ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার
Published: 2nd, July 2025 GMT
মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ প্রায় ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহের পাগলা টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় নদ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনেরা।
নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দত্তেরবাজার কুঠুরিঘাটসংলগ্ন নদে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ওই দিন এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনজনের বাড়ি পাকুন্দিয়ার চরফরাদি ইউনিয়নে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, আজ ভোরে নিহত শিক্ষার্থীদের স্বজনেরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির (৭) ও জুবায়েদকে (৬) খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় নদে দুজনের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন তাঁরা। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়ার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ময়মনসিংহের দত্তেরবাজার এলাকায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। এ সময় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী চর আলগী গ্রামের মাইনুদ্দিনের মেয়ে শাপলা আক্তারের (১৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ থাকে একই গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে আবির ও মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ। তারা তিনজন বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসায় পড়ত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে ৯ শিক্ষার্থী একটি ছোট নৌকায় করে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যাচ্ছিল। দত্তের বাজারসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ স্রোতের কারণে নৌকাটি ডুবে যায়। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তিনজন নিখোঁজ হয়।
আরও পড়ুনমাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২১৯ ঘণ্টা আগেগফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাফেরদৌস আলম বলেন, ‘নিখোঁজ দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ দুটির সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল উদ্ধার হওয়া আরেকটি মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে হস্তান্তর করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মরদ হ এল ক য় গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেপুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’
এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।