নেই স্থায়ী ক্যাম্পাস, জীর্ণ ছাত্রাবাস, ধার করা শিক্ষকে চলে ক্লাস
Published: 11th, August 2025 GMT
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে ২০১৫ সালে। ১০ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস পাননি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পার্বত্যাঞ্চলের প্রথম ও একমাত্র মেডিকেল কলেজটির কার্যক্রম শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক ও আবাসন সমস্যা নিয়ে চলছে।
রাঙামাটি শহরের হাসপাতাল সড়ক এলাকায় ছয় তলা ভবনে চলছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। এই ভবনটি করা হয়েছিল রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) জন্য।
একাডেমিক ভবন ও ছাত্রাবাস—সবখানে সংকট আর সংকট। কলেজে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই। প্রয়োজনের তুলনায় শ্রেণিকক্ষের অভাব আছে। শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে অস্থায়ীভাবে। ছাত্রদের থাকার কক্ষগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। শিক্ষকদের তিন-চারজনকে একটি কক্ষে ভাগাভাগি করে বসতে হয়।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম চললেও সেখানে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। শ্রেণিকক্ষ আছে মাত্র ৫ টি। এর মধ্যে মাত্র দুটিতে ৭৫ জনের সংকুলান হয়। বাকি তিনটিতে বসতে পারেন ৫০ জন করে। এখন প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৭৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। ফলে সামনের দিনে শ্রেণিকক্ষে সব শিক্ষার্থীদের বসার স্থান দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের সমস্যা নিরসনে গত ২৩ মার্চ ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। রাঙামাটির শহরের সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় ২৮ একর জায়গার ওপর নতুন স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ২৫ একর জায়গার ওপর ১৬টি ভবন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ১০টি আবাসিক ভবন ও ৬টি অনাবাসিক। এসব ভবনের মধ্যে থাকবে একাডেমিক, প্রশাসনিক, আবাসিক হল, কোয়ার্টার। এই প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালও নির্মাণ করা হবে।
এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, ২০২৮ নয়, স্থায়ী ক্যাম্পাসের অপেক্ষা তাঁদের আরও বাড়বে।
গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নেই। প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় ধার করে চিকিৎসক এনে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নিতে হয়। এভাবে কত দিন চালানো যায়? এভাবে চালানোর কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া, অধ্যক্ষ, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজঅস্থায়ী ভবনে ক্লাস-পরীক্ষারাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু করতে ছয় তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে এই সেবা চালু করা যায়নি। সেবার পরিবর্তে ভবনটিতে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে পাঁচটি ব্যাচে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী আছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে আছেন ৭৫ জন করে। বাকি তিনটি বর্ষে আছেন ৫১ জন করে। ছয়তলা ভবনের প্রথম তলায় গ্রন্থাগার ও সন্ধানী অফিস, দোতলায় বায়োকেমিস্ট্রি, ফিজিওলজি, প্যাথলজি ল্যাব এবং শিক্ষকদের কক্ষ, তৃতীয় তলায় অধ্যক্ষের কার্যালয়, ছাত্র শাখা, সভাকক্ষ ও শিক্ষকদের লাউঞ্জ। চতুর্থ তলায় ২টি শ্রেণিকক্ষ, অ্যানাটমি বিভাগ ও মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, পঞ্চম তলায় একটি শ্রেণিকক্ষ (যেটি মিলনায়তনে হিসেবেও ব্যবহৃত হয়), উপাধ্যক্ষের কার্যালয় ও ২টি বিভাগ এবং ষষ্ঠ তলায় ২টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম চললেও সেখানে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। শ্রেণিকক্ষ আছে মাত্র ৫ টি। এর মধ্যে মাত্র দুটিতে ৭৫ জনের সংকুলান হয়। বাকি তিনটিতে বসতে পারেন ৫০ জন করে। এখন প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৭৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। ফলে সামনের দিনে শ্রেণিকক্ষে সব শিক্ষার্থীদের বসার স্থান দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের দুই ছাত্র বলেন, মেডিকেল শিক্ষাক্রমে লেকচার কক্ষ ও টিউটোরিয়াল কক্ষ (ছোট গ্রুপে ক্লাস করার জন্য) প্রয়োজন। কিন্তু লেকচার কক্ষ থাকলেও টিউটোরিয়াল কক্ষ নেই। আবার ল্যাবগুলোতে সব শিক্ষার্থীর এক সঙ্গে সংকুলান হয় না। এতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য শহরের ভেদাভেদী এলাকায় ভাড়া করা ছাত্রাবাসের একটি কক্ষ।সম্প্রতি তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ র কল জ র শ ক ষ ন র ম ণ কর প রকল প র
এছাড়াও পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ