Prothomalo:
2025-10-03@03:55:35 GMT

সৌরজগতের শেষ সীমানায় কী আছে

Published: 11th, August 2025 GMT

সৌরজগৎ বলতে আমরা অনেকেই শুধু সূর্য ও তার চারপাশে ঘূর্ণমান আটটি গ্রহের সমষ্টিকে বুঝি। তবে সৌরজগৎ মূলত গ্রহ, উপগ্রহ, বামন গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ও আন্তগ্রহ ধূলিকণার এক বিশাল পরিবার। সৌরজগতের প্রতিটি অঞ্চলেরই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তাই আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা কোথায় বা সেখানে কী আছে তা জানতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাসার মহাকাশযান ‘ভয়েজার’ সৌরজগতের প্রায় শেষ সীমানায় থাকা অদ্ভুত এলাকার সন্ধান দিয়েছে। এলাকাটির তাপমাত্রা ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগুনের কোনো উৎস ছাড়াই ভীষণ উত্তপ্ত এলাকাটি। নতুন এই আবিষ্কার পূর্ববর্তী অনেক অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করছে। মহাকাশযানটি আন্তনাক্ষত্রিক ও সৌর এলাকার মধ্যে সংযুক্ত চৌম্বকক্ষেত্রও আবিষ্কার করেছে। এই ক্ষেত্র সূর্যের প্রভাব ও ছায়াপথের চুম্বকীয় কাঠামো সম্পর্কে নতুন অনুসন্ধানের সূত্রপাত করেছে।

১৯৭৭ সালে উৎক্ষেপণ করা নাসার ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২ মহাকাশযান সৌরজগতের প্রান্তের বাইরে একটি উচ্চ-তাপমাত্রার অঞ্চল চিহ্নিত করেছে। বিজ্ঞানীরা এখন এই অঞ্চলটি নিয়ে গবেষণা করছেন। অঞ্চলটির নাম দেওয়া হয়েছে আগুনের দেয়াল বা ফায়ারওয়াল। এটি সৌরজগতের সীমানা ও আন্তনাক্ষত্রিক সৌর এলাকার মধ্যে চুম্বকীয় সংযোগ সম্পর্কে একটি নতুন ধারণা দিচ্ছে।

সৌরজগতের শেষ কোথায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। কেউ কেউ নেপচুনের পরে সীমানা শেষ হওয়ার কথা জানালেও অনেকে ওর্ট ক্লাউডের দিকে ইঙ্গিত করেন। দূরবর্তী এই অঞ্চলে অনেক ধূমকেতু রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নাসা সৌরজগতের এই সীমানার নামকরণ করেছে হেলিওপজ। সেই এলাকায় সূর্য থেকে আসা চার্জযুক্ত কণার একটি প্রবাহ সৌর বায়ু তার শক্তি হারায়। এই বিন্দুর বাইরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাকাশ রয়েছে। নাসা সূর্যের প্রভাবে গঠিত বুদ্‌বুদের শেষ প্রান্তের সঙ্গে হেলিওপজ তুলনা করে।

হেলিওপজ অতিক্রম করার পর উভয় ভয়েজার অত্যন্ত উত্তপ্ত অঞ্চলের মুখোমুখি হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। অতিরিক্ত তাপ সত্ত্বেও ভয়েজার দুটি অক্ষত আছে। নাসা জানিয়েছে, এই আগুনের দেয়াল আসলে আগুন দিয়ে তৈরি নয়। সেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী কণা রয়েছে, যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এসব কণার মধ্যে ভারী শক্তি রয়েছে। এসব কণা আগুনের মতো জ্বলে না। এই উচ্চশক্তির অঞ্চল অতিক্রম করার পর ভয়েজার দুটি আন্তনাক্ষত্রিক স্থান থেকে চৌম্বকক্ষেত্রের তথ্য রেকর্ড করেছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, হেলিওপজের বাইরের চৌম্বকক্ষেত্র সৌরজগতের ক্ষেত্রের সঙ্গে সংযুক্ত। আগে মনে করা হতো, দুটি অঞ্চল সম্পূর্ণ পৃথক।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স রজগত র আগ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের গ্রহাণু বলয় হারিয়ে যাচ্ছে

বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহের মাঝখানে থাকা গ্রহাণু বলয় থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন উপাদান হারিয়ে যাচ্ছে। মহাকর্ষীয় শক্তি ও ঘন ঘন সংঘর্ষের কারণে এই মহাজাগতিক অঞ্চলটি ছোট হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন উরুগুয়ের ইউনিভার্সিড্যাড দে লা রিপাবলিকার জুলিয়ো ফার্নান্দেজের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। এই ক্ষয় পৃথিবীর অতীত ও ভবিষ্যতের উল্কাপিণ্ডের আঘাতের ঝুঁকির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানের গ্রহাণু বলয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার উপাদান হারাচ্ছে। ৪৬০ কোটি বছর আগে সৌরজগতের জন্মের সময় এই অঞ্চলে একটি গ্রহ তৈরির সম্ভাবনা থাকলেও, তা হয়নি। মূলত বৃহস্পতি গ্রহের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতি গ্রহ মহাজাগতিক বস্তুকে একত্র হওয়ার সুযোগ না দিয়ে উল্টো সংঘর্ষ ঘটিয়ে সেগুলোকে ভেঙে ফেলে।

বর্তমানে এই গ্রহাণু বলয়ে চাঁদের ভরের মাত্র প্রায় ৩ শতাংশ উপাদান অবশিষ্ট আছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে এসব উপাদান। বৃহস্পতি, শনি ও মঙ্গল গ্রহের মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এই মহাজাগতিক শিলার কক্ষপথ ক্রমেই প্রভাবিত হচ্ছে। কিছু শিলা সৌরজগতের ভেতরের দিকে থাকা পৃথিবীর কক্ষপথের কাছে চলে আসছে। আবার কিছু শিলা বৃহস্পতির দিকে ছিটকে যাচ্ছে। কিছু শিলা সংঘর্ষের ফলে ধুলায় পরিণত হচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বলয়টি প্রতিবছর প্রায় শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য ৮৮ শতাংশ হারে ছোট হচ্ছে। এই হিসাব শুধু বলয়ের সেই অংশের জন্য, যেখানে এখনো সংঘর্ষ ঘটছে। এই হার ছোট মনে হলেও শত শত কোটি বছর ধরে এর বিশাল প্রভাব তৈরি হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া উপাদানের প্রায় ২০ শতাংশ অপেক্ষাকৃত বড় খণ্ড হিসেবে ছিটকে যায়। সেসব বড় খণ্ডকে আমরা কখনো কখনো পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করতে দেখি উল্কাপিণ্ড হিসেবে। অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ সূক্ষ্ম ধুলায় পরিণত হয়। সেই ধুলার কারণে সূর্যাস্তের পরে বা সূর্যোদয়ের আগে আমাদের পৃথিবীর আকাশে এক ক্ষীণ আভা সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুনসৌরজগতের শেষ সীমানায় কী আছে১১ আগস্ট ২০২৫

গ্রহাণু বলয়কে আমাদের সৌরজগতের একটি স্থায়ী অংশ মনে হলেও নতুন গবেষণা বলছে, এটি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই গবেষণায় সেরেস, ভেস্টা ও প্যালাসের মতো বড় ও স্থিতিশীল গ্রহাণুকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বলয় এলাকার চলমান ক্ষয়ের প্রক্রিয়া বোঝার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর অতীত ইতিহাস নিয়ে আরও ভালোভাবে গবেষণা করার সুযোগ পাচ্ছেন।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুনপৃথিবী কি সত্যিই সৌরজগৎ থেকে বেরিয়ে যাবে২৩ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের গ্রহাণু বলয় হারিয়ে যাচ্ছে