হানিফ মোহাম্মদের সঙ্গে সেই সন্ধ্যার স্মৃতি
Published: 11th, August 2025 GMT
দেখতে ছোটখাটো ছিলেন বলে ভালোবেসে সবাই ডাকত ‘লিটল মাস্টার’, কিন্তু ক্রিকেটীয় কীর্তিতে সেই ছোটখাটো লোকটাই কী বিশাল! হানিফ মোহাম্মদ শুধু নিজের সময়ের না, পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট ৮১ বছর বয়সে পরপারে চলে যাওয়া কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের বাড়িতে বসে তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রর। কিংবদন্তির মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে উৎপল শুভ্রর সেই স্মৃতিচারণা
‘লিটল মাস্টার’কে এতটা ‘লিটল' দেখাবে, এটা ভাবিনি। এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে দেখেছি, দেখেছি ১৯৯৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন পাকিস্তান দলের নেট প্র্যাকটিসের সময়ও। তখনো দেখে একটু বিস্ময়ই জেগেছে—এই ছোটখাটো লোকটিই ট্রুম্যান-স্ট্যাথাম-গিলক্রিস্টদের ছোড়া আগুনে গোলার সামনে অমন বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন, লড়েছেন অমন বীরত্বের সঙ্গে! ১৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট ব্যাট করে হেরে যাওয়া টেস্ট ম্যাচ ড্র করেছেন, পাকিস্তানের পক্ষে টেস্টে প্রথম জোড়া সেঞ্চুরিও, ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তাঁর ৪৯৯ রেকর্ড হয়ে ছিল ৩৫ বছর। ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁর করাচির ইউনিভার্সিটি রোডের বাড়িতে হানিফ মোহাম্মদকে দেখে সেই বিস্ময়ও ম্লান। হানিফ মোহাম্মদ যেন আরও ছোট হয়ে গেছেন!
পরনে একটা হাওয়াই শার্ট আর প্যান্ট, চোখে সেই পরিচিত চশমা—মিনিট দশেক অপেক্ষার পর যে ভদ্রলোক সামান্য খোঁড়াতে খোঁড়াতে সামনের সোফায় এসে বসলেন, ড্রেসিংরুমে ঢুকতেই হাসিমুখ যে বিশাল ছবিটি স্বাগত জানিয়েছিল, সেটির সঙ্গে তাঁকে মেলানোই মুশকিল। সেই ছবিটি যৌবনের হানিফ মোহাম্মদের। বলেও ফেললাম কথাটা। হানিফ মোহাম্মদ হাসলেন, ‘আই অ্যাম অ্যান ওল্ড ম্যান নাউ।’
যখন এ কথা বলছেন, এর তিন মাস পরই ৬৭তম জন্মদিন, সে হিসাবে তো ‘ওল্ড ম্যানই’। নাতি-নাতনির সঙ্গই তখন তাঁর আনন্দের প্রধান উৎস। ছেলে শোয়েব মোহাম্মদের দুই সন্তান শেহজার আর শেহজিনের সঙ্গেই কাটে দিনের বেশির ভাগ সময়। ইন্টারভিউর মাঝখানে ১১ বছর বয়সী শেহজার দুবার এসে বসলও দাদার পাশে। কারণটা শুধুই ছেলেমানুষি কৌতূহল নয়। একদিন যে তাকেও এমন ইন্টারভিউ দিতে হবে, এ নিয়ে যে কোনোই সন্দেহ নেই ওই পুঁচকে ছেলেটির মনে! হেসে উড়িয়ে দেবেন না কথাটা। হানিফ মোহাম্মদের কথাটা শুনে নিন আগে, ‘শেষ পর্যন্ত কী হবে, কে জানে! তবে এখন পর্যন্ত ও যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে বিশ্ব ক্রিকেটের মোহাম্মদ পরিবার থেকে আরেকজন উপহার পাওয়ারই কথা। প্রতিভার ব্যাপারটা পুরোপুরি বোঝা যাবে চার-পাঁচ বছর পর, তবে এটুকু বলতে পারি, আমাদের কেউই ওর মতো এতটা ক্রিকেটের পাগল ছিলাম না।’
হানিফ মোহাম্মদের করাচির বাড়িতে হানিফ মোহাম্মদের সঙ্গে উৎপল শুভ্র। ৫ সেপ্টেম্বর ২০০১.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ন ফ ম হ ম মদ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক এমপি সেলিমের জননিরাপত্তা মামলা থেকে অব্যাহতি
বাগেরহাটের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম জননিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর সবুরের আদালতে হাজির হয়ে তিনি মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন জানান। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত সেলিমসহ ১৩ জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।
আরো পড়ুন:
তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিককে মামলায় জড়ালো পুলিশ
বাড়ির মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ায় আকবরকে হত্যা
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে বাগেরহাট রেলরোডস্থ আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এম এ এইচ সেলিমসহ ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শহিদুল ইসলাম বলেন, “২০০১ সালের জননিরাপত্তা আইনের মামলাটি দীর্ঘদিন স্থগিত ছিল। আজ আদালত পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে সেলিমসহ ১৩ জন আসামিকে দায়মুক্ত ঘোষণা করেছেন। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে এম এ এইচ সেলিম বলেন, “মামলাটি দীর্ঘদিন স্থগিত অবস্থায় ছিল। বিজ্ঞ আদালত আমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া ও ‘আয়না ঘরে’ নেওয়ার হুমকির কারণে আমি জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। তবে দল যদি মনোনয়ন দেয়, আমি আবারো নির্বাচনে অংশ নেব।”
এম এ এইচ সেলিম ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল