আনহেল দি মারিয়া এমনিতেই আবেগপ্রবল মানুষ। তাই ১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে ফেরা দি মারিয়া বরণের দিনে যে আবারও আবেগে ভেসে যাবেন, তা অনুমেয়ই ছিল।

দি মারিয়ার জীবনে সেই মুহূর্ত এসেছে গতকাল রাতে। রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে আবারও খেলতে নামার আগে তাঁকে রাজসিকভাবে বরণ করে নিয়েছেন এস্তাদিও জিহান্তে দে আরোয়িতোয় উপস্থিত ৪৬ হাজারের বেশি দর্শক।

তাঁদের ভালোবাসার সিক্ত এই আর্জেন্টাইন তারকা নিজেকে সামলাতে পারেননি। হাত নেড়ে অভিবাদনের জবাব দেওয়ার সময় তাঁর দুই চোখ বেয়ে ঝরেছে পানি।

তবে আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগের (প্রিমেরা ডিভিশন) ম্যাচটি শুরু হতেই দি মারিয়া আবার হয়ে ওঠেন সত্যিকারের পেশাদার ফুটবলার। ঘরের মাঠে সমর্থকদের ভালোবাসার প্রতিদান দেন গোল করে।

৭৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা দি মারিয়ার গোলেই এগিয়ে যায় রোজারিও সেন্ট্রাল। গোলবারের ডান পাশ দিয়ে তাঁর নিচু করে নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি প্রতিপক্ষ গোদোই ক্রুজের গোলকিপার। সেই গোলের পর দর্শকদের গগণবিদারি চিৎকার যেন সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গেছে ভিআইপি বক্সে থাকা তাঁর পরিবারকেও।

এরপরও দি মারিয়ার দিনটা অম্লমধুর কেটেছে। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় বাজেভাবে ট্যাকল করলে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন ৩৭ বছর বয়সী উইঙ্গার। এ সময় তাঁকে আবারও কাঁদতে দেখা যায়।

আরও পড়ুনদি মারিয়ার যে রক্তের রং আকাশি-সাদা০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দি মারিয়া মাঠের বাইরে যাওয়ার পর ম্যাচের মোড়ও ঘুরে যায়। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে গোদোই ক্রুজের ভিসেন্তে পোগ্গি গোল করলে রোজারিও সেন্ট্রালকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়।

অবশ্য স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হলেও গুরুতর কিছু ঘটেনি বলে ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন দি মারিয়া। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপজয়ী তারকা শৈশবের ক্লাবে ফেরা নিয়ে লিখেছেন, ‘এ অবিস্মরণীয় মুহূর্তের জন্য এত বছর অপেক্ষা করেছি। এতটা ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা যে ফল (জয়) চেয়েছিলাম, তা এই ম্যাচে পাইনি। তবে এটি সবে শুরু। এখনো অনেক পথ বাকি। চলো, এগিয়ে যাই সেন্ট্রাল।’

প্রতিপক্ষের বাজে ট্যাকলের শিকার হন দি মারিয়া.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভেঙে ফেলা হলো শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বরের’ স্থাপনাটি

রাজধানীর শাহবাগে ‘প্রজন্ম চত্বর’ নামে পরিচিত ইলেকট্রিক বিলবোর্ডের ত্রিকোণাকৃতির স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। শনিবার রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) স্থাপনাটি ভেঙে ফেলে। এখানে নতুন একটি স্থাপনা হবে বলে সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে।

শাহবাগে ত্রিকোণাকৃতির স্থাপনাটি ২০০৮ সালে নির্মিত হয়- এই তথ্য নিশ্চিত করে ডিএসসিসির উপ–রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজাহান আলী সমকালকে বলেন, ‘করপোরেশনের অনেক জায়গায় বিজ্ঞাপনী সংস্থা অনুমতি নিয়ে বিলবোর্ডের স্থাপনা নির্মাণ করেছিল। ২০০৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন শাহবাগের বিলবোর্ড স্থাপনাটি নির্মাণ করেন। মাঝখানে এটি একবার সংস্কার করা হয়। এখান থেকে নিয়মিত সিটি করপোরেশনকে রাজস্ব দেওয়া হতো।’

তিনি বলেন, ‘সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের মেয়াদে ডিএসসিসি এলাকার সব বিলবোর্ড উচ্ছেদের সময় শাহবাগের এই স্থাপনাটিও উচ্ছেদ করা হয়। তখন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি এখনও চলছে।’ মামলা হওয়ার পর থেকে স্থাপনাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল বলে জানান তিনি।

শনিবার রাতে এস্কাভাটর দিয়ে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয়। এসময় ডিএসসিসির অঞ্চল–১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সাইফুল ইসলাম জয় সমকালকে বলেন, ‘স্থাপনাটির অফিসিয়াল কোনও নাম ছিল না। এখানে ত্রিকোণাকৃতির বিজ্ঞাপনী সংস্থার ইলেকট্রিক বিলবোর্ড ছিল। দীর্ঘদিন সেটি পরিত্যক্ত থাকায় ভেঙে ফেলা হয়েছে।’

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তিনি শুনেছেন সরকার দেশের ৬৪টি জেলায় যে ‘জুলাই মনুমেন্ট’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এর মধ্যে ঢাকারটি শাহবাগের যে অংশে এই স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিল, সেখানে তৈরি করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ