গাজীপুর মহানগরীর চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এনিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো সাতজনে। 

শনিবার (৯ আগস্ট) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার রবিউল হাসান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো.

সুমন ও শাহজালাল। তাদের মধ্যে শাহজালালকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে এবং সুমনকে বাসন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন:

সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ৫

বাড়ির পাশের কবরস্থানে সাংবাদিক তুহিনের দাফন সম্পন্ন

এর আগে, মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন, মো. স্বাধীন ও ফয়সাল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন থাকতেন মহাগরীর চৌরাস্তা এলাকায়। পূর্ব শত্রুতার জেরে পাঁচ-ছয়জন সন্ত্রাসী গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তাকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। এ সময় তিনি দৌঁড়ে ঈদগাঁ মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেন। সন্ত্রাসীরা তাকে দোকানের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার পর পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়। ফুটেজে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দেখা যায়। পরে পুলিশ রাতেই মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।  

গতকাল শুক্রবার সকালে ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সেলিম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকেই তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তিনটি টিম ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় অভিযানে নামে। 

উপ-পুলিশ কমিশনার রবিউল হাসান বলেন, “সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় গাজীপুরের সদর উপজেলার ভবানীপুর থেকে ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপী ও সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর উত্তরার তুরাগ এলাকা থেকে আল আমিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গাজীপুরের সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকা থেকে স্বাধীন নামে অপর আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।”

তিনি আরো বলেন, “আরেক আসামি শাহজালালকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুমন ও ফয়সালকে বাসন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” 

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “তারা প্রত্যেকেই সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঠিক কী কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে তার সঠিক তথ্য বের করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হবে।” 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম গ র প ত র কর ন এল ক হত য র

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।

আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগে

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।

খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’

এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।

আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহে তিন দশকের পঞ্চদুর্গাপূজা
  • ময়মনসিংহে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২
  • এ বছর ডেঙ্গুতে ২০০ জনের মৃত্যু
  • ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
  • ‘আল্লাহ তুই দেহিস’: জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় এক আসামি গ্রেপ্তার