‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’, একটি ছোট্ট দোয়া, কিন্তু অফুরানের কল্যাণবাহী। এর অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে আফিয়া (কল্যাণ) প্রার্থনা করি।’

আফিয়া শব্দটি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পাপ থেকে মুক্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের সকল কল্যাণকে ধারণ করে। নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমাদের আধ্যাত্মিক আশ্রয়।

দোয়ার উৎস

দোয়াটি হাদিসে বর্ণিত একটি প্রামাণ্য দোয়া। নবীজি (সা.

) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে “আফিয়া” প্রার্থনা করো, কারণ আফিয়ার চেয়ে উত্তম কিছু কাউকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস ৩৫১৪)

আরেকটি হাদিসে, তিনি তাঁর চাচা হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়া চাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২,৬৩৫)

‘আফিয়া’ অর্থ কী

‘আফিয়া’ একটি বিস্তৃত শব্দ। মাওলানা আশরাফ আলী থানভি তাঁর ‘মুনাজাতে মকবুল’-এ ব্যাখ্যা করেন, ‘আফিয়া’ দুনিয়ার ফিতনা, রোগব্যাধি, পাপাচার এবং আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা করে। এটি শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক পবিত্রতার সমন্বয়। (মুনাজাতে মকবুল, পৃষ্ঠা ১৫৬, দারুল ইশাআত, ২০০৫)

দোয়ার তাৎপর্য

এই দোয়া ছোট হলেও এর গভীরতা অপরিসীম। নবীজি (সা.) দোয়াটি প্রায়ই পড়তেন এবং সাহাবিদের শিখিয়েছিলেন। মুফতি তাকী উসমানীর মতে, ‘আফিয়া‘ দোয়া মুমিনের জন্য একটটা ঢাল, যা তাঁকে দুনিয়ার ফিতনা ও আখিরাতের কষ্ট থেকে রক্ষা করে। (ইসলামি জিন্দেগি, পৃষ্ঠা ৪১২, ইদারাতুল মাআরিফ, ২০১০)

আফিয়া শুধু ব্যক্তির কল্যাণ নয়, বরং পরিবার, সমাজ এবং উম্মাহর জন্যও কল্যাণ কামনা করে। একই সঙ্গে এই দোয়া আমাদের আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে এবং তাঁর রহমতের ওপর ভরসা রাখতে শেখায়।

হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন তিনবার বলে, ‘আউজু বিল্লাহিস সামি’ইল আলিমি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ এবং আফিয়ার দোয়া পড়ে, সে বিপদ থেকে রক্ষা পায়।’ (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮৭১)।

কখন পড়বেন

দোয়াটি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় পড়া যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে পড়লে ফজিলত বেশি পাওয়া যায়:

১. নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর তাসবিহ ও দরুদের সঙ্গে এই দোয়া পড়া উত্তম।

২. সকাল-সন্ধ্যার জিকির: সকালে ফজরের পর ও সন্ধ্যায় মাগরিবের পর এই দোয়া পড়লে দিনভর রক্ষা পাওয়া যায়।

৩. বিপদের সময়: অসুস্থতা, মানসিক চাপ বা ফিতনার সময় এই দোয়া পড়া শান্তি দেয়।

৪. নিয়মিত আমল: প্রতিদিন তিনবার পড়লে বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা পাওয়া যায়।

আধুনিক জীবনের তাড়াহুড়া, মানসিক চাপ, রোগব্যাধি এবং ফিতনার মধ্যে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’ দোয়াটি হতে পারে আমাদের মানসিক শান্তির জপমালা।

আরও পড়ুননবীজি (সা.)–এর দোয়া০১ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই দ য আল ল হ কল য ণ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’: অফুরান কল্যাণের দোয়া

‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’, একটি ছোট্ট দোয়া, কিন্তু অফুরানের কল্যাণবাহী। এর অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে আফিয়া (কল্যাণ) প্রার্থনা করি।’

আফিয়া শব্দটি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পাপ থেকে মুক্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের সকল কল্যাণকে ধারণ করে। নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমাদের আধ্যাত্মিক আশ্রয়।

দোয়ার উৎস

দোয়াটি হাদিসে বর্ণিত একটি প্রামাণ্য দোয়া। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে “আফিয়া” প্রার্থনা করো, কারণ আফিয়ার চেয়ে উত্তম কিছু কাউকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস ৩৫১৪)

আরেকটি হাদিসে, তিনি তাঁর চাচা হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়া চাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২,৬৩৫)

‘আফিয়া’ অর্থ কী

‘আফিয়া’ একটি বিস্তৃত শব্দ। মাওলানা আশরাফ আলী থানভি তাঁর ‘মুনাজাতে মকবুল’-এ ব্যাখ্যা করেন, ‘আফিয়া’ দুনিয়ার ফিতনা, রোগব্যাধি, পাপাচার এবং আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা করে। এটি শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক পবিত্রতার সমন্বয়। (মুনাজাতে মকবুল, পৃষ্ঠা ১৫৬, দারুল ইশাআত, ২০০৫)

দোয়ার তাৎপর্য

এই দোয়া ছোট হলেও এর গভীরতা অপরিসীম। নবীজি (সা.) দোয়াটি প্রায়ই পড়তেন এবং সাহাবিদের শিখিয়েছিলেন। মুফতি তাকী উসমানীর মতে, ‘আফিয়া‘ দোয়া মুমিনের জন্য একটটা ঢাল, যা তাঁকে দুনিয়ার ফিতনা ও আখিরাতের কষ্ট থেকে রক্ষা করে। (ইসলামি জিন্দেগি, পৃষ্ঠা ৪১২, ইদারাতুল মাআরিফ, ২০১০)

আফিয়া শুধু ব্যক্তির কল্যাণ নয়, বরং পরিবার, সমাজ এবং উম্মাহর জন্যও কল্যাণ কামনা করে। একই সঙ্গে এই দোয়া আমাদের আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে এবং তাঁর রহমতের ওপর ভরসা রাখতে শেখায়।

হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন তিনবার বলে, ‘আউজু বিল্লাহিস সামি’ইল আলিমি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ এবং আফিয়ার দোয়া পড়ে, সে বিপদ থেকে রক্ষা পায়।’ (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮৭১)।

কখন পড়বেন

দোয়াটি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় পড়া যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে পড়লে ফজিলত বেশি পাওয়া যায়:

১. নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর তাসবিহ ও দরুদের সঙ্গে এই দোয়া পড়া উত্তম।

২. সকাল-সন্ধ্যার জিকির: সকালে ফজরের পর ও সন্ধ্যায় মাগরিবের পর এই দোয়া পড়লে দিনভর রক্ষা পাওয়া যায়।

৩. বিপদের সময়: অসুস্থতা, মানসিক চাপ বা ফিতনার সময় এই দোয়া পড়া শান্তি দেয়।

৪. নিয়মিত আমল: প্রতিদিন তিনবার পড়লে বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা পাওয়া যায়।

আধুনিক জীবনের তাড়াহুড়া, মানসিক চাপ, রোগব্যাধি এবং ফিতনার মধ্যে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’ দোয়াটি হতে পারে আমাদের মানসিক শান্তির জপমালা।

আরও পড়ুননবীজি (সা.)–এর দোয়া০১ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ