটার সোমবার শিশুটির জবানবন্দি নিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে তা গোপন রাখা হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা।
মামলার বাদী ধর্ষণের শিকার শিশুর চাচা জানান, তার ভাতিজি ইশারায় বারবার দিপুকে (১৮) দেখিয়েছে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে দিপুর ছবি দেখে সে চিৎকার করে উঠছে। দিপু পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিপেনের ছেলে। যোগাযোগ করা হলে দিপু বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তার বাবা বলেন, ঘটনার দিন রাতে দিপু বাড়িতে ঘুমাচ্ছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা বলেন, যে বা যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। শিশুটির পরিবার দিপু নামে এক ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তাকে সন্দেহের চোখে রেখে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। মেডিকেল রিপোর্ট পেলে নিশ্চিতভাবে তদন্ত করতে পারব।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তারা এ ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তাহেরপুর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুর ওপর এমন নৃশংসতা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর বিচার চাই। অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা তথ্য দিতে পারেনি। ভিডিও ফুটেজ খোঁজার চেষ্টা করেছি। প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করা হয়। তারাও কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার রাত ১১টার দিকে বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজগেট এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ভর্তি রয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা শেষে তাকে নগরীর শাহ মখদুমের এই সেন্টারে রাখা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।
মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।
সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।
আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ