২০২৪–২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২৮২ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। আগের অর্থবছরের একই মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। গত জুনে বেড়েছে প্রায় ২৮ কোটি ডলার বা ১১ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত অর্থবছর প্রথমবারের মতো প্রবাসী আয় ৩০ বিলয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে জুন শেষে গ্রস ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪–২৫ অর্থবছর বৈধ চ্যানেলে মোট ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩৩ কোটি ডলার দেশে এসেছে। আগের অর্থবছর এসেছিল ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। এর মানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬৪১ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে করোনার প্রকোপ শুরুর পর ২০২০–২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার দেশে এসেছিল। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে হুন্ডি চাহিদা কমেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবার এবং তার ঘনিষ্ঠ ১০ ব্যবসায়ী–রাজনৈতিকের অনিয়ম–দুর্নীতির বিষয়ে ১১টি যৌথ তদন্ত দল কাজ করছে। এরই মধ্যে ব্রিটেনে কিছু সম্পদ জব্দ হয়েছে। এসব কারণে চাপের মুখে রয়েছে পাচারকারীরা। যে কারণে প্রবাসী আয়ের বড় অংশই এখন বৈধ চ্যানেলে দেশে আসছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের এ রেমিট্যান্স একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার এসেছে, গত মার্চ মাসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৭ কোটি ডলার এসেছিল, গত মে মাসে। ঈদের কারণে গত মাসের প্রথম দিকে টানা ১০দিন বন্ধ থাকার পরও এভাবে রেমিট্যান্স বেড়েছে।

রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আবার বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সবশেষ ২০২৩ সালের মার্চের শুরুতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল। এরপর ওই মাসের ১৫ তারিখ সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার হয়। এছাড়া সব সময়ই এখনকার চেয়ে রিজার্ভ কম ছিল।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি চালুর পর থেকে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে যোগন দেওয়া ঋণসহ গ্রস রিজার্ভের হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর বিভিন্ন তহবিলে যোগন দেওয়া ঋণ বাদ দিয়ে আইএমএফের বিপিএম৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী হিসাব প্রকাশ করা হয়। বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ পতনের পর যা ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। অর্থপাচার ব্যাপক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তা তলানিতে নেমে যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এস ছ ল অন য য় দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল ১৭ লাখ ছাড়াল

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। আর ই-রিটার্নের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন ২১ লাখ ৬৫ হাজার ৩২১ জন করদাতা।

মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, এনবিআরের অটোমেশনের আওতায় অনলাইনে রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে করদাতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। করদাতারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রিটার্ন দাখিলে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। করদাতাদের চাহিদা ও মতামতের ভিত্তিতে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া ক্রমশ সহজীকরণ ও আরও করদাতা বান্ধবকরণের ফলে এই অর্থবছরে ১৭ লাখ ১২ হাজার ৪৯২ জন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ই-রিটার্ন দাখিল করেন পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৭ জন করদাতা।

করদাতাদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সারা বছর ধরে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল এবং অনলাইনে তাৎক্ষণিক আয়কর সনদ প্রদান অব্যাহত ছিল, যা চলমান থাকবে। সেই সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের পর করদাতাদের রিটার্নে কোন ভুলত্রুটি হলে আয়কর আইন-২০২৩ এর ১৮০(১) ধারা অনুযায়ী মূল রিটার্ন দাখিলের ১৮০ দিনের মধ্যে ১৮০(২) ধারা অনুযায়ী ঘরে বসেই সহজে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের সুযোগ অব্যাহত থাকবে।

এনবিআর বলছে, সব ধরনের আয়কর সেবা করদাতাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সংস্থাটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নতুন অর্থবছর জুড়েই অনলাইনে রিটার্ন দাখিল এবং অনলাইনে তাৎক্ষণিক আয়কর সনদ দেওয়া অব্যাহত থাকবে। করদাতারা নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন থেকেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।

এনবিআর গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতের কিছু করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেশের সব তফশিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।

এনবিআরের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত এক কোটি ১২ লাখের মত মানুষের কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ই-টিআইএন নিবন্ধন রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুনে প্রবাসী আয় ২৮২ কোটি ডলার, রিজার্ভ ছাড়াল ৩১ বিলিয়ন
  • অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল ১৭ লাখ ছাড়াল
  • প্রথমবারের মতাে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
  • রেমিট্যান্সে রেকর্ড, ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম 
  • প্রবাসী আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল, নতুন রেকর্ড গড়লেন প্রবাসীরা
  • রিজার্ভ ৩১.৩১ বিলিয়ন ডলার
  • প্রথমবারের মতো ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
  • প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
  • প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন ছাড়াল রেমিট্যান্স