জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা হাসানুল ইসলাম রাজা বলেছেন, ‍“জনাব তারেক রহমান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৩ আসন থেকে যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তার জন্যই কাজ করবো। কারণ আমরা তার নেতৃত্বের প্রতি অনুগত।” 

তিনি বলেন, “আমি ২০১৪ সালে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম, ২০১৮ সালে নির্বাচন করার কথা ছিল পারি নাই। ২০২৪ সালেও নির্বাচন করি নাই। এবার তারেক রহমান যদি মনোনয়ন দেন তাহলে ইলেকশন করব। যদি না দেন, করব না। যেদিন দেবেন সেদিনের অপেক্ষায় থাকব। কেন জানেন, সম্মান আসে মহান আল্লাহপাকের তরফ থেকে।”

সোমবার (৩০ জুন) রাতে পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন বি এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জামালপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের ‘পকেট কমিটি’ গঠনের অভিযোগ

অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মিটিংয়ের পর স্থিতিশীলতা এসেছে: শরিফ

হাসানুল ইসলাম রাজা বলেন, “২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিএনপি করতে গিয়ে অনেক সম্পদ হারিয়েছি স্বৈরাচারী সরকারের কাছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে সরকার রাতের অন্ধকারে আমার ঢাকার রায়ের বাজারে এক দাগে ২৬ কাঠা জমিসহ বাড়ি দখল করে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করে। সবমিলিয়ে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় আমার ১২৬ কাঠা জমি বাড়িসহ দখল করে নিয়েছিল পতিত সরকার। যার বর্তমান বাজার মূল্য অনেক। সেদিন পাবনা জেলা বিএনপি কিংবা পাবনা-৩ আসনের কোনো বিএনপি নেতা আমার পাশে দাঁড়াননি।”

তিনি বলেন, “রায়েবাজারে আমার বাড়িটি দখল করিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। মিরপুরে সাড়ে চার কাঠার উপরে দোতলা বাড়ি দখল করেছিলেন প্রয়াত গাবতলীর সংসদ সদস্য আসলামুল হক। আমার অপরাধ ছিল আমি বিএনপি নেতা, বিএনপির দুঃসময়ে রাজনীতি করতে গিয়ে কোটি কোটি টাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের পেছনে বিলিয়ে দেওয়া। তারপরও পাবনা জেলা বিএনপি বা চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরের বিএনপি নেতারা আমাকে কখনো ক্রেডিট দেন নাই। সবকিছুর পরেও গুম খুন থেকে বেঁচে আছি এটা আল্লাহর রহমত।”

সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, “আমি বাটপারি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দুর্নীতির রাজনীতি করিনা; কারণ আমি শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক। আমি কোনো বিএনপির কর্মীর ক্ষতি করি নাই। আমি বিএনপি করি সম্মান ভালবাসার জন্য। আমি পাবনা-৩ আসনের সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি। আমি পকেট ভরার রাজনীতি করি না। আমি বিএনপির জন্য দুই হাত উন্মুক্ত করে দিয়েছি ২০০৮ সাল থেকে। অথচ এই আসনে অনেক বিএনপি নেতা আছেন যাদের কিছুই ছিল না আজ তারা কোটি টাকার মালিক। চিটারি-বাটপারি না করলে যাদের সংসার চলে না।”

হাসানুল ইসলাম রাজা আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেলে ও নির্বাচিত হলে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন বলে জানান। তার প্রতিশ্রুতি মধ্যে রয়েছে- সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও দখলবাজ মুক্ত সমাজ গঠন, এলাকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, বিল বা ফসলের মাঠে সাবমারসিবল রাস্তা নির্মাণ, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারদের কর্সংসংস্থানের ব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা ও আইসিটি পার্ক নির্মাণ।

৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কিতাব উদ্দিন মেম্বারের সভাপতিত্বে ও চাটমোহর পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক জহুরুল ইসলাম মাস্টারের পরিচালনায় উঠান বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- চাটমোহর পৌর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মোল্লা, প্রবীণ বিএনপি নেতা ফয়েজ ই-ইলাহী বুলু, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস আলী ইনু, ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম মাস্টার, যুবদল নেতা আল আমিন তালুকদার, মথুরাপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি রেজাউল করিম বাবু, বিএনপি নেতা আলহাজ্ব আব্দুল সাত্তার মাস্টার।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র স ল ইসল ম র জন য র জন ত ন নয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ