চাদে সহিংসতা উসকে দেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ২০ বছরের কারাদণ্ড
Published: 10th, August 2025 GMT
আফ্রিকার দেশ চাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী নেতা সুচেস মার্সাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশে বর্ণবাদী এবং অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি বিদ্বেষমূলক বার্তা প্রচারের জন্য তাঁকে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত।
বাদীর আইনজীবী কাদজিলেমবে ফ্রান্সিস গতকাল শনিবার রাজধানী এনজামিনায় আদালত থেকে সাংবাদিকদের বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন মার্সা।
তাঁর মক্কেলের সুনাম ক্ষুণ্ন করা এবং অকারণে অপমান করার জন্য এমনটা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন ফ্রান্সিস।
চাদে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সুচেস মার্সা। তিনি দেশটির সংস্কারপন্থী ট্রান্সফরমার্স পার্টির প্রধান। সেই সঙ্গে মার্সা দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাহামাত ডেবির কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লোগোন অক্সিডেন্টালে পশুপালক ও কৃষকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরে মার্সাসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাঁরা বেশির ভাগ একই নাগামবায়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ওই ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও আরও ৬ জন আহত হয়েছিলেন।
মার্সা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এর মধ্যে ঘৃণামূলক বক্তব্য, অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ ও হত্যাযজ্ঞে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
গতকাল আদালত ছেড়ে যাওয়ার আগে নিজের সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় মার্সা তাঁদের ‘মনোবল শক্ত রাখতে’ বলেছেন। দিনের শেষে সমর্থকদের ‘বিশেষ বার্তা’ দেওয়ার কথা তাঁর।
২০২২ সালে তাঁর অনুসারীদের ওপর রক্তক্ষয়ী দমন–পীড়নের পর মার্সা দেশ ছেড়েছিলেন। গত বছর সাধারণ ক্ষমার নিশ্চয়তা পেয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
একই বছর মাহামাত ডেবির বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামেন মার্সা। নির্বাচনে ৬১ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন ডেবি।
জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ভোটের ফল প্রত্যাখান করেন মার্সা। যদিও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ডেবির সঙ্গে পুনর্মিলন চুক্তি করেন মার্সা। এর আওতায় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছিলেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে ভিডিওতে ‘জয় বাংলা, আমি শেখ হাসিনার লোক’, কিশোর গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন মন্তব্য করায় এক কিশোরকে (১৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি ওই কিশোরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল শনিবার রাতে কুলাউড়া পৌর শহরের ভাঙারিপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার কিশোর স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা একটি সাজসজ্জা প্রতিষ্ঠানের কর্মী; মা বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। ভাঙারিপট্টি এলাকায় তাঁরা ভাড়া থাকেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়।
ছড়িয়ে পড়া ৪৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ওই কিশোর একটি কক্ষে চেয়ারে বসে আছে। সামনে টেবিল রাখা। পেছনের দেয়ালে বিএনপি নেতা প্রয়াত এম সাইফুর রহমানের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার টানানো। ভিডিওতে সে বলে, ‘একমাত্র শেখ হাসিনা ছিলেন বাংলাদেশের একজন গর্বিত নারী। ইনশা আল্লাহ তিনি একদিন না একদিন ফিরে আসবেন। ইনশা আল্লাহ আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে। জয় বাংলা, জয় বাংলা। আমি শেখ হাসিনার লোক। গর্ব করে বলতে পারি আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। ইনশা আল্লাহ আবার দেখা হবে রাজপথে, ধন্যবাদ।’
পুলিশ জানায়, ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ায় গতকাল রাত ১০টার দিকে বাসায় অভিযান চালিয়ে ওই স্কুলছাত্রকে আটক করা হয়। পরে ২০২৪ সালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে কুলাউড়া থানায় করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার প্রতিবেদনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিস্টের পক্ষে ওই স্কুলছাত্র সক্রিয় ছিল এবং তার বয়স ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়েছিল।
কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর না বুঝে এ কাজ করেছে বলে দাবি করেছে। তার মা যে বাসায় কাজ করেন ওই বাসার মালিকের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে।