চট্টগ্রামের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে দাপ্তরিক আদেশে ওসি নাজমুন নূরকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম।

পটিয়া থানার নতুন ওসির দায়িত্ব পেয়েছেন চন্দনাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) যুযুৎসু চাকমা। 

ওসি প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে পটিয়া। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ইন্দ্রপুল এলাকায় অবস্থান নেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টানা ৯ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। এই দীর্ঘ সময় ধরে দুই পাশে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। দূরপাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এদিকে একই দাবিতে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নগরীর জাকির হোসেন সড়কে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা।

এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে। পটিয়া শহীদ মিনার এলাকা থেকে ছাত্রলীগকর্মী দীপঙ্কর দে (২৯)–কে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। তাকে পটিয়া থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ শুরুতে গ্রেপ্তার করতে অস্বীকৃতি জানায়, কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের তীব্র বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযোগ করে, আন্দোলনকারীরা থানার ভেতরেও উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করেন।

অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ মামলার বিষয়ে গড়িমসি করে। এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে। এতে কয়েকজন আহত হন।

ঢাকা/রেজাউল/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নদীভাঙন রোধে পাটুরিয়ায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এবং আশপাশে এলাকা নদীভাঙন থেকে রক্ষা করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তারা পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এ সব কর্মসূচি পালন করেন।

আন্দোলনকারী আজিবার রহমান জানান, পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পাটুরিয়া ফেরি, লঞ্চঘাট, ঘাটসংলগ্ন ধুতরাবাড়ী ও তেগুরি গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রাম দুটিতে কয়েকটি বসতবাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে। এরই মধ্যে লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙনে ফেরিঘাটও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি

রংপুরে শ্বশুর-জামাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন

তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়। তবে ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এর প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটসংলগ্ন শহীদ রফিক চত্বরে উথলী-পাটুরিয়া সড়কে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট থেকে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বেলা ১২টার দিকে মিছিলটি পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে শহীদ রফিক চত্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে উথলী-পাটুরিয়া সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রী ও পরিবহন-শ্রমিকেরা ভোগান্তিতে পড়ে। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলে তারা সড়ক থেকে সরে যায়। 

অবরোধ চলাকালে নদীভাঙন প্রতিকারের দাবিতে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন খান (পান্নু), ব্যবসায়ী নূর ইসলাম, স্থানীয় আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাপস খান, স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন, উত্তম পাল, আরিফ হোসেন ও রানা শিকদার।

বক্তারা বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া ফেরিঘাট নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘাট এলাকা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়ে অনেকে পথে বসেছে। অথচ ভাঙনরোধে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’’ 

নদীভাঙন প্রতিরোধে বক্তারা দাসকান্দি থেকে নয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, ঘাট সংলগ্ন দুই কিলোমিটার এলাকা বিআইডব্লিউটিএর আওতাধীন। এরপরও সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাটুরিয়া ঘাট ও আশপাশে নদীভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে। তবে ইতোমধ্যে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

ঢাকা/চন্দন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ