রাজশাহীর দুর্গাপুরে পূর্ববিরোধের জেরে হামলায় ওয়াজেদ আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের হোজা অনন্তকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি আহত হন। পরে দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ওয়াজেদ আলী উপজেলার হোজা অনন্তকান্দি গ্রামের দলিম উদ্দিনের ছেলে। ওই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী লাইলী বেগম (৫৫) ও ছেলে মাসুম আলী (২৮) আহত হন।

পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওয়াজেদ তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে হোজা বিলের পশ্চিম পাশে নিজেদের পান বরজে কাজ করছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা লাঠি, লোহার রড, হাঁসুয়া ও রামদা দিয়ে ওয়াজেদকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে তাঁর মাথা, বাঁ হাতের কবজি ও পায়ে গুরুতর জখম হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী লাইলী ও ছেলে মাসুমও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন। তাঁদের চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরা ওই তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওয়াজেদ ও তাঁর ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার নেপথ্যে গত ১৪ মে একটি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জড়িত। ওই দিন জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে একই গ্রামের হাসিবুর রহমান (২৮) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় ১৫ মে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি ছিলেন ওয়াজেদ আলী। সম্প্রতি আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তবে প্রতিপক্ষের হুমকির কারণে তিনি নিজের বাড়িতে থাকতেন না।

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কয়েক মাস আগে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে জানিয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা বলেন, সেই ঘটনায় মামলায় ওয়াজেদ আলীও আসামি ছিলেন। তিনি সম্প্রতি জামিন পান। পরে ওই একই ঘটনায় প্রতিপক্ষ তাঁর ওপর হামলা চালায়।

ওসি দুরুল হুদা আরও যোগ করে বলেন, ওয়াজেদ আলীকে হত্যা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত মামলা হয়নি। মরদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।

ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’

শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।

ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ