চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল আসামিকে। পুলিশের পাহারায় ছিলেন প্রিজন সেলে। কিন্তু সেই সেল থেকেই পালিয়ে যান মাদক মামলার আসামি ইউসুফ (২৩)। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

ইউসুফ নগরের খালিশপুর থানার আলমনগর মোড় এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে আলমনগর মোড় থেকে ২০টি ইয়াবাসহ ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে খালিশপুর থানার পুলিশ। রাতেই তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। পরে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে পুলিশ তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁর কোনো রোগ শনাক্ত করতে পারেননি। তিনি একেক সময় একেক রকম উপসর্গের কথা বলছিলেন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে পর্যবেক্ষণের জন্য মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে সেখান থেকে তাঁকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে স্থানান্তর করা হয়।

খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো.

আবু তারেক প্রথম আলোকে বলেন, প্রিজন সেলের বাইরের প্রধান ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন কারারক্ষীরা, আর ভেতরের দায়িত্ব পুলিশের। ওই রাতে সেলে দুজন আসামি ছিলেন। তাঁদের একজন ছিলেন বয়স্ক ব্যক্তি। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি বাথরুমে যাওয়ার কথা জানান। দায়িত্বরত কনস্টেবল প্রিজন সেলের দরজার তালা খুলে তাঁকে বাথরুমে নিয়ে যান। এ সময় তালাটি বন্ধ করতে ভুলে যান। ওই সুযোগে সেলে থাকা অন্য আসামি ইউসুফ পালিয়ে যান। পরে দেখা যায়, বাইরের প্রধান ফটকের তালাও খোলা ছিল। এতে পুলিশের পাশাপাশি কারারক্ষীদেরও গাফিলতি রয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলাতক ওই ব্যক্তি আমাদের হেফাজতে ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি না, তা–ও আমরা জানতাম না। আমাদের হেফাজতে থাকলে তাঁকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে নেওয়া হতো। সাধারণত প্রিজন সেলে থাকা আসামিদের দেখভালের দায়িত্ব পুলিশের। তবে সেখানে আমাদের লোকজনও থাকেন। আমাদের লোকের কোনো গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র জন স ল আম দ র ইউস ফ

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই-নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সে নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই হতে হবে। ফেব্রুয়ারির পর নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না।”

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংহতি বিপ্লব’ শীর্ষক শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে অবিস্মরণীয় দিন: ফখরুল

উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারেক রহমান। সেই সংস্কারের কাজ এই অন্তর্বর্তী সরকার শুরু করলে আমরা তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি। প্রায় এক বছর এই সড়ক তৈরির কাজ করেছেন তারা। গত ১৭ অক্টোবর সব দল একমত হয়েছে-যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোতে আমরা স্বাক্ষর করেছি।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আমরা যেগুলো গ্রহণ করিনি, কনফারেন্স করে তা বলেছি। পরবর্তীতে আমরা দেখলাম, হঠাৎ করেই উপদেষ্টা কাউন্সিলের একজন সদস্য প্রেস কনফারেন্স করে বললেন যে তাদের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে-রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে, যাতে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাহলে এতদিন ধরে যে ঐক্যবদ্ধ কমিশনে বসে সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে কাজ করেছেন, সেখানে আমাদের প্রতিনিধি ছিল, সব দলের প্রতিনিধি ছিল- তাহলে এটা কেমন হলো? অসংখ্য টাকা খরচ করে কাজটি করলেন, সেটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমস্যা সমাধান হলো না।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল জোট গড়ে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে নির্বাচনের আগেই গণভোট হতে হবে। আমরা বলেছি-গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। কারণ, দুটি ভোট করতে গেলে অনেক টাকা খরচ হবে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যাবে। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্তর্বর্তী সরকার, যাদের আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি, তারাই এমন ব্যবস্থা নিচ্ছে, যাতে নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। তাই আসুন- আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যাই এবং আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত করি।”

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ