বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেছেন, ইতিহাস বিকৃতি এবং একচোখা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রকে অপ্রাসঙ্গিক করে তোলা হয়েছে। এটি প্রণয়নে সিপিবির সঙ্গে কথা বলা হয়নি। এর দায় সিপিবি নেবে না।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহিন হোসেন এ কথা বলেন। সিপিবির পল্টন থানার সম্মেলন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে রুহিন হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থ উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার আলোচনা, সনদ কিংবা ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন দূরে থাক, গ্রহণযোগ্যও হবে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস, হত্যা, দখলদারি ও চাঁদাবাজি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ ব্যর্থতার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।

রুহিন হোসেন বলেন, সংস্কারের নামে অনেক আলোচনা হচ্ছে। তবে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম, সবার কর্মসংস্থান ও জনগণের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না।

নির্বাচনের যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিপিবির এই নেতা বলেন, নির্বাচন পেছানোর কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি গণবিরোধী ও এখতিয়ারবহির্ভূত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সিপিবির পল্টন থানার সভাপতি কার্ত্তিক চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও মঞ্জুর মঈনের সঞ্চলনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সদস্য শংকর আচার্য্য, ত্রিদিব সাহা, মুর্শিকুল ইসলাম ও পল্টন শাখার সম্পাদক রফিজুল ইসলাম।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ: অংশগ্রহণভিত্তিক ও গ্রহণযোগ্য নির

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে করেছে নাগরিক সংগঠন গণঅধিকার পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল। 

বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে শুরু হওয়া বৈঠকে সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন। 

আরো পড়ুন:

নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে তারা অংশগ্রহণভিত্তিক, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

বৈঠকের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, “নির্বাচনী ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার না হলে জনগণের আস্থা ফিরবে না, ইসির সঙ্গে আমাদের মূল দাবি ছিল, সেই আস্থাই পুনরুদ্ধার করা। এছাড়া রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংশ্লিষ্ট উদ্বেগগুলো শুনে তা প্রয়োজনে আইন বা প্রথাগত পদ্ধতিতে প্রতিফলিত করা জরুরি।”

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে যে বৈঠকে আগামি নির্বাচন, গণভোট-সংক্রান্ত বিষয়, এবং নির্বাচন রুলস (আরপিও) সংশোধনসহ নির্বাচনী পরিবেশ নির্মাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়। কমিশন প্রাণকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষও বর্তমান প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রতিনিধি দলের নিকট তথ্য উপস্থাপন করে।

কর্মকর্তারা বৈঠকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ যে পদক্ষেপ নেবে তার খসড়া তুলে ধরেন। 

বৈঠকের প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য, আগে থেকেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একাধিকবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।

ইসি জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ চলবে এবং নভেম্বর মাসে আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

নির্বাচন ভবনের আশপাশে বৈঠকের সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা যায়। তবে ফটক এলাকা ও কার্যক্রমে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ ও দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে এমন সংলাপ বানানো স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনী পরিবেশের ওপর ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে সহায়ক হলেও বাস্তবে তা কী পরিমাণে ফলাফল দেয়—সেই বিষয়টি বিদেশি ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের নজরে থাকবে। 

গণঅধিকার পরিষদ ও নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের বৈঠকগুলোকে অনেকে স্বাগত জানালেও দাবি রয়েছে- এসব সংলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতা না রেখে প্রতিশ্রুত বাস্তব পরিবর্তনে রূপান্তরিত হবে কি না, তা  সময়ই বলে দেবে বলে জানান নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ: অংশগ্রহণভিত্তিক ও গ্রহণযোগ্য নির
  • ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ থাকায় জুলাই সনদ অনুষ্ঠান বর্জন ছাত্র সংসদ নেতাদের
  • দুটো ব্যালটে গণভোট আর নির্বাচন একই দিনে হবে: আমীর খসরু
  • নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে