রোববার ছিল ইয়ামাহার ১৩৮ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইয়ামাহা ফ্ল্যাগশিপ সেন্টারে আয়োজন করা হয় ‘ইয়ামাহা ডে’। সংগীতশিল্পী থেকে বিনোদনের বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ হাজির হয়েছিলেন এতে, সবার উপস্থিতিতে তা যেন রূপ নেয় মিলনমেলায়।
রাত আটটায় অতিথিবরণের মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। এরপর ইয়ামাহার ইতিহাস তুলে ধরা হয় একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে।
কীভাবে ১৮৮৭ সালে ইয়ামাহার যাত্রা। এরপর কেটে গেছে ১৩৮ বছর। এ সময়ে সংগীতের বিভিন্ন যন্ত্র উৎপাদনের ইতিহাস থেকে বিশ্বব্যাপী ইয়ামাহা মিউজিক স্কুলের কার্যক্রম দেখানো হয়।
গানের ফাঁকে ফাঁকে অতিথিরা আয়োজন নিয়ে কথা বলেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কবরের জায়গা নিয়ে বিরোধ, প্রবাসী বাবার ইচ্ছা পূরণ হলো না শিশুর দাফনে
চার দিন আগে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় শিশুটির। এরপর দেখা দেয় অন্যান্য শারীরিক জটিলতা। পরে তাকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় হাসপাতালে। আজ রোববার সকালে সেখানে মারা যায় শিশুটি। পরিবার চেয়েছিল তাকে দাদা–দাদির কবরের পাশে দাফন করতে। কিন্তু জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে সেখানে দাফনে বাধা দেন শিশুটির বাবার চাচাতো ভাইয়েরা। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। শিশুটিকে দাদা–দাদির কবরের পাশে দাফন করা যায়নি।
আজ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নের গাংকুলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃত শিশুটির নাম ফাহাদ মিয়া (৪)। তার বাবা আল মামুন সৌদি আরবে গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শিশুটি মারা যাওয়ার পরে বাবা আল মামুনকে ভিডিও কলে ছেলের নিথর মুখ দেখানো হয়। তিনি ছেলেকে বাবা–মায়ের কবরের পাশে দাফন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে সেখানে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে আল মামুনের চাচাতো ভাইয়েরা কবর খুঁড়তে বাধা দেন। তাঁদের দাবি, এটা এজমালি জায়গা। এই কবরস্থানে আর দাফন হবে না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বিদেশে থাকা শিশুটির চাচাতো চাচা সোহেল মিয়া মুঠোফোনে বাড়িতে থাকা ছোট ভাই আসিফ মিয়াকে নির্দেশ দেন, এই কবরস্থানে কবর দিতে যেন বাধা দেওয়া হয়। এরপর তিনি কবর খুঁড়তে বাধা দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুপুরে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯–এ ফোন দেন। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পাকুন্দিয়া থানার পুলিশ। তারাও বোঝাতে ব্যর্থ হয় চাচাতো চাচাদের। পরে বিকেলে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ফাহাদের বাবার কেনা ফসলি জমিতে তাকে দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বুঝিয়ে বলেছি, এটা তো একটা শিশু। শিশুটির বাবা বিদেশ থেকে আবেদন করেছেন দাদা–দাদির কবরের পাশে তাঁর সন্তানকে দাফন করার জন্য। কিন্তু চাচাতো চাচারা সেটা শোনেননি।’
মৃত শিশুর ফুফু পারুল আক্তার বলেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি, আমার দুই ভাই প্রবাসে। বাড়িতে আমাদের কেউ নেই। আমার ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে ছেলেকে দাদা–দাদির পাশে কবর দিতে। কিন্তু ছোট্ট বাচ্চাটির কবর দিতে দেওয়া হলো না। কতটুকু জায়গা লাগত এ শিশুর জন্য? দূরের মানুষও তো কবরের জন্য এমনভাবে বাধা দেয় না।’
কবর খুঁড়তে বাধা দেওয়া আসিফ বলেন, ‘আমার বড় ভাই (সোহেল) বলেছে এখানে কবর না দিতে। তাই আমি বাধা দিয়েছি। ভাই জানে, কিসের জন্য বাধা দিতে বলেছে, হয়তো জায়গা পাবে। এটা এজমালি জায়গা। আমি এ বিষয়ে এর চাইতে বেশি কিছু বলব না। ভাই বিদেশ থেকে বলেছে, তাই বাধা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকুন্দিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান বলেন, একপক্ষ বাধা দেওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ফাহাদের বাবার কেনা জমিতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। ওয়ারিশ সম্পত্তির দ্বন্দ্বের কারণে একটি ছোট্ট শিশুকে কবর দিতে দেওয়া হয়নি। এমন ঘটনা কোথাও ঘটেছে কি না, তাঁর জানা নেই।