যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় প্লেগে একজনের মৃত্যু, ১৮ বছর পর এবারই প্রথম
Published: 13th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় নিউমোনিক প্লেগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি মারা গেছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গত শুক্রবার এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০০৭ সালের পর সেখানে এবারই প্রথম প্লেগে কারও মৃত্যু হলো।
অ্যারিজোনার কোকোনিনো কাউন্টির স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ জানায়, ওই ব্যক্তি প্লেগে আক্রান্ত মৃত পশুর সংস্পর্শে এসেছিলেন। এরপর তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চতুর্দশ শতকে প্লেগ ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত ছিল। প্রাণঘাতী এ রোগ তখন ইউরোপের দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের মৃত্যু ঘটিয়েছিল। বর্তমানে মানুষের মধ্যে প্লেগের সংক্রমণ খুব একটা দেখা যায় না। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, দেশজুড়ে প্রতিবছর গড়ে সাতজনের প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা যায়।
কোকোনিনো কাউন্টি প্রশাসন জানিয়েছে, একজন মারা গেলেও জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম।
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যাকটেরিয়ার কারণে ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেয়। এটা গুরুতর, তবে সচরাচর দেখা যায় না। মূলত এ ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসার দুই থেকে আট দিনের মধ্যে সংক্রমণ দেখা দেয়। জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা, দুর্বলতার মতো নানা উপসর্গ থাকে।
এদিকে যুক্তরাজ্যে এখন আর প্লেগের সংক্রমণ দেখা যায় না। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মধ্যেও প্লেগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশ কম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যালার্ম বন্ধ করে শাহেদ ঘুমিয়ে পড়ে
একদিন বেলা ১১টার দিকে কেউ একজন শাহেদের ঘরের দরজায় টোকা দেয়। দরজা খুলে সে দেখে বাড়িওয়ালার ছোট ভাই, সঙ্গে দুজন পুলিশ। খালি গায়ে, হাফপ্যান্ট পরে ঘুমচোখে পুলিশসহ তিন-চারজন মানুষ দেখে শাহেদ কিছুটা অবাক হয়। ঝটপট একটি টি-শার্ট নিয়ে গায়ে দেয়।
আগত তিন ব্যক্তিকে বসার জন্য নিজের অগোছালো ঘরে না ডেকে পাশে খোলা ছাদে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় শাহেদ। পুরোনো ধাঁচের রেলিংঘেরা সুন্দর ছাদটিতে যেতে না-যেতেই এক পুলিশ জিজ্ঞেস করে, বাসায় কি নেংটা হয়ে থাকেন? কালক্ষেপণ না করে আরেক পুলিশ বলে, আজকাল রাস্তাঘাটে মেয়েরা যেভাবে বের হয়! আমার তো মনে হয়, বাসায় সবাই জন্মদিনের পোশাকেই থাকে! (হে হে হে)
হতভম্ব শাহেদ কিছু বলার আগেই পুলিশ বলে, প্যান্ট পরেন। থানায় যেতে হবে।
শাহেদ দু-এক কথা বলতে চেষ্টা করে...একপর্যায়ে পুলিশ চড়া সুরে বলে, কোনো কথা নাই, এখনই আপনাকে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে। চলেন!
বাড়িওয়ালার ছোট ভাই বলে, ভাই যান। এত তক্কের কী আছে! কারণ আছে বলেই তো পুলিশ ডাকতাছে। যান, থানা গিয়ে ফয়সালা করেন।
প্যাকেটে ওই দম্পতির কিছু অন্তরঙ্গ রঙিন ছবির প্রিন্ট ছিল। আর ছিল কিছু ছায়াচিত্র—যার কোনোটিতে ছায়ামূর্তির হাঁটার ভঙ্গি, কোনোটিতে জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে, বসে বা বিছানায় শুয়ে থাকার আকৃতি। সঙ্গে একটি ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস দেওয়া ছিল।আজিমপুরের গোর-ই-শহিদ মাজার থেকে একটু ভেতরের এই পাঁচতলার ছাদের চিলেকোঠা থেকে নামতে নামতে শাহেদের কয়েক দিন আগের একটি খবরের কথা মনে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই খবরটি ছিল এমন: সকালে অফিসে যাওয়ার পথে বনানীতে এক দম্পতির গাড়ির গতি রোধ করে দুই যুবক একটি প্যাকেট ছুড়ে দিয়ে মুহূর্তে ছিটকে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় তারা প্রথমে কিছুটা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। গাড়ি স্লো করে। তবে দ্রুত স্নায়ুচাপ সামলে নিয়ে ছেলেটি গাড়ি না থামিয়ে চালাতে থাকে। মেয়েটি প্রাথমিক দ্বিধার পর বরকে মাস্ক পরতে বলে, নিজেও মাস্ক পরে টিস্যু পেঁচিয়ে ধরে প্যাকেটটি খোলে। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে ওঠে, ‘What the f—?! Stop the f—ing car!’
প্যাকেটে ওই দম্পতির কিছু অন্তরঙ্গ রঙিন ছবির প্রিন্ট ছিল। আর ছিল কিছু ছায়াচিত্র—যার কোনোটিতে ছায়ামূর্তির হাঁটার ভঙ্গি, কোনোটিতে জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে, বসে বা বিছানায় শুয়ে থাকার আকৃতি। সঙ্গে একটি ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস দেওয়া ছিল। সেটিতে ঢুকতেই তারা একই ধরনের আরও অনেকগুলো সিলুয়েট দেখতে পেল। কয়েকটি ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপও ছিল, যাতে একক ও দ্বৈত ছায়ামূর্তির নানা ভঙ্গির নড়াচড়া দেখা গেছে। আসবাবের অবয়ব ও সাজিয়ে রাখার ধরনের সঙ্গে নিজেদের শোবারঘরের সাদৃশ্য দেখে তারা দুজনে চোখে শর্ষে ফুল দেখতে শুরু করে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও কোয়ান্টাম সেন্সরের অগ্রগতি হলে আবদ্ধ ঘরের অভ্যন্তরের বা মাটির গভীরের সুড়ঙ্গের স্পষ্ট ছবিও বাইরে থেকে অনায়াসে ধারণ করা যাবে।কয়েক দিন আগে ফেসবুকে একজন লিখেছে, টেলিগ্রামে বিভিন্নজনের কাছে লিংকের সঙ্গে একটি এসএমএস এসেছে। বলা হয়েছে: ‘এই লিংকে আপনার ছবি দেখা গেছে।’ কিন্তু বেশির ভাগই লিংকে ঢুকতে পারেননি। যাঁরা ঢুকতে পেরেছেন, তাঁদের মোবাইল হ্যাকড হয়েছে, কিংবা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ছাগলনাইয়া, খুরুশকুল, সালথাসহ দেশের আরও অনেক জায়গা থেকে একই ধরনের খবর শোনা গেছে। অনেকের ফেসবুক, মোবাইল, টেলিগ্রাম, ই-মেইল বা লিংকডইনেও এ ধরনের লিংক এসেছে। বেশির ভাগ লিংকে ঢোকা যায়নি। যাঁরা ঢুকতে পেরেছেন, তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, লিংকে যেসব ছায়ামূর্তি বা ভৌতিক ছবি ও ভিডিও তাঁরা দেখেছেন, সেগুলো তাঁদের নিজেদের ঘরের মতো মনে হয়েছে।
দরজা-জানালা আবদ্ধ বা পর্দা ঝোলানো ঘরের ভেতরের এসব ইমেজ ও ভিডিও কী উপায়ে ধারণ করা হচ্ছে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে—তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন। এসব ছায়ামূর্তি কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি, নাকি আসল?
এসব প্রশ্ন নিয়ে শাহেদ অনেক ভেবেছে। খোঁজখবর নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরজা-জানালা বন্ধ অন্ধকার ঘরের এসব তাপচিত্র বা রে-মূর্তি ভুয়া হতে হবে—এমন কোনো কথা নেই। ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও কোয়ান্টাম সেন্সরের অগ্রগতি হলে আবদ্ধ ঘরের অভ্যন্তরের বা মাটির গভীরের সুড়ঙ্গের স্পষ্ট ছবিও বাইরে থেকে অনায়াসে ধারণ করা যাবে। তখন এসব ‘অতিব্যক্তিগত’ পরিসরের ভিডিও আরও সহজলভ্য হবে হয়তো।
এসব সাতপাঁচের ঘোরে মোবাইলের অ্যালার্মে শাহেদের ঘুম ভাঙে। সে হাত বাড়িয়ে অ্যালার্ম বন্ধ করে পাশ ফিরে আবার অঘোর ঘুমে তলিয়ে যায়...