বরগুনায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের পাতাকাটা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

মারা যাওয়া দুই শিশু হলো, পাতাকাটা গ্রামে সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে জুনায়েদ (৫) এবং রাসেল হোসেনের ছেলে ইয়াসিন (৮)। তাদের পরিবার প্রতিবেশী।

জুনায়েদের বাবা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘‘দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরের পাড়ে খেলছিল জুনায়েদ এবং ইয়াসিন। এ সময় আমার ছেলে জুনায়েদ পানিতে পড়ে গেলে ইয়াসিন তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও পানিতে পড়ে ডুবে যায়। দীর্ঘ সময় শিশুদের খোঁজ না পেয়ে খুঁজতে গিয়ে দেখেন পুকুরে দুইজন ভাসছে। তাদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা।’’ 

আরো পড়ুন:

৪ কোটি শিশুকে শরণার্থী বানিয়েছে যুদ্ধ আর সংঘাত

শিশু শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে নির্যাতন: সেই শিক্ষক কারাগারে

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ‘‘হাসপাতালে নিয়ে আসার অনেক আগেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়।’’  

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনে মারা গেল। স্বজনদের অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/ইমরান/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের অবৈধ শেয়ার ইস্যু, তদন্ত করবে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের অবৈধ শেয়ার ইস্যু করার বিষয়ে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে শর্তসাপেক্ষে এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্তের বিষয়ে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক রেজাউন নূর মেহেদী।

আরো পড়ুন:

ইতিবাচক লেখনিতে ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার: ডিবিএ সভাপতি

পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ২৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) বেশিরভাগ শেয়ারহোল্ডারের মতামতকে মূল্যায়ন না করে অবৈধভাবে কোম্পানির পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে নতুন ৪ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার ১০ টাকা ফেস ভ্যালুতে ইস্যু করার এজেন্ডা পাস করা হয়। বিএসইসির তদন্ত কমিটি এ অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখবে। কী উদ্দেশ্যে কোম্পানির পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে এত বড় অংকের শেয়ার ইস্যু করার এজেন্ডা পাস করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

কোম্পানির বোর্ড ড্যাফোডিল পরিবারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তার বিপরীতে শেয়ারে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা করে ৪.৬৭ কোটি শেয়ার ইস্যু করার অনুমোদন দেয় ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের পরিচালনা পর্ষদ, যা বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে করার কথা ছিল। তবে, এর আগে কোম্পানিকে এ বিষয়ে এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, কোম্পানি তা করেনি। ফলে, অবৈধভাবে শেয়ার ইস্যু করার হয়েছে বলে মনে করছেন শেয়ারহোল্ডাররা।

বিএসইসির তদন্তের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এ মর্মে অভিমত দিয়েছে যে, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স ২৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বেশিরভাগ শেয়ারহোল্ডারের মতামতকে মূল্যায়ন না করে অবৈধভাবে কোম্পানির পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে নতুন ৪ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার ১০ টাকা ফেসভ্যালুতে ইস্যু করার এজেন্ডা পাস করেছে। তাই, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি।

এমতাবস্থায় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দুজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে অনুসন্ধান পরিচালনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ৬০ কার্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের পরিচালনা পর্ষদ। সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০১ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৫৪ টাকা। গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.২৪ টাকা।

শেয়ার ধারণ পরিস্থিতি
ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০০৬ সালে। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। এ কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ৪৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৪ কোটি ৯৯ লাখ ১২ হাজার ২৬২টি। ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে ৪১.৪০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৪.১১ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.১০ টাকা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৪.৩৯ শতাংশ শেয়ার আছে। এ কোম্পানির স্বল্প মেয়াদি ঋণ আছে ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৮২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। গত সোমবার (৩০ জুন) কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৫৪ টাকায়।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স ড্যাফোডিল পরিবারের একটি প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটি আইটি সলিউশন, কম্পিউটার অ্যাসেম্বলিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের ব্যবসা করে।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের অবৈধ শেয়ার ইস্যু, তদন্ত করবে বিএসইসি