রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর দুই ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 11th, August 2025 GMT
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবং তাঁর দুই ছেলে কাওসার আহমেদ ও মেহেদী হাসানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রফিকুল ইসলাম ও তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভুয়া বন্ধক রেখে সিলভার ফুড ইন্ড্রাস্টিজের অনুকূলে এক হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ অবস্থায় রফিকুল ইসলাম ও তাঁর দুই ছেলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৮ আগস্ট মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গুলশান থানায় এ মামলা করা হয়।
সাবেক ডিআইজির জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক
এ ছাড়া পুলিশের সাবেক ডিআইজি আবদুল বাতেন ও তাঁর স্ত্রী নূর জাহান আক্তারের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক (অকার্যকর) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। শুনানি নিয়ে আদালত সাবেক ডিআইজি বাতেন ও তাঁর স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক (অকার্যকর) করার আদেশ দেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যবিত্তের ভরসা সঞ্চয়পত্র: কোনটিতে কত মুনাফা
বিনিয়োগের জন্য মধ্যবিত্তের অন্যতম পছন্দ সঞ্চয়পত্র। এ বিনিয়োগ নিরাপদ ও মুনাফার হারও বেশি। ব্যাংকে টাকার রাখার চেয়ে সঞ্চয়পত্রে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। এমন চিন্তা থেকে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কেনেন। অনেকে সংসার খরচের একটা অংশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে জোগান দেন। ফলে সঞ্চয়পত্র এখন সামাজিক সুরক্ষার অংশও হয়ে গেছে।
বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের চার ধরনের সঞ্চয় আছে। এগুলো হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। এসব সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারও কাছাকাছি। তবে সঞ্চয়পত্রভেদে ভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আছে শর্ত। তাই মুনাফার হারের পাশাপাশি অন্যান্য বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে সঞ্চয়পত্র কিনতে হবে। ভাবতে হবে, কোনটি আপনার জন্য বেশি লাভজনক।
মুনাফা কত
এবার দেখা যাক, কোন সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কত। এখানে বলা প্রয়োজন, গত জুলাই মাস থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়েছে সরকার।
দেশে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের যত ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। এ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ করা হয়েছে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে, অর্থাৎ মেয়াদপূর্তিতে মুনাফা ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রগুলোর মধ্যে এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সবচেয়ে বেশি।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এ ছাড়া তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
মেয়াদপূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙলে মুনাফা কমে যায়। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মেয়াদপূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র না ভাঙাই ভালো।
কে কত বিনিয়োগ করতে পারবেন
সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরাই কিনতে পারবেন। তবে যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ এবং ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিকের পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ আছে।
একক নামে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত পেনশনার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। কিনতে পারবেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র কেনায় সীমা হলো ব্যক্তির ক্ষেত্রে একক নামে ৩০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভবিষ্য তহবিলে মোট স্থিতির ৫০ শতাংশ। তবে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকার কেনা যাবে।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কেনায় সীমা হলো ব্যক্তির ক্ষেত্রে একক নামে ৩০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তা হলো ভবিষ্য তহবিলে মোট স্থিতির ৫০ শতাংশ। তবে তা হবে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা। অন্যদিকে এই সীমা ফার্মের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা এবং অটিস্টিক সহায়ক প্রতিষ্ঠান, দুস্থ ও অনাথ শিশুদের নিবন্ধিত আশ্রয় প্রতিষ্ঠান (অনাথ আশ্রম, শিশু পরিবার, এতিমখানা ইত্যাদি) এবং প্রবীণদের জন্য নিবন্ধিত আশ্রয়কেন্দ্রের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা।
কোথায় পাওয়া যায়
জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা, বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ও ডাকঘর থেকে এই সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো যায়।