খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার মধ্যে থাকা ‘খুলনা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার’ দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ নামে আবাসিক হলের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে আজ রোববার দুপুরে খামার কার্যালয়ের নামফলকের ওপর নতুন ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের সামনে যান। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যেতে বলেন। কর্মকর্তারা বের হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা মূল ভবনের সামনে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা ২টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের রাকিবুল হক বলেন, ‘প্রশাসনসহ সবার জানা দরকার আমরা হঠাৎ করেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। বছরের পর বছর আমরা এই দাবি উত্থাপন করে আসছি। এই দাবির যৌক্তিকতা খুলনার স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, সংশ্লিষ্ট সচিবসহ প্রত্যেককে চাক্ষুষ দেখানো হয়েছে। তারা আমাদের দাবিকে অযৌক্তিক বলতে পারে নাই। এই মৎস্য বীজ উৎপাদনকেন্দ্র একটি অর্ধ পরিত্যক্ত স্থাপনা। এখানে ১০টা পুকুর, একটা পরিত্যক্ত গলদা চিংড়ির হ্যাচারি, একটি চারতলা ভবন ও কর্মকর্তাদের বাসভবন আছে। এটা তৈরি হয়েছিল পাশের ময়ূর নদীর জোয়ার ভাটা এবং এ সংক্রান্ত মাছের পোনা উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করার জন্য। ময়ূর নদী দীর্ঘদিন নাব্য হারিয়েছে, জোয়ার ভাটার প্রভাব নেই। তাই এই খামার মৎস্য গবেষণার জন্য তেমন ভূমিকা রাখতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন মাত্র এক পঞ্চমাংশ। দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এতটা করুণ নয়। তাই এই মৎস্য ভবন আমাদের কোনো দাবি নয়, আমাদের অধিকার। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার পর আমরা নিজেরাই এই অধিকার আদায় করছি এবং আদায় করেই ছাড়ব।’

জানতে চাইলে খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.

বদরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এসে খামারে আমাদের নামফলক সরিয়ে ফেলেছেন। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি। ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

গল্লামারী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে শহীদ মীর মুগ্ধ হলের নাম দিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গল্লামারী, খুলনা, ১০ আগস্ট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জকসু নির্বাচন চায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে করার দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা বলেন, বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহুল প্রতীক্ষিত জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে একধরনের উত্তেজনা ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তফসিলে নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অনেকাংশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা অভিযোগ করেন, জকসু নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। ডিসেম্বর বছরের শেষ মাস। এ সময় শিক্ষার্থীরা সারা বছরের একাডেমিক চাপ শেষে ছুটি কাটাতে বাড়ি যায়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এ সময় ক্যাম্পাসে থাকে না। নির্বাচনের জন্য এমন সময় নির্ধারণের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে ভোটারদের অংশগ্রহণ সীমিত করা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা আরও বলেন, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করতে পারে। এমন সময়ে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীভ বলেন, ‘একটি সুস্থ ও সর্বোচ্চ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে থাকবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা সংকটে জর্জরিত এই ক্যাম্পাসের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রাখে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ