গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশের এসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

মারা যাওয়া যুবকের নাম সিজু মিয়া বলে দাবি করেছে পুলিশ। তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের দুলাল মিয়ার ছেলে।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় ৪ জনের পাশাপাশি দাফন

গোপালগঞ্জে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে থানার ভেতরে ঢুকে ডিউটিতে থাকা কনস্টেবল সেরাজুল ইসলামের কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই যুবক। বাধা দিতে গেলে এসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করেন তিনি। পরে দৌঁড়ে থানার পাশের বিদ্যালয়ের পুকুরে ঝাঁপ দেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। 

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা রাতভর খোঁজাখুঁজি করলেও হামলাকারী যুবকের সন্ধান পায়নি। রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল আজ সকালে পুকুরের কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

সাঘাটা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ রতন চন্দ্র শর্মা বলেন, “রাতে খবর পাওয়ার পর আমরা হামলাকারী যুবককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। আমাদের ডুবুরি দল না থাকায় রাতে উদ্ধার অভিযান চালাতে পারিনি। আজ সকাল ৮টার দিকে রংপুর থেকে চারজনের একটি ডুবুরি দল এসে পুকুরের কচুরিপানার ভেতর থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে।”

সাঘাটা থানার এসআই মশিউর রহমান বলেন, “কী কারণে ওই যুবক এমন আত্মঘাতী কাজ করলেন, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তার পড়নের পকেট থেকে উদ্ধার করা গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি প্রবেশপত্র থেকে পরিচয় জানা গেছে। তার নাম সিজু মিয়া। তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের দুলাল মিয়ার ছেলে। যুবকের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।” 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, “গতকাল রাতে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী শার্ট-প্যান্ট পরিহিত দাঁড়িওয়ালা এক যুবক থানার ভেতরে ঘোরাফেরা করছিলেন। হঠাৎ তিনি কনস্টেবল সেরাজুল ইসলামের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বাঁধা দিতে গেলে এসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পুকুরে ঝাঁপ দেন। আজ তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।” 

ঢাকা/মাসুম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ উদ ধ র ছ র ক ঘ ত কর ন র ভ তর য বক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। 

গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন। 

আরো পড়ুন:

মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত

উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়। 

নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন। 

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এসআইদের প্রতি ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান
  • রাজশাহীতে যুবদল–ছাত্রদলের চাঁদাবাজির মামলার এজাহার ফাঁস, এসআইকে বদলি
  • রূপগঞ্জে দাফনের এক বছর পর যুবকের মরদেহ উত্তোলন
  • কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার