নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী একমত বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘আজকের একটা বিষয়ে আমরা প্রায় ঐকমত্যে পৌঁছেছি, সেটা হলো নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারণ কমিটি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহের।

সীমানা নির্ধারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, একটা পরিবর্তন এসেছে, সেটি হলো একটি বিশেষায়িত কমিটি নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। ত্রয়োদশ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন নিজেই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সীমানা নির্ধারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে যে উপদেষ্টারা থাকবেন, তাঁরা পরামর্শ দেবেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠার জন্য সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানান জামায়াতে ইসলামীর এই নায়েবে আমির। তবে এই সরকারের মেয়াদের বিষয়ে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী এই সরকারের মেয়াদ ৪ মাস করার কথা বলেছে এবং স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচন এই দুটিই যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়, সেই দাবি জানিয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা সব সময় জুলাই সনদের পক্ষে। যে পরিবর্তনের জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি, তার কিছুই যদি না হয়, আগের অবস্থায় যদি থাকি, তাহলে সেক্রিফাইস (আত্মত্যাগ) একবারে অর্থহীন হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে বিপ্লব, গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, তবে বাংলাদেশেরটা ব্যতিক্রম। কারণ, এখানে শিশু, বৃদ্ধ, ছাত্র, পেশাজীবী মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। সুতরাং জুলাই সনদ দ্রুত ঘোষণা হওয়া দরকার।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। আলোচনার শুরুতে জুলাই শহীদদের স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো.

এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ ম হ ম ম ক সরক র ঐকমত য র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কোন দলের দাবি কতটা রাখা হলো

সরকার অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেছে। এই আদেশ জারির আগে সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলের মধ্যে মতভিন্নতা ছিল।

রাজনৈতিক দলগুলোকে মতভিন্নতা কাটিয়ে সমন্বিত প্রস্তাব দিতে সরকার সাত দিন সময় দিয়েছিল; কিন্তু দলগুলোর মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়নি।

এখন প্রশ্ন হলো, জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোট নিয়ে কোন দলের আপত্তির কতটুকু বিবেচনায় নিল সরকার।

আগে জেনে নিই জুলাই সনদ কী।

জুলাই সনদ কী

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর জোরালো হয় সংস্কারের দাবি।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ইউনূস নিজেই।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে ছয়টি কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ও বাস্তবায়নপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে স্থান পায়নি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। অবশ্য এসব কমিশনের প্রস্তাব সরকার কিছু কিছু বাস্তবায়ন করছে। তবে পরিস্থিতি ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে মনে করেন অংশীজনেরা।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে প্রায় আট মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সফল নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্ধেকপথ পার করা সম্ভব হবে: মান্না
  • কী হবে যদি গণভোটে ‘না’ জয়ী হয়
  • কপে মতবিরোধ তীব্র, চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা
  • প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতির সঙ্গে প্রতারণা: বাম জোট
  • ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রুখতে বামপন্থি সরকার গড়তে হবে: সেলিম
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে অনেক বিষয়ে ‘অস্পষ্টতা’ খেয়াল করেছি
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কোন দলের দাবি কতটা রাখা হলো