চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আমিরপুর রেলগেটে ট্রেনে কাটা পড়ে আইনুল ইসলাম নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রেলগেট না থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে দাবি করে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে খুলনা-চুয়াডাঙ্গা-ঢাকা ও খুলনার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। 

নিহত আইনুল ইসলাম (২৫) আমিরপুর গ্রামের আরমান হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আমিরপুর রেলগেট অতিক্রম করছিল। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী আইনুল ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। এ দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা রেললাইনে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা রেলগেটে গেটম্যান নিয়োগের দাবিতে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে রাখেন। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান চুয়াডাঙ্গা সদর ইউএনও এম সাইফুল্লাহ ও ওসি খালেদুর রহমান। তারা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গেটম্যান বসানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে আটকে থাকা ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করে।
ইউএনও এম সাইফুল্লাহ জানান, ঘটনার পর তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমিরপুর রেলক্রসিংয়ে দ্রুতই রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে রেলওয়ে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে ১২০টি দোকান উচ্ছেদ

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়ি ও ঝাউবাগান দখল করে গড়ে তোলা ১২০টির বেশি অবৈধ দোকানপাট (চার চাকার টংঘর) উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বেলা দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলা এই যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েক শ সদস্য অংশ নেন। অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করা হলেও সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ না করার বিষয়ে আগেই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল।

সকালে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১টার পর থেকে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা অবৈধ দোকানপাট সরানোর চেষ্টা চালান। তবে দোকানমালিকেরা নানা অজুহাত দিলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী মাইকিং করে বেলা দুইটা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি ঘোষণা দেন, এরপরও দোকান না সরালে যৌথ বাহিনী উচ্ছেদে নামবে।

একই সময়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘কার্ড থাকুক বা না থাকুক, ঝাউবাগানের ভেতর কোনো দোকান রাখা যাবে না।’

দুপুর গড়িয়ে গেলেও দোকান না সরায় খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে অবৈধ দোকান ভাঙার কাজ শুরু হয়। পরে দোকানমালিকেরা ঝাউবাগানের ভেতরে রাখা দোকান সরিয়ে সৈকত সড়কের পাশে রাখতে শুরু করেন। এতে সাময়িকভাবে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে পুলিশ মাইকিং করে দোকানগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনুরোধ জানায়। বিকেল চারটার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে কয়েকটি দোকান ভাঙা শুরু হলে বাকিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।

যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম। উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ, সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ শাহরিয়ার, সদর ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ পেয়ার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান প্রমুখ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে সুগন্ধা সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে দেড় শতাধিক চার চাকার টংঘর দোকান বসানো হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতায় দোকানগুলো সরিয়ে দিলে পরে মসজিদের উত্তর পাশের ঝাউবাগানে নতুন করে দোকান বসানো হয়। এতে পর্যটকদের নিরাপদ চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল।

ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো সংঘাত ছাড়াই যৌথ বাহিনী ঝাউবাগানের ভেতর থেকে ১২০টির বেশি দোকান উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কেউ বালিয়াড়ি বা ঝাউবাগানে অবৈধ স্থাপনা করতে না পারে, সেদিকেও নজর রাখা হবে।’

পুলিশ জানায়, সুগন্ধা সৈকতের বালিয়াড়িতে আরও কয়েক শ দোকানপাট রয়েছে। আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে এগুলো নিজ উদ্যোগে সরানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় নতুন স্থাপনাগুলো ১১ অক্টোবর রাতের মধ্যে এবং পুরোনো স্থাপনাগুলো ১৬ অক্টোবরের মধ্যে সরাতে হবে। এরপর শহরজুড়ে মাইকিং করে বিষয়টি জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম দিনের অভিযানে ১২০টির মতো দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবশিষ্টগুলো ১৭ অক্টোবরের মধ্যে সরানো হবে। একই সঙ্গে সৈকতের ময়লা-আবর্জনাও পরিষ্কার করা হচ্ছে। আমরা চাই, কোনো পর্যটক যেন সৈকতে এসে ভোগান্তিতে না পড়েন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি জমি মাপজোখে বাধা ও মারধর, যুবদল নেতার কারাদণ্ড
  • শেরপুরে বালু উত্তোলন: ৯ জনকে কারাদণ্ড
  • জয়পুরহাটে শিকলবন্দী বানরকে মুক্ত করল বন বিভাগ
  • দলছুট বানর শিকল দিয়ে বাড়িতে বেঁধে রেখেছেন, বিক্রি করতে চান ১২ হাজার টাকায়
  • কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে ১২০টি দোকান উচ্ছেদ