রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ের একটি প্রাইভেট কার থেকে যে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের পরিচয় জানা গেছে। পুলিশ বলছে, জাকির ও মিজান নামের ওই দুই ব্যক্তির বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায়। এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীকে এলাকায় নেওয়ার জন্য তাঁরা ঢাকায় এসেছিলেন।

জাকির ও মিজান দুজনেরই বয়স ৪০–এর কাছাকাছি। আজ সোমবার দুপুরে গাড়ির ভেতর থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। দুজনেরই শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে গেছে। তাঁদের হত্যা করা হয়েছে, নাকি অন্য কোনো কারণে দুজনের মৃত্যু হয়েছে, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলছে না পুলিশ।

হাসপাতাল–সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রোববার ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটের দিকে গাড়িটি গ্যারেজে প্রবেশ করে। এর পর থেকে সেটি বেজমেন্টের (ভূগর্ভস্থ) তৃতীয় তলার এক কোনায় পার্ক করা ছিল।

সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলের সিকিউরিটি ইনচার্জ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে পার্কিংয়ের জায়গা খালি আছে কি না, দেখার জন্য তিনি বেজমেন্টের তৃতীয় তলায় যান। এসে দেখেন, গাড়ির ভেতরে দুজন আছেন। বাইরে থেকে কয়েকবার ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে দরজা খোলেন। তখন দেখেন, তাঁরা মারা গেছেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়।

মিজানুর রহমান বলেন, দুজনের মধ্যে একজন চালকের আসনে, আরেকজন চালকের পেছনের আসনে ছিলেন। চালকের সিট পেছন দিকে হেলানো ছিল।

নিহতদের মধ্যে জাকির গাড়ির চালক এবং মিজান তাঁর আত্মীয় বলে পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার মাসুদ আলম জানিয়েছেন। তিনি বিকেলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গাড়ির মালিককে শনাক্ত করতে পেরেছি। মালিক সৌরভের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল এলাকায়। মৃত দুজনের বাড়িও একই এলাকায়। তাঁরা হাসপাতালে রোগী নিতে এসেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।’

আরও পড়ুনঢাকার মৌচাকে গাড়ির ভেতর থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার৩ ঘণ্টা আগে

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে জানিয়ে উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য দুজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ জন র ম

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ আমলে ওসি থাকা ৯ পুলিশ পরিদর্শককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) পদমর্যাদার ৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বিগত সরকারের সময় তাঁরা বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাসিমুল গনি এসব প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন।

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন বগুড়ার এপিবিএন ৪–এর পুলিশ পরিদর্শক শিকদার মো. শামীম হোসেন, সিআইডি কন্ট্রোল রুমের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ, নারায়ণগঞ্জ জেলার রিজার্ভ অফিসের পুলিশ পরিদর্শক এস এম কামরুজ্জামান, সিআইডি নরসিংদীর পুলিশ পরিদর্শক আ. কুদ্দুছ ফকির, ট্যুরিস্ট পুলিশের মুন্সিগঞ্জ ও পদ্মা সেতু জোনের পরিদর্শক মামুন অর রশিদ, সিআইডির মৌলভীবাজারের পুলিশ পরিদর্শক নুরুল ইসলাম, নৌ পুলিশে কর্মরত যমুনা সেতু-পূর্ব নৌ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. কামাল হোসেন, কুলাউড়া রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সেলিমুজ্জামান এবং টাঙ্গাইলের মধুপুর সার্কেল অফিসের পুলিশ পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক।

৯ জনকেই সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী অবসরে পাঠানো হয়। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কোনো কারণ না দর্শিয়ে তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইনের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। বিধি অনুযায়ী তাঁরা অবসরজনিত সুবিধা পাবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত

অসদাচরণ ও পলায়নের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামান বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি বিনা অনুমতিতে গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। যার ফলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণ ও পলায়নের শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় তাঁকে ওই তারিখ থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। তবে সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগ আমলে ওসি থাকা ৯ পুলিশ পরিদর্শককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার