জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি
Published: 11th, August 2025 GMT
জুলাই ঘোষণাপত্রকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক প্রহসন উল্লেখ করে ঘোষণাপত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছেন গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ৬০ ছাত্রনেতা। তারা শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণকে অংশীদার করে নতুন ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানান ছাত্র নেতারা। এতে বলা হয়, হাজারো শহীদ এবং আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার কর্তৃত্ব চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চব্বিশের জুলাই ঊনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসনকে মেনে নেয়নি। আবার নব্বইয়ের মতো কেবল ব্যক্তি স্বৈরাচারীর অপসারণকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেনি বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙক্ষার মধ্য দিয়ে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে জাগ্রত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের আকাঙক্ষা অনুসারে নতুন কল্যাণমূলক, গণবান্ধব রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব পালনে অগ্রসর ভূমিকায় হাজির হয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যাদের ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
ছাত্রনেতারা বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগস্ট পুরোনো শোষণমূলক আমলাতন্ত্র, লুটেরা শক্তি ও পুরোনো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের সমর্থনে একটি প্রতারণামূলক ও অর্থহীন ডকুমেন্টকে জুলাই ঘোষণাপত্র নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা, জুলাই ঘোষণা ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানায়। পাশাপাশি শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন ও প্রকৃত ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন গণবান্ধব সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানায়।
এসব দাবি বাস্তবায়নে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা তথা পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, নারীসমাজ, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবীসহ ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হাজারো শহীদ ও আহত গাজী ভাই-বোনদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাদের অপরিসীম সাহস ও দেশপ্রেমকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে আমরা সত্যিকার গণবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম যেকোনো মূল্যে চলমান রাখবো।’
বিবৃতিতে সই করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরিফ সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ সালেহীন, মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রন ত র কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইকুয়েডরে গণভোটে ‘না’ এগিয়ে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটিতে সায় নেই মানুষের
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের জনগণ গণভোটে ‘না’ ভোট বেশি দিয়েছেন। দেশটির মাটিতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি পুনঃস্থাপনে জনগণের সম্মতি আছে কি না, সেটি যাচাই করতে এ গণভোটের আয়োজন করা হয়।
রোববার (১৬ নভেম্বর) ইকুয়েডরে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে এক–তৃতীয়াংশের বেশি গণনা শেষে দেখা গেছে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটি পুনঃস্থাপনের প্রশ্নে ৬০ শতাংশ ভোটার ‘না’ ভোট দিয়েছেন।
গতকালের গণভোটে ভোটারদের সামনে আরেকটি প্রস্তাব ছিল। সেটি হলো বিদ্যমান সংবিধানের পুনর্লিখন। এতেও ‘না’ ভোট এগিয়ে আছে। ৬১ শতাংশ ভোটার প্রস্তাবটি খারিজ করে দিতে ‘না’ ভোট দিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে এখনো ৩৬ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে।
২০০৮ সালে ইকুয়েডর নিজেদের সীমানায় বিদেশি সামরিক ঘাঁটি নিষিদ্ধ করেছিল।
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের ‘মান্তা’ বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর উপস্থিতি ফেরানোর পথ খুলে যেত। একসময় ওয়াশিংটনের মাদকবিরোধী অভিযানের মূলকেন্দ্র ছিল এ ঘাঁটি।
সম্ভাব্য এ পরাজয় ইকুয়েডরের তরুণ প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি দুটি প্রস্তাবের পক্ষেই শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট নোবোয়া বলেছিলেন, বিদেশি সহযোগিতা এবং দেশের মাটিতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটির উপস্থিতি ‘সংগঠিত অপরাধের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কেন্দ্রস্থল হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
সাবেক বামপন্থী প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়ার অধীন প্রণয়ন করা বর্তমান সংবিধানে দেশের নতুন বাস্তবতার কোনো প্রতিফলন নেই। তাই এটা সংশোধন ও পুনর্লিখন করা দরকার—বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট নোবোয়া।
কিন্তু ইকুয়েডরের জনগণ গণভোটে প্রেসিডেন্ট নোবোয়ার এমন অবস্থান খারিজ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। অন্তত এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল সেটিই বলছে।