কয়েকজন ব্যক্তিকে বিদেশ থেকে ভাড়া করে এনে দেশ চালানো যায় না: মির্জা ফখরুল
Published: 26th, July 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করে দেবে—এমনটা ভাবার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মতে, কয়েকজন ব্যক্তিকে বিদেশ থেকে ভাড়া করে এনে দেশ চালানো যায় না।
আজ শনিবার সকালে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘জুলাই বিপ্লব: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেকেই মনে করছেন, কয়েকজন লোক, সংস্কার যাঁরা করছেন; তাঁরা কতগুলো বৈঠক করে, সংস্কার করে জনগণকে এগিয়ে দিলেন, আর সংস্কার হয়ে গেল? এভাবে সংস্কার হয় না। সংস্কার হতে হবে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
আরও পড়ুনআগে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ টাকা, এখন দিতে হয় ৫ লাখ: মির্জা ফখরুল১ ঘণ্টা আগেসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি চাইলেন আর কালকেই পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। স্ট্রাকচারটা (কাঠামো) তৈরি করতে হবে এমনভাবে, যাতে করে সে ঘুষ না খায়। একইভাবে আমাদের যেই আমলাতন্ত্র, এটা আমাদের উন্নয়নের পথে একটা বড় বাধা। এটা নেগেটিভ ব্যুরোক্রেসি (অদক্ষ আমলাতন্ত্র)। নেগেটিভ ব্যুরোক্রেসিকে এখন পজিটিভ ব্যুরোক্রেসি করতে হলে যা যা করা দরকার, অর্থাৎ মূল কাজ হচ্ছে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। সেই বিষয়গুলো করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তিকে বিদেশ থেকে ভাড়া করে এনে কি দেশ চালানো যায়? যায় না। এই সহজ-সরল কথাটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’
পিআর বা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনপদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন রকম কথা বলতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। খুব জোর গলায় বলছে, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। আনুপাতিক হারের নির্বাচনটা কী, তা সাধারণ মানুষ বোঝেই না। আনুপাতিকটা কী জিনিস, সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন, বলতে পারবেন না।
আরও পড়ুনরাজনীতিতে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান দেখছি, আমি উদ্বিগ্ন৬ ঘণ্টা আগেপত্র-পত্রিকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সবার আগে সততা দরকার। সততা ছাড়া বিএনপি কিন্তু জনগণের কাছে দাঁড়াতে পারবে না। আজকাল পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন রকম খবর আসে। এই খবরগুলো বিএনপির সঙ্গে যায় না, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যায় না। তাই অবশ্যই যাঁরা বিএনপি করবেন, জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করবেন, তাঁদের সবাইকে সৎ হতে হবে।
আরও পড়ুনঅতি দ্রুত নির্বাচনই উত্তরণের পথ: মির্জা ফখরুল২৩ জুলাই ২০২৫আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, জামায়াত নেতারা দেশের আনাচকানাচে বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে কারও বিরুদ্ধে কুৎসা নয়, সহনশীল আচরণের মাধ্যমে জনগণকে মুগ্ধ করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জিয়া পরিষদের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার, মহাসচিব এমতাজ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আবদুল্লাহিল মাসুদ, যুগ্ম মহাসচিব আলীমুজ্জামান, মনোয়ার ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, নাজির আহমেদ, শহীদুল হক, শরীফুজ্জামান খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন১৯৭১ আমাদের মূলকথা, ওখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই - মির্জা ফখরুল১৯ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম আম দ র ফখর ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব