মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ প্রায় ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহের পাগলা টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় নদ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনেরা।

নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার  চরফরাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দত্তেরবাজার কুঠুরিঘাটসংলগ্ন নদে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ওই দিন এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনজনের বাড়ি পাকুন্দিয়ার চরফরাদি ইউনিয়নে।  

ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, আজ ভোরে নিহত শিক্ষার্থীদের স্বজনেরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির (৭) ও জুবায়েদকে (৬) খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় নদে দুজনের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন তাঁরা। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়ার বাড়িতে নিয়ে আসেন।

গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ময়মনসিংহের দত্তেরবাজার এলাকায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। এ সময় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী চর আলগী গ্রামের মাইনুদ্দিনের মেয়ে শাপলা আক্তারের (১৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ থাকে একই গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে আবির ও মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ। তারা তিনজন বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসায় পড়ত।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে ৯ শিক্ষার্থী একটি ছোট নৌকায় করে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যাচ্ছিল। দত্তের বাজারসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ স্রোতের কারণে নৌকাটি ডুবে যায়। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তিনজন নিখোঁজ হয়।

আরও পড়ুনমাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২১৯ ঘণ্টা আগে

গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাফেরদৌস আলম বলেন, ‘নিখোঁজ দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ দুটির সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল উদ্ধার হওয়া আরেকটি মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে হস্তান্তর করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র মরদ হ এল ক য় গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক স্ত্রীকে খুনের পর মেয়েকে দলিল বুঝিয়ে দিয়ে আত্মহনন

ময়মনসিংহ নগরীতে প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাকিবুল করিম (৫০) নামে এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার আগে তিনি জমিজমার দলিলপত্র তার মেয়েকে বুঝিয়ে দেন বলে জানান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন। 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে নগরের গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। মরদেহ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত রওশন আক্তার (৪২) গুলকীবাড়ি এলাকার ওই বাসায় মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। তার বাবার বাড়ি নেত্রোকোণা সদরের রাজুর বাজার এলাকায়।  রাকিবুল করিম (৫০) ময়মনসিংহ নগরের সেনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।  

আরো পড়ুন:

জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল ফ্যাসিবাদ বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠন: প্রধান উপদেষ্টা

শৌচাগারে মিলল গৃহবধূর বস্তাবন্দি লাশ

পুলিশ জানায়, রাকিবুল ও রওশন দম্পতির দুই মেয়ে। তাদের বড় মেয়ে ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করে। রওশন গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসায় ছোট মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে মাস তিনেক আগে রাকিবুল ও রওশন আক্তারের ডির্ভোস হয়। 

আজ মঙ্গলবার ভোরে রওশন আক্তার যে বাসায় ভাড়া থাকেন সে বাসায় প্রবেশ করেন রাবিবুল। তিনি রওশন আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। মাকে ছুরিকাঘাত করতে দেখে ছোট মেয়ে রোজা আক্তার ভয়ে অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল নিজে বাসার অপর একটি কক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত রওশন আক্তারের ভাতিজা ইকবাল হোসেন শাওন বলেন, ‍“পারিবারিক কলহের জেরে দুইজনের ডিভোর্স হয়েছিল। সকালে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে রাকিবুল তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরে তিনি মেয়েকে বেঁধে রেখে অন্য একটি রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোণা থেকে এসে মরদেহ দেখতে পাই।”

বাড়িটির দায়িত্বে থাকা রকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, “১০-১২ বছর আগে বাসাটি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন রওশন আক্তার ও তার মেয়েরা। তার বড় মেয়ে ঢাকায় থাকত। তাদের চালচলন ভালোই ছিল। হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি।”

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে আসেন রাকিবুল করিম। তিনমাস আগে স্ত্রী কর্তৃক তিনি তালাকপ্রাপ্ত হন। আজ বাসায় ঢুকে প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করেন রাবিবুল। এরপর নিজের জমিজমার দলিলপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।”

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তাদের বাড়িতে কেবলই কান্না
  • ‘অহন এই ডিপকল হইছে, মনে অয় পানির কষ্ট কিছুডা দূর অইব’
  • ঘরে ঢুকে প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, পরে আত্মহত্যা
  • নারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর সাবেক স্বামীর আত্মহত্যা
  • সাবেক স্ত্রীকে খুনের পর মেয়েকে দলিল বুঝিয়ে দিয়ে আত্মহনন
  • পাকুন্দিয়ায় নৌকা ডুবি, নিহত ১ নিখোঁজ ২
  • ঈশ্বরগঞ্জে কমিটি গঠন
  • ঢাকা ও ময়মনসিংহে চালু হচ্ছে সব ধরনের অনলাইন জিডি
  • ঢাকা-ময়মনসিংহে চালু হচ্ছে অনলাইন জিডি