অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে লোকজন ভিডিও ধারণ করে। কিন্তু তারা প্রতিহত করতে আসে না। আগে বাচ্চারা লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে গেলে লোকজন ঝাঁপ দিয়ে তাকে উদ্ধার করত। এখন কোনো ঘটনা দেখলে তারা ভিডিও করে, কিন্তু প্রতিহত করতে আসে না। অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করা আমাদের ইমানি দায়িত্ব।’

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

২০২৪ সালের জুলাইয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ওই সময়ে থানা খালি ছিল। অন্যান্য বাহিনী তেমন সক্রিয় ছিল না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে যেভাবে রয়েছে, আমার মনে হয় নির্বাচন করতে তেমন অসুবিধা হবে না।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম অনেক আগে থেকেই শুরু করেছি। আমার দায়িত্ব হলো ভোটকেন্দ্র দেখা না, ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। বাইরে থেকে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া। এসব কার্যক্রম অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় দুই উপজেলা মিলে একটি আসন। আর শুধু কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-২ ‍ও ঢাকা-৩–এর দুটি সংসদীয় আসন রয়েছে। এক উপজেলায় দুই আসন দেশের আর কোথাও নেই।’

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জনগণেরও সহযোগিতা প্রয়োজন উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, এবার ভোটটা যেন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে হয়, সে জন্য সব ধরনের চেষ্টা থাকবে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ৮০ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হবে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবেন। এবার প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নিরাপত্তার জন্য আগের দুজন আনসারের সঙ্গে বাড়তি একজন অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তরুণ ভোটারদের অংশগ্রহণ করার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে তাঁদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। তা ছাড়া নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা বুথ তো থাকছেই।

সারা দেশে ভুয়া মামলা ও মামলা–বাণিজ্যের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোনো নিরীহ ব্যক্তি যেন আইনের আওতায় না আসে, সে জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। অর্থের লোভে কাউকে ফাঁসানোর প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সারা দেশে অবৈধ অস্ত্রের মজুদ থাকায় নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, তা আমরা নেব। আমরা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছি।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের আগে র‌্যাব-১০–এর সদর দপ্তর ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন। পরে তিনি কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পরিদর্শন করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ টক ন দ র র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন

আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় জনজীবনে তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, সচিবালয়, জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে- যান চলাচল স্বাভাবিক, মানুষের চলাচল স্বাভাবিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অন্যান্য দিনের মতোই চলছে।

আরো পড়ুন:

ঢাবি শিক্ষক এরশাদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

ঢাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা-বিষয়ক জাতীয় প্রতিযোগিতা

সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আধিক্য যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীও দেখা গেছে। কোথাও যান সংকট হয়নি, বরং কিছু বাসে বাড়তি যাত্রীর চাপ ছিল।

গুলিস্তানে এক বেসরকারি অফিসকর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “শাটডাউন বলে আজকে কিছুই বুঝলাম না। প্রতিদিন যেমন বের হই, আজও ঠিক তেমনই বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখিনি।”

চানখারপুলে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ মাহমুদা আক্তার বলেন, “শাটডাউনের নামে মানুষকে ভয় দেখানো ঠিক না। বাস কম হলেও চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই অফিসে যাচ্ছি।”

ঠিকানা পরিবহন শ্রমিক শহীদুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউন ডেকেছে শুনেছি, কিন্তু রাস্তায় কোনো প্রভাব নেই। পুলিশের বাড়তি অবস্থানও দেখি নাই। গাড়ি চলছে, যাত্রীও আছে।”

সচিবালয়ের কাছে একজন সরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল করিম বলেন, “শাটডাউনের মতো কর্মসূচি কখনোই জনস্বার্থের পক্ষে নয়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। আজকে যানচলাচল প্রতিদিনের মতোই।” 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক

নিষিদ্ধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সতর্ক উপস্থিতি বিশেষভাবে দেখা যায়নি। নিয়মিত দায়িত্বপালন ছাড়া আলাদা কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।

শাটডাউনের বিপক্ষে জনমতই শক্তিশালী

সরেজমিন চিত্র, সাধারণ মানুষের বক্তব্য এবং বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- রাজধানীবাসী শাটডাউনের পক্ষে নয়। বরং জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পক্ষেই তাদের মত।

রাজধানীর ৩৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ব্যস্ত সকাল, মানুষের স্বাভাবিক আনাগোনা এবং চলমান পরিবহন কার্যক্রম প্রমাণ করেছে- শাটডাউন ঢাকার জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বরং জনগণ নিষেধাজ্ঞামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানই দেখিয়েছে।

ঢাকা/আসাদ/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া ২টি বুলডোজার আটকে দিল সেনাবাহিনী
  • শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার
  • পটুয়াখালীতে গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন, প্রভাব পড়েনি শাটডাউনের
  • এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুতে নিরাপত্তা জোরদার, যানবাহনের সংখ্যা কম
  • ট্রাইব্যুনালে নিরাপত্তা জোরদার, আছে সেনাবাহিনী-র‍্যাব-পুলিশ
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে ‘সতর্কতা’
  • শেখ হাসিনাসহ অন্যদের মামলার রায় যা-ই হোক না কেন, তা কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর-মাদারীপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে বিজিবি
  • শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন