চ্যাটজিপিটির জিপিটি ৫ মডেল কতটা উন্নত, নতুন কী সুবিধা পাওয়া যাবে
Published: 10th, August 2025 GMT
নিজেদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’র জন্য তৈরি নতুন ‘জিপিটি ৫’ মডেল আগের সব সংস্করণের তুলনায় শক্তিশালী, বুদ্ধিমান ও নিরাপদ বলে জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। শুধু তা–ই নয়, নতুন মডেলটি পিএইচডি স্তরের সমান দক্ষ বলেও দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান নতুন মডেলটিকে চ্যাটজিপিটির নতুন যুগের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর ভাষ্যে, নতুন মডেলটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় আরও স্মার্ট, দ্রুত ও কার্যকর।
জিপিটি ৫ মডেল এরই মধ্যে প্রযুক্তিবিশ্বে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিপিটি ৫ মডেলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো ভুয়া তথ্য শনাক্তকরণের দক্ষতা। ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আগের মডেলগুলোর তুলনায় যোগাযোগের সক্ষমতাও বেশি রয়েছে মডেলটির। ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, চ্যাটজিপিটি ৫ তিনটি সংস্করণে ব্যবহার করা যাবে। জিপিটি ৫, জিপিটি ৫ মিনি ও জিপিটি ৫ ন্যানো। ব্যবহারকারীরা জিপিটি ৫ ও মিনি সংস্করণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে জিপিটি ৫ প্রো সংস্করণের জন্য মাসে ২০০ ডলার খরচ করতে হবে। নতুন মডেলটি ওপেনএআইয়ের সব সেবায় একীভূত করা হয়েছে। ফলে যুক্তি বিশ্লেষণ, ছবি তৈরি, ওয়েব ব্রাউজ বা ভয়েস মোডসহ সব কাজেই মডেলটি কাজ করবে।
আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনের তথ্য ফাঁস, দেখা যাচ্ছে অনলাইনে০৩ আগস্ট ২০২৫ওপেনএআইয়ের দাবি, জিপিটি ৫ মডেলের মাধ্যমে কোডিং ও লেখার সময় পিএইচডি স্তরের দক্ষতা দেখা যাবে। এরই মধ্যে কোডিংয়ের ক্ষেত্রে জিপিটি ৫ আগের সব মডেলের তুলনায় ভালো ফল করেছে। শুধু তা–ই নয়, যুক্তি বিশ্লেষণ ও ত্রুটি সমাধানেও দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এ ছাড়া টেক্সট প্রম্পট দিয়ে এক মিনিটের মধ্যে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ অ্যাপ তৈরি করতে পারে জিপিটি ৫।
আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটিকে যে কাজে ব্যবহার করলে তথ্যের গোপনীয়তা না–ও থাকতে পারে২৮ জুলাই ২০২৫আগের জিপিটি সংস্করণগুলোয় ভুল তথ্য তৈরির (হ্যালুসিনেশন) প্রবণতা নিয়ে সমালোচনা ছিল। ওপেনএআই দাবি করছে, জিপিটি ৫ মডেলে এই সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। নতুন মডেলের ত্রুটির হার ‘ওথ্রি’ সংস্করণের তুলনায় ৬৫ শতাংশ এবং জিপিটি ৪ও–এর তুলনায় ২৬ শতাংশ কম। পাঁচ হাজার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাইরের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা চালিয়ে এর নির্ভরযোগ্যতা ও স্থায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কোনো বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা না থাকলে অযৌক্তিক কোনো উত্তর দেবে না জিপিটি ৫।
আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটির তথ্য সংগ্রহ বন্ধ করবেন যেভাবে২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪এরই মধ্যে নিজেদের বিভিন্ন সেবায় জিপিটি ৫ মডেল যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। গুগলের বিভিন্ন সেবাও কয়েক দিনের মধ্যে নতুন মডেল সমর্থন করবে। জিপিটি ৫ প্রো সংস্করণেই জিমেইল, গুগল সার্চ, ক্যালেন্ডারসহ অন্যান্য সেবা সরাসরি ব্যবহার করা যাবে। ওপেনএআই জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এই সুবিধা অন্যান্য সংস্করণেও উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র: নিউজ১৮, বিবিসি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স স করণ করণ র
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।
আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স