রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলা এলাকায় ভ্যান চুরির সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, ঘটনাটি প্রচলিত আইন, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের দৃষ্টিতে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অগ্রহণযোগ্য।

আজ সোমবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।

৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ভ্যানচোর সন্দেহে পিটিয়ে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে হত্যা করা আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত সুরক্ষা ও জীবন রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এই ঘটনায় গুরুতরভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।

গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা দেশের নাগরিকের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ ও ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, যেকোনো সংঘবদ্ধ প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবিশেষকে দায়মুক্তি না দিয়ে তাদের শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কেননা এ ধরনের নির্মম ঘটনা মানবাধিকারের ভিত্তিকে সরাসরি আঘাত করে।

আসক–এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত অন্তত ১১১ জন নাগরিক ‘মব–সন্ত্রাসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নব ধ ক র উপজ ল র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টাদের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিক্রিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার দাবি করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আট জন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ তার কাছে আছে। ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে ওই সেমিনারের আয়োজন করেছিলো বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংগঠনটি। 

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং সেমিনারের মূল বক্তব্যের বাইরে প্রকাশিত হয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৮ আগস্ট ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে উপদেষ্টাদের নিয়ে দু-একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত নেতিবাচক সংবাদটি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

সেমিনারের বিষয়বস্তু–সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল। ওই বিজ্ঞপ্তির আলোকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও দু-একটি গণমাধ্যমে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ ও বিষয়বস্তুর বাইরে উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সেমিনার একটি একাডেমিক বিষয়। এতে বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞজনেরা দেশের জনপ্রশাসনের গতিপ্রকৃতি ও প্রত্যাশা নিয়ে তাদের ‍নিজস্ব বক্তব্য দেন। অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। সেমিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার আলোকে আগামী দিনের জনপ্রত্যাশা ও জনপ্রশাসন নিয়ে অনেক ইতিবাচক-নেতিবাচক, আত্মসমালোচনা ও গঠনমূলক বক্তব্য, পরামর্শ ও প্রত্যাশা ‍উঠে আসে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের চারজন সদস্যও সেমিনারে তাদের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। (শুক্রবার) অ্যাসোসিয়েশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল, সেটাই অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য।

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। দৃশ্যমান সংস্কার কার্যক্রমসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টাদের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিক্রিয়া