ক্রিকেটের উন্নতির দিকেই নয়, ভালো ক্রীড়াবিদ হওয়ার লড়াইয়ে বাংলাদেশ
Published: 12th, August 2025 GMT
শুধু ক্রিকেটার হিসেবে নয় ভালো ক্রীড়াবিদ হিসেবেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সেরা অবস্থানে নিয়ে যেতে চান জাতীয় দলের স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ নাথান ক্যালি।
ভারত সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ায় ক্রিকেটারদের নিয়ে লম্বা ফিটনেস ট্রেনিং করাচ্ছেন ক্যালি। বিরতি দিয়ে যখনই ক্রিকেটাররা মাঠে ফিরছেন দিতে হচ্ছে কঠিন পরীক্ষা। অনেকের দাবি, এমন ফিটনেস সেশন আগে কখনো হয়নি তাদের। ক্রিকেটাররা অ্যাথলেটিক টার্ফে ১৬০০ মিটার দৌড়েছেন একাধিকবার।
আরো পড়ুন:
‘হাজার কোটি টাকা থাকলে বিপিএলে আসা উচিত’
বিসিবির বোর্ড সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হলো
ঢাকা স্টেডিয়ামের টার্ফে চলে এই ট্রেনিং। যেখানে পেসার নাহিদ রানা ১৬০০ মিটার শেষ করেছেন ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে। তরুণ নাহিদ যেখানে চমক দেখিয়েছেন মুশফিকুর রহিম মুগ্ধ করেছেন। ৩৮ পেরোনো মুশফিকুর ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডে টাচ করেছেন ফিনিশিং লাইন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে শুরুর দিকে ফিটনেস টেস্ট বলতেই ছিল বিপ টেস্ট। মারিও ভিল্লাভারায়েনে যে টেস্টে ক্রিকেটারদের তৈরি করতেন। পরবর্তীতে যুক্ত হয় ইয়ো ইয়ো টেস্ট। নাথান ক্যালি বাংলাদেশে যুক্ত করেছেন ‘টাইম ট্রায়াল’ পরীক্ষা। তিনটি পর্যায়ে দেওয়া হয় ফল। এলিট, কম্পিটেন্ট ও লিমিটেড। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই পেয়েছেন কম্পিটেন্ট।
নিজের এই টাইম ট্রায়াল পরীক্ষা নিয়ে নাথান কেলি মঙ্গলবার গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘এটার ফল নিয়ে কম বিতর্ক হয়। যখন আপনি ইয়ো-ইয়ো বা বিপ টেস্ট করান, কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা খুব অল্পের জন্য পিছিয়ে যায়, কিন্তু তখন তাদের থামিয়ে দিয়ে বলাটা কঠিন হয়ে যায় যে তোমার টেস্ট শেষ। টাইম ট্রায়ালে ভালো জিনিস হচ্ছে, ঘড়ি মিথ্যা কথা বলে না। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যারা ইয়ো ইয়ো বা বিপ টেস্টে পাস করে, তারা টাইম ট্রায়ালেও জেতে। যারা ওখানে (বিপ বা ইয়ো ইয়ো) ভালো না, তারা এখানেও (টাইম ট্রায়াল) না।’’
ফিটনেস নিয়ে কাজ করার প্রতি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের তাড়নার কমতি দেখেন না ক্যালি। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সূচির বাস্তবতার পার্থক্যটি আবারও তুলে ধরলেন তিনি, ‘‘ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে। আজকেও সেটির প্রমাণ দেখা গেছে। যে ধরনের কন্ডিশনিং আজকে আমরা করেছি, কিছু চ্যালেঞ্জিং ড্রিল ছিল। আপনারা যদি মনে করেন এসব চ্যালেঞ্জিং নয়, তাহলে স্বাগত জানাচ্ছি একদিন আমাদের সঙ্গে এসব করতে। আপনারা তখন বুঝতে পারবেন। তাদের মানসিকতা ও প্রচেষ্টা অসাধারণ। তারা নিজেদের তাড়িত করে প্রবলভাবে।”
“আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো শারীরিক কাজ বড় পরিসরে করার সুযোগ বের করা। ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় যেমন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক বা ঘরোয়া ক্রিকেট, ১৫ সপ্তাহের মতো প্রাক-মৌসুম থাকে। আমাদের কেবল ছোট ছোট উইন্ডো থাকে। কাজেই যখনই সুযোগ মেলে, ওই শারীরিক কাজগুলো করার নিয়মিত চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের।” - যোগ করেন তিনি।
এজন্য যখনই সময় পান ক্রিকেটারদের শুধু ক্রিকেট ভিত্তিক ফিটনেস নয়, ভালো ক্রীড়াবিদদের মতো ফিটনেস পেতে সহায়তা করেন তিনি, ‘‘২০২৪ সালের এপ্রিলে যোগদানের পর থেকে আমরা গত ১৮ মাস ধরে এই টেস্টিং করে আসছি। তাই, খেলোয়াড়দের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমাদের কাছে টাইম ট্রায়াল, স্ট্রেংথ টেস্টিং এবং স্প্রিন্ট টেস্টিং জুড়ে কিছু ধারাবাহিক তথ্য রয়েছে। এবং দলটি যে উন্নতি করছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের দল, যারা এই মুহূর্তে আমাদের জন্য প্রচুর টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে। তারা কেবল তাদের ক্রিকেটের উন্নতির দিকেই নয়, বরং আরও ভালো ক্রীড়াবিদ হওয়ার দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন র জন য আম দ র ফ টন স
এছাড়াও পড়ুন:
‘ঘড়ি মিথ্যা বলে না’, তাই ১৬০০ মিটার দৌড়ানোর পরীক্ষা ক্রিকেটারদের
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এত দিন পরিচিত ছিলেন বিপ টেস্ট ও ইয়ো ইয়ো টেস্টের সঙ্গে। ফিটনেসের এসব পরীক্ষায় পাস করতে হয়েছে। একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে বিরতি দিয়ে দৌড়—তাঁদের জন্য পরীক্ষাটা ছিল এমন।
বছর দেড়েক আগে বাংলাদেশের ফিটনেস কোচের দায়িত্ব নিয়ে আসেন নাথান কেলি। তাঁর অধীন বদলে যায় ফিটনেস পরীক্ষার ধরন। এখন ক্রিকেটাররা দেন ‘টাইম ট্রায়াল’ পরীক্ষা। অ্যাথলেটিক টার্ফে বিরতি ছাড়াই ১৬০০ মিটার দৌড়াতে হয়। এশিয়া কাপের প্রাথমিক স্কোয়াডের ক্রিকেটারদের নিয়ে গত পরশু এই ‘পরীক্ষা’য় ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম হয়েছেন পেসার নাহিদ রানা।
আরও পড়ুনদল নির্বাচন বিতর্কে কোথায় ব্যতিক্রম ঢাকা২ ঘণ্টা আগেজাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষায় তিনটি মানদণ্ড ঠিক করা আছে— ‘এলিট’, ‘কম্পিটেন্ট’ বা ‘সন্তোষজনক’ ও ‘লিমিটেড’। এই মানদণ্ডে সেদিন একমাত্র এলিট ছিলেন নাহিদ, অন্যদের বেশির ভাগ ছিলেন সন্তোজনক পর্যায়ে।
কেলির পরীক্ষার ধরন কেন আলাদা? আজ মিরপুরে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার পর করা হয়েছিল এ প্রশ্ন। কেলির উত্তর, ‘মাঝেমধ্যেই তর্ক হয়, কোনটি সেরা টেস্ট। আমি টাইম ট্রায়াল ব্যবহার করি, কারণ এই পরীক্ষা নেওয়া সহজ। আপনার কোনো যন্ত্রপাতি লাগবে না অ্যাথলেটিক টার্ফে দৌড়ানোর জন্য। ক্রিকেট মাঠের সবুজ ঘাসেও এটা করতে পারবেন।’
বাংলাদেশ দলের ফিটনেস কোচ নাথান কেলি