আলোকচিত্রীদের গুলির সামনে দাঁড়িয়েও ছবি তুলতে হয়। অন্য কোথাও উপস্থিত থেকে দৃশ্য ধারণের সুযোগ নেই। তাই তাঁদের কাজই যেকোনো বিপ্লবের দলিল হিসেবে থাকে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিরোধের স্বাক্ষর আলোকচিত্রীদের তোলা ছবিগুলো। এসব কথা উঠে এল ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরুর আয়োজনে।

আজ সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর থেকে শুরু হয় ‘গণ-অভ্যুত্থানে আলোকচিত্র, জুলাই আলোকচিত্র: ইতিহাসের সাক্ষী ও লড়াইয়ের হাতিয়ার’ শীর্ষক ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী। পাঁচটি ভ্যানে প্রদর্শন করা হচ্ছে ১৪ জন আলোকচিত্রীর কাজ। প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত।

প্রদর্শনী শুরুর আগে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের সময় গুলির মুখে দাঁড়িয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ছবি তোলার অভিজ্ঞতার কথা বলেন আলোকচিত্রীরা।

আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম বলেন, ‘এ উদ্যোগে মানুষের কাছে গ্যালারিকে নিয়ে আসা হয়েছে। দেখুন পথের শ্রমজীবী মানুষও দাঁড়িয়ে ছবি দেখছে।’ তিনি বলেন, ‘আলোকচিত্রীরা যদি না থাকত, তাহলে হয়তো শেখ হাসিনাই থাকতেন গদিতে। এই আন্দোলনে আলোকচিত্রীদের ভূমিকা মনে রেখে তাঁদের কাজের সম্মান করা, কপিরাইটস দেওয়া উচিত।’

শহীদুল আলম আরও বলেন, ‘যাঁরা লেখেন বা প্রতিবেদন করেন, তাঁদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হয়েও কাজটি করার সুযোগ থাকে। কিন্তু একজন আলোকচিত্রীকে গুলির মুখে দাঁড়িয়েও ছবি তুলতে হয়।’

আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের সেই দিনগুলো স্মরণ করতে আয়োজন করা হয়েছে এই ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর। অভ্যুত্থানের দলিল হিসেবে কথা বলবে এসব আলোকচিত্র।’

পাঠশালার শিক্ষক আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘যখন গণমাধ্যম কোনো ভূমিকা রাখতে পারছিল না তখন কথা বলেছে ছবি। জীবন বাজি রেখে আলোকচিত্রীদের তোলা এসব ছবি সত্যের দলিল।’
আলোকচিত্রী জীবন আহমেদ বলেন, ‘আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর বিজিবির গুলি চালানোর কথা। সে সময় তাঁরা গুলিবিদ্ধ করতে পারলে বলে উঠছিল, একটা কনফার্ম, একটা কনফার্ম।’

পাঁচটি ভ্যানে প্রদর্শন করা হচ্ছে ১৪ জন আলোকচিত্রীর কাজ। প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।

ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’

শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।

ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ