পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির সরকারি সফরে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। সেখানে তিনি দেশটির উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি তিনি প্রবাসী পাকিস্তানিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন। আজ রোববার পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব খবর জানানো হয়।

গত জুনে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন আসিম মুনির। সে সময় তিনি হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিদেশি কোনো সেনাপ্রধানের সঙ্গে মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টের এটাই প্রথম সরাসরি বৈঠক।

গত জুনের সফরে আসিম মুনির বলেছিলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে আরও বিস্তৃত ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিপুল সম্ভাবনা’।

পাকিস্তান আইএসপিআরের আজকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ট্যাম্পায় সেনাপ্রধান সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) বিদায়ী কমান্ডার জেনারেল মাইকেল ই.

কুরিলার অবসরগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। একই সঙ্গে অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপারের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত কমান্ড পরিবর্তন অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।

সেন্ট্রাল কমান্ড হলো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর একটি প্রধান কমান্ড, যা মূলত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর-পশ্চিম এশিয়া ও কেন্দ্রীয় এশিয়ার দেশগুলোতে মার্কিন সামরিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কুরিলার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সামরিক সহযোগিতা জোরদারে তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে অ্যাডমিরাল কুপারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে যৌথ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গত জুনে জেনারেল কুরিলা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে ‘অসাধারণ অংশীদার’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তখন তিনি বেলুচিস্তানে সন্ত্রাস মোকাবিলা এবং ইসলামিক স্টেটসহ অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন০৭ আগস্ট ২০২৫

ফিল্ড মার্শাল মুনির তখন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক পেশাগত আগ্রহের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এ সময় মুনির জেনারেল কেইনকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

আইএসপিআর জানায়, সেনাপ্রধান বৈঠকের ফাঁকে মিত্রদেশগুলোর প্রতিরক্ষাপ্রধানদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন।

পাকিস্তানি প্রবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

প্রবাসীরা পাকিস্তানের অগ্রগতি ও উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র আস ম ম ন র অন ষ ঠ ন কর ছ ল ন কম ন ড

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত আবার হামলা চালালে তাদের একেবারে গভীরে হামলা চালাবে পাকিস্তান: মোদির হুমকির জবাবে আইএসপিআর প্রধান

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সাম্প্রতিক হুমকির তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। শুরুটা হবে ভারতের একদম গভীরে হামলার মধ্য দিয়ে।

যুক্তরাজ্যের সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ হঁশিয়ারি দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে’ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করা হয়। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন আইএসপিআরের পরিচালক।

ভারত আবার হামলা করলে পাকিস্তান কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতের বোঝা উচিত, পাকিস্তান তাদের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ভারতের আরও গভীরে হামলা করতে পারে পাকিস্তান। তিনি বলেন, ‘এবার আমরা ভারতের পূর্ব দিক থেকে হামলা শুরু করব। তাদের (ভারতকে) এটা বুঝতে হবে, তাদের যেকোনো স্থানে হামলা হতে পারে।’

সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে যেভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য ও অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই  হুঁশিয়ারি এল। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এটিকে সবচেয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত এপ্রিলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ২৬ নিহত হন। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এর জেরে মে মাসের শুরুতে পাকিস্তানে হামলা করে বসে ভারত। এরপর দুই দেশ চার দিনব্যাপী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানও জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ভারতে। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন বুনইয়ান–উন–মারসুস’। অভিযানে ভারতের একাধিক অঞ্চলে বিভিন্ন সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ৮৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শেষ হয়।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত আবার হামলা চালালে তাদের একেবারে গভীরে হামলা চালাবে পাকিস্তান: মোদির হুমকির জবাবে আইএসপিআর প্রধান