নিজের বেতন বাড়িয়ে দ্বিগুণ করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে
Published: 4th, July 2025 GMT
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা তলানিতে। অজনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও দিনা বলুয়ার্তে তাঁর বেতন বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে নিয়েছেন। পেরুর প্রধান হিসেবে ৬৩ বছর বয়সী দিনার এখন মাসিক বেতন হবে প্রায় ১২ লাখ টাকা (১০ হাজার মার্কিন ডলার)। পেরুর সরকার গত বুধবার দিনার এ নতুন বেতন নির্ধারণ করেছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে আর এক বছর মেয়াদ রয়েছে দিনা বলুয়ার্তের। ঠিক এ সময় নিজের বেতন বাড়িয়ে নেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে দেশটিতে সমালোচনা চলছে।
পেরুতে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের অপরাধের ঘটনা বেড়েছে ও গ্যাং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এসব সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন দিনা। এ নিয়ে দিনা বলুয়ার্তের বিরুদ্ধে দেশটিতে বিক্ষোভ হচ্ছে। দিনার বেতন বাড়ানো নিয়ে আগে থেকেই সমালোচনা চলছিল। এ পরিস্থিতিতে তা আরও বেড়েছে। গত মে মাসে বলুয়ার্তের দপ্তর বেতন বাড়ানোর খবর অস্বীকার করে বিবৃতি দেয়। কিন্তু দুই মাসের মাথায় প্রেসিডেন্টের বেতন দ্বিগুণ করা হলো।
অর্থমন্ত্রী রাউল পেরেজ-রেয়েস জানান, নতুন বেতনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের বেতনের সঙ্গে তুলনা করার পর। এই পরিবর্তনের আগে, দিনা বলুয়ার্তের বেতন ছিল ১১তম অবস্থানে, শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি।
মে মাসে যখন বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা মাত্র ২ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল, তখন এই ঘোষণা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি পেরুর জনগণ। অর্থনীতিবিদ হোর্হে গনসালেস ইসকিয়ের্দো এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, এখন বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার সবচেয়ে খারাপ সময়, কারণ তাঁর জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
সাবেক অর্থমন্ত্রী লুইস মিগুয়েল কাস্তিয়া বলেন, এ ঘোষণা প্রেসিডেন্টকে ঘিরে অসারতার ধারণাকে আরও শক্তিশালী করে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে বলুয়ার্তে ক্ষমতায় আসার সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তাঁর পুরো শাসনামলজুড়ে তা অব্যাহত আছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একের পর এক কেলেঙ্কারি, তদন্ত, বিতর্ক এবং গ্যাং সহিংসতা।
দিনা বলুয়ার্তে এখন অন্তত ১২টি ঘটনায় তদন্তের মুখোমুখি, যার মধ্যে একটি হলো বিলাসবহুল গয়না ও ঘড়ির উপহার ঘোষণায় ব্যর্থতার অভিযোগ, যা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া কেলেঙ্কারির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোলেক্সগেট’।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল য় র ত র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সুপারিশ ঐক্যকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে: রাষ্ট্র সংস্কার
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট ঐক্যকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাই সংকট এড়াতে কমিশনকে দ্রুত সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশগুলো নিয়ে আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন রাষ্ট্র সংস্কারের নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা সংস্কার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে আলাপ-আলোচনার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। ঐকমত্য কমিশন যে ঐক্যকে সামনে রেখে প্রায় এক বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে, বাস্তবায়নের সুপারিশ সেই ঐক্যকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে।
চ্যালেঞ্জের মূল কারণ হিসেবে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেটুকু আলোচনা করেছিল, সেখানে এ প্রস্তাবে উল্লেখিত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর পর যদি এ প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করা হতো, তাহলে চ্যালেঞ্জ পরিহার করা যেত।
এতে আরও বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের মাধ্যমে পরবর্তী সংসদকে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় গঠনগত ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল। কিন্তু যেসব প্রস্তাবে কিছু দল আপত্তি জানিয়েছিল, সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় সংস্কার প্রস্তাবে লিপিবদ্ধ আপত্তির বিষয়গুলোকে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ থেকে মুছে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, দ্রুত ওই সুপারিশ থেকে বের হয়ে না এলে রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশের ভেতরের যৌক্তিক ক্ষোভ পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের ভেতর ছড়িয়ে পড়বে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের মানুষ যখন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশের প্রতি অন্যায় আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। দেশের মানুষকে স্বৈরাচারী সরকারের চেয়ে উন্নত জীবন উপহার দেওয়ার সুযোগ হারিয়ে যাবে।
সংকট এড়াতে ঐকমত্য কমিশনকে দ্রুত তাদের সুপারিশগুলো নিয়ে পুনরায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলেছে, সংবিধান টেকসই ও সর্বজনীন করতে তাড়াহুড়ো থেকে বিরত থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোই সংবিধান সংস্কারের একমাত্র পথ। ঐকমত্য কমিশন সঠিক বিবেচনাবোধকে গুরুত্ব দিয়ে দেশকে সংকট থেকে মুক্ত রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।