সুন্দরবনের সাবেক ফরেস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম–ঘুষের অভিযোগ ইউপি সদস্যের
Published: 12th, August 2025 GMT
সুন্দরবনকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ ও ব্যক্তিগত মানহানির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গোলাম কিবরিয়া।
আজ মঙ্গলবার সকালে কয়রা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা বন বিভাগের সাবেক ফরেস্টার তানজিলুর রহমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম কিবরিয়া বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা তানজিলুর রহমান তাঁর কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিষ দিয়ে মাছ শিকার, হরিণশিকারিদের সহযোগিতা, অবৈধ প্রবেশে সহায়তা, ঘুষ গ্রহণ, অনিয়মসহ প্রতিবাদকারীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করেছেন।
গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, গত বছর এলাকার কয়েকজন গরিব জেলে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (বিএলসি) নিতে তাঁর (কিবরিয়ার) সহায়তা চান। বিষয়টি তিনি তৎকালীন নলিয়ান ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা তানজিলুর রহমানের কাছে জানালে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। জেলেরা তাঁর অজান্তে ধারদেনা করে টাকা পরিশোধ করলেও অবসরের আগে কোনো অনুমতিপত্র দেননি। পরে তিনি জানতে পেরে তানজিলুর রহমানের কাছে গরিব জেলেদের টাকা ফেরত চাইলে ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা ফেরত চাওয়ার পর থেকে তানজিলুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন গোলাম কিবরিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়া বলেন, অপপ্রচারের একটি অডিও তাঁর হাতে এসেছে, যেখানে এক মামলার আসামিকে তানজিলুর রহমান বলছেন, বেশির ভাগ মামলার আসামির নাম তিনি কিবরিয়া মেম্বারের কাছ থেকে পেয়েছেন। সেই কথোপকথনে আরও শোনা যায়, মামলায় মুক্তি পেতে হলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলে কিবরিয়া মেম্বারের বিরুদ্ধে বলার শর্ত দেন তিনি। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কখনো সুন্দরবনে প্রবেশ করিনি; বরং অপরাধের খবর বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়েছি। তবুও আমার নামেই মামলা দেওয়া হয়েছে।’ তখন তানজিলুর রহমান বলেন, ‘মামলা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমার সঙ্গে ঝামেলা কোরো না, কয়রা আদালতে গিয়ে তোমাদের পক্ষে বলে আসব।’
গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, তানজিলুর রহমান অবৈধ উপায়ে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। বনজীবীদের শোষণ, ঘুষ আদায় ও অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত এসব সম্পদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে সত্যতা স্পষ্ট হবে।
গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি কখনো মিথ্যা মামলায় কাউকে জড়াননি; বরং সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। তবে ফরেস্টার তানজিলুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে মানহানি করছেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ফরেস্টারের দায়ের করা মামলাগুলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে নির্দোষ বনজীবীদের মুক্তি ও তাঁর অবৈধ সম্পদের উৎস অনুসন্ধানে দুদকের সক্রিয় ভূমিকা চান।
এ বিষয়ে জানতে তানজিলুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম ক বর য় স ন দরবন ফর স ট র কর ছ ন য গ কর
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ আমলে ওসি থাকা ৯ পুলিশ পরিদর্শককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার
পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) পদমর্যাদার ৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বিগত সরকারের সময় তাঁরা বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাসিমুল গনি এসব প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন।
অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন বগুড়ার এপিবিএন ৪–এর পুলিশ পরিদর্শক শিকদার মো. শামীম হোসেন, সিআইডি কন্ট্রোল রুমের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ, নারায়ণগঞ্জ জেলার রিজার্ভ অফিসের পুলিশ পরিদর্শক এস এম কামরুজ্জামান, সিআইডি নরসিংদীর পুলিশ পরিদর্শক আ. কুদ্দুছ ফকির, ট্যুরিস্ট পুলিশের মুন্সিগঞ্জ ও পদ্মা সেতু জোনের পরিদর্শক মামুন অর রশিদ, সিআইডির মৌলভীবাজারের পুলিশ পরিদর্শক নুরুল ইসলাম, নৌ পুলিশে কর্মরত যমুনা সেতু-পূর্ব নৌ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. কামাল হোসেন, কুলাউড়া রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সেলিমুজ্জামান এবং টাঙ্গাইলের মধুপুর সার্কেল অফিসের পুলিশ পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক।
৯ জনকেই সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী অবসরে পাঠানো হয়। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে কোনো কারণ না দর্শিয়ে তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইনের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। বিধি অনুযায়ী তাঁরা অবসরজনিত সুবিধা পাবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত
অসদাচরণ ও পলায়নের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার কাজী মনিরুজ্জামান বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি বিনা অনুমতিতে গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। যার ফলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণ ও পলায়নের শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় তাঁকে ওই তারিখ থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। তবে সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি খোরপোশ ভাতা পাবেন।