মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২
Published: 1st, July 2025 GMT
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে শাপলা বেগম (১৪) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দত্তেরবাজার কুঠুরিঘাট-সংলগ্ন নদে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সাত বছর বয়সী আরও দুজন শিক্ষার্থী নিখোঁজ আছে। মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ দুজনের সন্ধান এখনো মেলেনি। তাঁদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
মারা যাওয়া শাপলা গফরগাঁও উপজেলার বিরই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে পাশের কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মাঈন উদ্দিনের মেয়ে। নিখোঁজ দুজন হলো একই গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের হোসেন (৭) ও হাবিব মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন (৭)। তারাও ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে একটি ছোট নৌকায় করে পাকুন্দিয়ার চরআলগী থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে গফরগাঁওয়ের বিরই এলাকায় মাদ্রাসায় যাচ্ছিল ওই শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নৌকাটি দত্তের বাজার কুঠুরিঘাট-সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে স্রোতের কারণে হঠাৎ উল্টে যায়। এতে নৌকার অন্য যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠলেও তিনজন নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় জেলেরা শাপলার মরদেহ উদ্ধার করেন।
নৌকাডুবির খবর শুনে স্থানীয় লোকজন ব্রহ্মপুত্র পাড়ে ভিড় করেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য নজরুল বলেন, পাকুন্দিয়া চর আলগী ও গফরগাঁওয়ে বিরই এলাকাটি ব্রহ্মপুত্র নদের এপার-ওপার। পাঁচ শিক্ষার্থী নিয়ে নৌকাটি এপারে আসার সময় নদে স্রোতের কারণে উল্টে যায়। এ সময় মাঝিসহ দুজন শিক্ষার্থী সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও তিনজন নিখোঁজ হয়। পরে একজনের লাশ পাওয়া গেছে।
নৌকাডুবির পর স্থানীয় জেলেরা নৌকা নিয়ে জাল ফেলে শিশুদের উদ্ধারে অংশ নেন। অন্যদিকে খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল বেলা ১১টা থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। বেলা দেড়টার দিকে ডুবুরি দলের নেতা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আসার আগে স্থানীয় লোকজন একজনের মরদেহ উদ্ধার করেন। দুজন শিশুর সন্ধানে আমার কাজ করছি; কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। নদে অনেক স্রোত আছে।’
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, পাশের পাকুন্দিয়া উপজেলার ওই শিক্ষার্থীরা ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে এপারে একটি মাদ্রাসায় পড়ে। আজ নৌকাডুবিতে একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকি দুজনের সন্ধানে কাজ চলছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাপলার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ দুই শিশুকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয় (১৯) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির এক নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে কোনাবাড়ীর সেলিমনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
নতুন করে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৩০)। তিনি রাজশাহীর বাগমারা এলাকার হাটমাদনগর গ্রামের বাসিন্দা ও গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানাটির নিরাপত্তাকর্মী।
আরও পড়ুনগাজীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা৩০ জুন ২০২৫বিষয়টি নিশ্চিত করে কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন বলেন, গোপন সংবাদে খবর পেয়ে সোমবার মধ্য রাতে ওই এলাকার একটি বাসা থেকে শফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাঁর জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এ ঘটনায় হৃদয়ের বড় ভাই লিটন মিয়া বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় গত শনিবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। তবে এতে জড়িত কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ওই মামলায় রোববার হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ওই কারখানার শ্রমিক।
কোনাবাড়ীর গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানায় শনিবার ভোরের দিকে হৃদয়কে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও রোববার রাতে ছড়িয়ে পড়লে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। হৃদয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতার বাইদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি কারখানাটিতে মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় কাজ শেষে বাসায় না ফেরায় শনিবার বিকেলে তাঁর ভাই লিটন ও মা কারখানার দিকে যান। সেখানে গিয়ে কারখানায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ দেখে জানতে পারেন, চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। পরে তাঁরা লাশের সন্ধান চাইলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে আছে বলে জানানো হয়। সেখানে গিয়ে তাঁরা মরদেহটি শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।
আরও পড়ুনলক্ষ্মীপুরে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, ২ জন আটক৩১ মার্চ ২০২৫