Prothomalo:
2025-08-11@13:24:26 GMT

সতী এখন ৩ ফুটের নদী

Published: 11th, August 2025 GMT

লালমনিরহাটের অন্যতম একটি নদীর নাম সতী। নদীটির গড় প্রস্থ ছিল প্রায় ৫০০ ফুট। দখলের কারণে লালমনিরহাট শহরে বাসস্ট্যান্ডের সামান্য উজানে নদীটি ৩ ফুটে পরিণত হয়েছে। নদীটির অবস্থা যে খারাপ, সে সম্পর্কে কিছু কিছু ধারণা আগে থেকেই ছিল। সেই খারাপ যে কতটা ভয়াবহ, সরেজিমনে তা দেখেছি। গত বছরে কয়েক দিন সতী নদী ঘুরেছি। গত দুই মাসেও কয়েকবার গিয়েছিলাম এ নদী দেখতে। নদীটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া এলাকায় তিস্তা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে একই জেলার আদিতমারী হয়ে সদর উপজেলায় পুনরায় তিস্তা নদীতে মিলিত হয়েছে।

সতী নদী আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নে এসে ভেটেশ্বর নদে মিলিত হয়েছে। মিলিত প্রবাহ মিলনবাজারের পাশে দুভাগে প্রবাহিত হয়েছে। একটি প্রবাহ ভেটেশ্বর নামে, অপর প্রবাহ মরা সতী নামে প্রবাহিত। ভেটেশ্বর নদ আরও ভাটিতে সতী নাম নিয়েছে। এই সতী ও মরা সতীর প্রবাহ দুটি লামনিরহাট সদর উপজেলায় রাজপুর ইউনিয়নে মিলিত হয়েছে। মিলিত হওয়ার পর এর কিছু দূরে নাম হয়েছে দিকসতী। এই দিকসতী নদী চুঙ্গাদারা নামের একটি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে তিস্তা (ছোট প্রবাহ) নামে গোকুণ্ডা ইউনিয়নে প্রধান তিস্তা নদীর সঙ্গে রেলেসেতুর এক কিলোমিটার উজানে মিলিত হয়েছে।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, আদিতমারী এবং শহর এলাকার কয়েকটি স্থানে নদীটি দেখেছি। প্রতিটি স্থানে নদীটির করুণ চিত্র চোখে পড়েছে। লালমনিরহাটের সাপটিবাড়ির গিলাবাড়ি এলাকায় সেলিম নামের এক রিকশাওয়ালার সঙ্গে দেখা হয়েছিল গত বছর। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, মরা সতী নদী কোথায়? সেলিম আমাদের সামনের ধান চাষ হচ্ছে—এমন জমি ও পুকুর দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘এইটাই তো নদী!’ আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, কোথায় নদী? তিনি আবারও একইভাবে বললেন, ‘এইটাই তো নদী!’ তিনি যে স্থানকে নদী নির্দেশ করলেন, তা বেশ প্রশস্ত। ওই স্থানে একটি পুকুরের পাড় ধরে কিছুটা হেঁটে সামনে দুজন বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়। তাঁরা দুজনই জানান, ছোটবেলা তাঁরা দেখেছেন, এ নদীতে সারা বছর পানি থাকত। প্রচুর মাছ ছিল। দাদাদের কাছে গল্প শুনেছেন, চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যের ডিঙা যেত এই পথে।

অবৈধভাবে দখল হওয়া নদীর জমি উদ্ধার করতে হবে। যেহেতু নদীর জমির মালিকানা ব্যক্তির হওয়ার সুযোগ কোনোকালেই ছিল না, তাই যে সূত্রে ব্যক্তিমালিকানা লাভ করুক না কেন, তা অবৈধ, বেআইনি। ফলে প্রথমেই বাতিল করতে হবে ব্যক্তির মালিকানা। খাজনা-খারিজ সব বন্ধ করতে হবে

নদীটি সম্পর্কে আরও খানিকটা জানতে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়িতে গিয়েছিলাম। সাইদ আলী নামের এক প্রবীণের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁর কাছে জেনেছি, আট থেকে দশ বছরের মধ্যে নদীটির ভেতরে অসংখ্য পুকুর হয়েছে। এই পুকুরের জন্য পানি নেমে যেতে পারে না। মরা সতী নদীতে যে কয়টি সেতু দেখেছি, সেগুলো নদীর প্রকৃত প্রস্থের চেয়ে অনেক ছোট। কোথাও কোথাও দেখলাম নদীর প্রস্থের চেয়ে অন্তত ৩৫ গুণ ছোট কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। লালমনিরহাটের লোকাল বাসস্ট্যান্ডের পাশে দেখলাম, নদীটিতে অবৈধ স্থাপনাও হয়েছে। নদীটির বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ দূষণও আছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুণ্ডা ইউনিয়নের কাছে সতী নদী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ল ত হয় ছ নদ ট র প রব হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে নবীনবরণ, র‍্যাগিং ইস্যুতে কঠোর প্রশাসন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রথমদিনেই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার।

তবে ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ৪৩ আসন ফাঁকা রয়েছে বলে জানা গেছে। 

সোমবার (১১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগ নিজস্ব আয়োজনে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। 

আরো পড়ুন:

গকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ-আহত শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আটটি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগে মোট আসনসংখ্যা ২ হাজার ৪৪৭টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৪০৪ শিক্ষার্থী চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ৪৩টি আসন ফাঁকা আছে। এর মধ্যে সাতটি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে আসন ফাঁকা থাকলেও ধর্মতত্ত্ব অনুষদে কোনো আসন ফাঁকা নেই। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার উপ রেজিস্ট্রার শহীদুল ইসলাম বলেন, “ফাঁকা আসনের বিষয়ে গতকাল (রবিবার) জিএসটি কমিটির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি মিটিং হয়েছে। এছাড়া আজ (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয় টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়কে র‍্যাগিংমুক্ত রাখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে মাইকিং করে র‍্যাগিংবিরোধী প্রচার প্রচারণা চালান হয়েছে। নবীনদের র‍্যাগিংয়ে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমরা র‍্যাগিং নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। তিনদিন ধরে আমরা র‍্যাগিং সচেতনায় মাইকিং করছি। এছাড়া বিভাগগুলোতে কাউন্সিলর নিয়োগ, সচেতনতামূলক আলোচনা সভা এবং পোস্টার লাগানো হবে। কোনো র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ