চুয়াডাঙ্গায় মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত গার্ড রেক উদ্ধার, ট্রেন চলাচল শুরু
Published: 4th, July 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী রেলস্টেশন এলাকায় মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত গার্ড রেক (ট্রেনের শেষের বগি, যেখানে বসে ট্রেনের পরিচালক ট্রেনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন) উদ্ধার করা হয়েছে। পাবনার পাকশী থেকে আসা রিলিফ (উদ্ধারকারী) ট্রেন দুর্ঘটনার সোয়া পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রেকটি উদ্ধার করে। এরপর চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে মালবাহী ট্রেনের গার্ড রেকের এই লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এতে এই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে খুলনার সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে চলাচলকারী ট্রেনগুলো বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে। খুলনার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, উথলী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মিন্টু কুমার রায় দুর্ঘটনার বিষয়টি বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী) পাকশি বিভাগীয় কার্যালয়ে জানান। সেখান থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। টানা ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটের চেষ্টায় রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে দুর্ঘটনাকবলিত গার্ড রেকটি উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, খুলনার মোংলাবন্দর থেকে ৩২টি ট্যাংকারভর্তি মোলাসেস (চিটাগুড়) নিয়ে মালবাহী ট্রেনটি সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিল। ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গার উথলী রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার আগেই গার্ড রেক লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এরপর সেখানে ট্রেন থামিয়ে লাইনচ্যুত গার্ড রেকটি উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ট্রেনের গার্ড রেক লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে খুলনা থেকে রাজশাহীর পথে চলচালকারী আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন ঝিনাইদহের সাবদালপুর, ঢাকা থেকে খুলনাগামী কমিউটার ট্রেন নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস চুয়াডাঙ্গায় ও চিলাহাটী থেকে খুলনাগামী মেইল ট্রেন রকেট আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনে আটকা পড়ে।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে খুলনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন হওয়ার কারণে খুলনা থেকে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলগামী এবং উত্তরাঞ্চল ও ঢাকা থেকে খুলনাগামী ট্রেনগুলো বিভিন্ন স্টেশনে থামিয়ে রাখা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইনচ য ত র লওয় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলেরা তার বাবার রক্ত দেখেছে: কারিনা
গত ১৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে সাইফ আলী খানের মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে এক দুর্বৃত্ত ঢুকে পড়ে। সে সময় বাড়ির সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। স্টাফ নার্স লিমার চিৎকারে ঘুম ভাঙে সাইফের। এরপর ওই দুর্বৃত্তের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়; একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিকবার সাইফকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এই দৃশ্যপটের সাক্ষী সাইফ-কারিনার দুই শিশু পুত্র।
কয়েক দিন আগে বরখা দত্তকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কারিনা কাপুর খান। এ আলাপচারিতায় ভয়ংকর সেই ঘটনা কারিনা ও তার সন্তানদের ওপরে কতটা প্রভাব পড়েছে তা ব্যাখ্যা করেছেন এই অভিনেত্রী।
কারিনা কাপুর খান বলেন, “সন্তানের ঘরে অন্য কাউকে দেখলে কেমন অনুভূতি হয়, তা নিয়ে আমি এখনো কিছুটা সংগ্রাম করছি। মুম্বাইতে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা আপনি কখনো শুনেননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার। মুম্বাইয়ে বাড়িতে হাঁটছে এবং কারো স্বামীর ওপরে আক্রমণ করার কথাও কখনো শুনিনি। আমরা এখনো শতভাগ ঠিকঠাকভাবে বুঝতে পারিনি। অন্তত আমি না। প্রথম কয়েক মাস আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। ঘুমানো এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা কঠিন ছিল।”
ঘটনাটিকে ‘মৃত্যুর’ সঙ্গে তুলনা করে কারিনা কাপুর খান বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপলদ্ধি করতে পারছি, স্মৃতি ক্রমশ ম্লান হয়ে যায়! তবে এটি আপনার হৃদয়ে থাকে। এটি মৃত্যুর মতো। আপনি যখন কাউকে হারান, তখন সত্যি এটি কাটিয়ে উঠতে পারেন না। আমি সবসময় অনুভব করেছি, আপনি কখনো এটি কাটিয়ে উঠতে পারেন না। কিন্তু স্মৃতি দিন দিন ম্লান হয়ে যায়।”
আরো পড়ুন:
প্রাক্তন স্বামীর শেষকৃত্যে কারিশমা
সালমান খুব বাজে অভিনেতা, কারিনার বক্তব্য ভাইরাল
দুই পুত্রকে ভালো রাখার জন্য ভয়-উদ্বেগ থেকে দ্রুত বের হওয়ার চেষ্টা করেন কারিনা কাপুর খান। এ অভিনেত্রীর ভাষায়, “সন্তানদের জন্য আমি ভয় নিয়ে বাঁচতে চাইনি। কারণ তাদের উপর এই চাপ চাপিয়ে দেওয়া ভুল সিদ্ধান্ত। ভয়-উদ্বেগের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমি একজন মা, একজন স্ত্রী। সুতরাং এই সত্যের ভারসাম্য বজায় রাখার জার্নিটা কঠিন ছিল। এটি আমাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমরা নিরাপদে আছি, এজন্য আনন্দিত। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।”
সাইফ আলী খানের ওপরে হামলার ঘটনা তার পুত্রের উপরে প্রভাব ফেলেছে। এ বিষয়ে কারিনা কাপুর খান বলেন, “আমি আশা করি, আমার ছেলেরা দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠবে। কারণ তারা বাবাকে ছুরিকাঘাত হতে দেখেছে। বড় ছেলে (জে) এখনো বলে, ‘আমার বাবা ব্যাটম্যান এবং আয়রন ম্যান, যে কারো মোকাবিলা করতে পারে।”
ব্যাখ্যা করে কারিনা কাপুর খান বলেন, “তারা তার বাবার রক্ত এবং সবকিছু দেখেছে। আশা করি, এই অভিজ্ঞতা তাদের আলাদা মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। তারা আশ্রয় পেয়েছে, তারপর তারা এটি দেখেছে। তাই আমার মনে হয়, এই অভিজ্ঞতা তাদের সেই আশ্রয়হীন জীবন থেকে বের করে এনেছে। এটি ঘটতে পারে— এই বাস্তবতায় তাদের নিয়ে এসেছে। অবশ্যই, ৪ এবং ৮ বছর বয়সে তাদের এটি দেখা উচিত নয়।”
অভিনেত্রী অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সাইফ আলী খান। ২০০৭ সালে ‘টশান’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় পরস্পরের প্রেমে পড়েন তারা। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন এই জুটি।
২০১২ সালে বিয়ে করেন সাইফ-কারিনা। ২০১৬ সালে জন্ম নেয় এ দম্পতির প্রথম সন্তান তৈমুর আলী খান। ২০২১ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারি এ জুটির সংসার আলো করে জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান জাহাঙ্গীর আলী খান।
তথ্যসূত্র: লাইভ মিন্ট
ঢাকা/শান্ত