ফ্রান্সে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির অ্যালগরিদমে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন এনে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ ঘটানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ফরাসি পুলিশ। 

শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। 

শুক্রবার (১১ জুলাই) প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এক্সের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দুটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে- অ্যালগরিদম পরিবর্তন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে তথ্য সংগ্রহ। এই অভিযোগ ‘সংগঠিত তথ্য সিস্টেম হ্যাকিং’-এর আওতায় পড়ে, যা ফরাসি আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

আরো পড়ুন:

সংসার ভাঙলো কনার, ন্যান্সি ‘শিয়াল রাণী’ বললেন কাকে?

‘তাণ্ডব’র প্রদর্শনী বন্ধ, আপনি আছেন বন্দর নিয়ে?’ সরকারের প্রতি নিপুণের প্রশ্ন

প্রসিকিউটর লোর বেকো বলেছেন, জাতীয় জেনডারমারিকে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে, প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিসের সাইবার ক্রাইম ইউনিট দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছিল। ফরাসি সংসদের একজন সদস্য এবং একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। উভয় অভিযোগেই অভিযোগ করা হয়েছে যে, এক্সের অ্যালগরিদম বিদেশি হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ফরাসি সংসদের আরো কয়েকজন সদস্য সম্প্রতি এক্সের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, বিশেষ করে প্ল্যাটফর্মের এআই চ্যাটবট ‘গ্রোক’-এর সাম্প্রতিক ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই মামলায় এক্স প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আইনি সত্তা এবং কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তদন্তের আওতায় এসেছে।

তদন্তকারীরা এখন প্রমাণ খুঁজছেন- এক্স প্ল্যাটফর্ম কীভাবে কনটেন্ট প্রদর্শনের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করে চরম ডানপন্থি মতাদর্শকে এগিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের সাম্প্রতিক নির্বাচনে ডানপন্থি প্রার্থীদের পোস্টগুলো বেশি প্রচারিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, এক্স-এ সাম্প্রতিক সময়ে ঘৃণামূলক, বর্ণবাদী, এলজিবিটিকিউ+ বিরোধী ও সমকামবিরোধী রাজনৈতিক কনটেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ফ্রান্সের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে।

এক্স ফ্রান্সের সিইও লরেন্ট বুয়ানেক জানুয়ারিতে একটি পোস্টে বলেছিলেন, ঘৃণামূলক কনটেন্ট ঠেকাতে এক্সের কঠোর ও স্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। তিনি আরো যোগ করেন, প্ল্যাটফর্মটি ‘ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে’ এবং এর অ্যালগরিদম ‘ঘৃণাত্মক কনটেন্ট’ ঠেকাতে ডিজাইন করা হয়েছে।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল য টফর ম কনট ন ট এক স র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি খেলাফত মজলিসের

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় বীভৎস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। এই হত্যাকাণ্ড জাহেলি যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমদ আবদুল কাদের এসব কথা বলেন। দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

খুনিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘গত বুধবার রাজধানীর মিটফোর্ডে যে রোমহর্ষ ও বীভৎস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা জাহেলি যুগের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। একজন জীবন্ত মানুষকে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রস্তারাঘাতে হত্যা করা হচ্ছে, আর লোকজন দাঁড়িয়ে তা দেখছে। সন্ত্রাসীদের হাতে কোনো মারণাস্ত্র না থাকলেও নির্মম ঘটনায় কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেনি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড–পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ত ভূমিকা হতাশাজনক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার দুই দিন পর প্রশাসনের টনক নড়ে। ইতিমধ্যে মূল অপরাধীদের বাদ দিয়ে মামলার অভিযোগ এসেছে। যৌথ বাহিনীর টহল চললেও এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।’

আধিপত্যবাদী ও চাঁদাবাজদের নিপীড়ন জনগণ আর সহ্য করবে না বলে মন্তব্য করেন আহমদ আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ঘাতক ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে। এভাবে প্রায় এক বছর নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বে বিএনপিসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।

আহত ও জখম হয়েছে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। ৫ আগস্ট–পরবর্তীতে এগুলো কখনো মেনে নেওয়া যায় না। হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ হতে হয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। তাই আধিপত্যবাদী ও চাঁদাবাজদের সাবধান হয়ে যেতে হবে। জনগণ আগের মতো নিপীড়ন মুখ বুঝে আর সহ্য করবে না। দেশপ্রেমিক ইসলামি শক্তি ঐক্যবদ্ধ আছে। আমরা সবার মধ্যে সুস্থ রাজনীতির চর্চা দেখতে চাই।’

খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক শায়খুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি রায়হান আলী প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ