বারান্দার ওপারে আরেকটি বারান্দা, মানে অ্যাপার্টমেন্টের। এপারে আমার বারান্দা। দুই বারান্দা সমান্তরাল নয়। ওই বারান্দা চারতলায়। এই বারান্দা ছয়তলায়। মাঝে বয়ে গেছে মহল্লার রাস্তা। ওই বারান্দায় সব মিলিয়ে তিন বা চার দিন লোকজন দেখেছি। একদিন দেখি, এক সত্তরোর্ধ্ব লোক ইজিচেয়ারে বসে জাম্বুরা খাচ্ছেন, রোদের তাপ নিচ্ছেন, তখন মনে হয় শীতকাল ছিল। কিন্তু শীতকালে কি জাম্বুরা পাওয়া যায়? আমি কনফিউসড। আরেক দিন দেখি, রাস্তা দিয়ে ‘শিলপাটা, শিলপাটা ফুটা’ বলে যখন এক লোক যাচ্ছিল, তখন এক নারী হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে ওই লোককে ডাকছিলেন। সেটা হবে কোনো এক রমজান মাসে। কারণ, লোকজন ইফতারি কিনে তাড়াহুড়া করে যে যার মতো গন্তব্যে ফিরছিল। আরেক দিন সম্ভবত, না, কিছু মনে পড়ছে না। কারণ, উম্মে গোলাপের সঙ্গে আমার পরিচয় হওয়ার পরই তাকে আমি একদিন ওই বারান্দায় দেখেছিলাম। ঝড় আসছিল। বর্ষাকাল। বারান্দার দড়িতে মেলে দেওয়া কাপড়গুলো নিতে এসেছিল। আর বাকি দিনগুলো বারান্দায় কাউকেই দেখিনি। অথচ বাসায় থাকলে আমি বেশির ভাগ সময়ই বারান্দায় কাটাই। বসে থাকি। মানুষের চলাচল দেখি। ছাদের ওপর ডিশ লাইনের তার, ঘড়ি, নির্মাণাধীন ভবনের অনেক অনেক উঁচু তলায় শ্রমিকের মাটি বা ইট তোলা দেখি।

এই এলাকা খুব একটা ভালো নয়। কিছু হাইরাইজ ভবন উঠেছে। সস্তায় মানুষ ফ্ল্যাট কিনছে বা বাড়ি ভাড়া করে থাকছে। তবে খুব গাছগাছালি আছে। রাস্তাঘাট একটু বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়। আমি ফিরছিলাম এক বিকেলে। সেদিনও বৃষ্টিতে ডোবা রাস্তা। সেদিনই প্রথম পরিচয় উম্মে গোলাপের সঙ্গে। তার এক হাতে কাঁচাবাজারের প্যাকেট, অন্য হাতে ফাইল, কাগজপত্র। এ এলাকায় রাস্তা ডুবে গেলে লোকজন সদর রাস্তা থেকে দশ টাকা রিকশাভাড়া বিশ টাকা দিয়ে আসে। কিন্তু উম্মে গোলাপ হেঁটে হেঁটে ফিরছিলেন। শাড়ির নিচটা ভিজে যাচ্ছিল, কিন্তু তুলছিলেন না। খুব হালকা পায়ে এগোচ্ছিলেন। বাসার কাছাকাছি আসতেই তাঁর হাত থেকে ফাইলসমেত কাগজগুলো পড়ে গেল। পড়ার কারণ ছিল, পেছন থেকে ক্রমাগত বেল আর রিকশওয়ালার ‘রিকশা রিকশা.

..’ আওয়াজ। যেন এক্ষুনি না সরলে তুলে দেবে ওপরে। পরিস্থিতি এমনই।

তো, খুব সাধারণ সৌজন্যবোধ থেকে আমি ওনার পানিতে ভিজে যাওয়া ফাইল ও কাগজগুলো কুড়িয়ে দিই। চুপসে গেছে সব। তিনিও সৌজন্যবশত বলেন, ‘আমি উম্মে গোলাপ। সিটি করোনেশন স্কুলে শিক্ষকতা করি।’

এরপর তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের উল্টো দিকের আমার অ্যাপার্টমেন্ট দেখিয়ে বলেন, ‘আপনি তো মনে হয় এই বিল্ডিংয়েই থাকেন!’

আমি হ্যাঁ–সূচক মাথা নাড়ি। তিনি ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে বিদায় নেন।

এসব ঘটনা অন্তত বছর পাঁচ–ছয় আগের। এর ভেতর আমি বাসা পাল্টেছি। অন্য শহরেও পোস্টিং হয়েছে। বছর দুয়েকের মাথায় আবার পুরোনো শহরে ফিরেও এসেছি।

কিন্তু পুরোনো শহর ভেতরে ভেতরে বদলে গিয়েছিল অনেকখানি। এই যেমন পোস্ট অফিসটা যেখানে ছিল, সেটি প্রায়ই বন্ধ থাকে। কলেজ রোড ধরে ভাড়াউড়ার দিকে এগোলে বাঁ পাশের ভিক্টোরিয়া মাঠে সন্ধ্যার পর কেবলই কয়েকটি বৃত্তে বিড়ির আলো জ্বলে। চিত্রালী সিনেমা হলে কেউই আর সিনেমা দেখতে যায় না। এমনকি নিম্নমধ্যবিত্তও। হলটি বন্ধ হওয়ার জোগাড়। গুহ রোডের যে পাশে সিপিবি অফিস ছিল, সেখানে একটা এনজিওর সুসজ্জিত অফিস। সন্ধ্যার পরপরই পূর্বাশা মহল্লার রাস্তা দিয়ে তরুণদের বুড়বুড়িয়া চা–বাগানে যাতায়াত বেড়ে যায়। বুড়বুড়িয়ায় গজিয়ে উঠেছে সস্তা বাংলা মদের দোকান।

পুরোনো অফিসে পুরোনো সহকর্মীরাও আর নেই। সবকিছু অচেনা। কেমন জানি, তবু মন্দ লাগে না আমার। কেননা যখন মনে হয়, এই শহরেই উম্মে গোলাপ আছে, তখন মন ভালো হয়ে যায়। যদিও জানি, দেখা হবে না আমাদের আর কোনো দিন।

কিন্তু আমি অফিস ছুটির পর অনেক অলিগলি একা একা হাঁটতাম। ওই রকম একটা বারান্দা খুঁজতাম। যে বারান্দা ছিল উম্মে গোলাপদের বাসার। ওই বারান্দা যে দেখার মতো কিছু, তা নয়। খুবই সাধারণ। নির্জন। পাতাবাহার ছিল সম্ভবত। রোদের আভা বিকেলে যেন দোলাত বারান্দাটিকে ডিঙি নৌকার মতো। রাত হলে ঘরের আলোর এপাশে বারান্দাটা ছিল ক্লান্ত কয়েদির ঘুমানোর আগের যত অবসাদ।

আসলে যেভাবে বলছি, এ সবই বানানো। এ–ও না বোঝার কথা নয়। মানুষ তার কল্পনার অনেক ছায়া ফেলে দেখে বাস্তবেও। যারা এভাবে দেখে, তারা একধরনের ন্যাচারালিস্ট রোমান্টিক।

তাদের সমস্যা অনেক। অরণ্যে গেলে সত্যজিৎ রায় বা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সাঁওতালি নাচ দেখতে ভালো লাগে। সাঁওতালি মেয়ের পায়ের গোছা দেখে কামনা জাগে। তারা চাপা চাপা লুকানো সত্যগুলো বলে উদাস হয়। এই সব সত্য বলতে তাদের অরণ্য লাগে বা সমুদ্র। শৈশব মনে পড়ে। নক্ষত্রের আলো কেন এক ভাগ স্থলে পড়ে আর তিন ভাগ জলে, এ নিয়ে তর্কে মেতে ওঠে। আমি অমন নই। আমার ভরদুপুরেও নদীকে চিলেকোঠায় পেয়ে যৌন বাসনা জেগেছিল। ওর কাঁধে হাত রেখেছিলাম। জড়িয়ে ধরেছিলাম। ওসব তো একটু অরাবীন্দ্রিকই, তাই না?

কিন্তু আমার কাছে বারান্দাটা অন্য রকম। সব বারান্দা নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু উম্মে গোলাপের বারান্দাটা! এর কারণ আর কিছুই নয়, ওই যে বর্ষামুখর সন্ধ্যায় দেখা হয়েছিল, তার ভেজা জিনিসগুলো তার হাতে তুলে দেওয়ার আগে বা পরে তিনি বলেছিলেন ‘আমি উম্মে গোলাপ’, সেই যে বলা, সেই যে চাহনি, এরপর লম্বা বেণিকে একপাশে টেনে নিয়ে চলে যাওয়া...মুহূর্তটা আমার ভেতর প্রথম একটা বারান্দার ছবি এঁকে দেয়।

আমার এক স্থপতি বন্ধু একদিন আমায় বলেছিলেন, ঘর হচ্ছে ঘর। ঘরের বারান্দা হলেও চলে, না হলেও চলে। তবু ঘরের সঙ্গে বারান্দা লাগে। কেন জানো? ঘরে যখন মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে, তখন বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। একটু বুক ভরে নিশ্বাস নেয়, আকাশ দেখে, আশপাশ দেখে। কিন্তু বারান্দায় কেউ ঘুমায় না। ঘরেই ঘুমায়। মানুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বারান্দা থাকে। ধরেন, আপনি কারও জীবনে বারান্দা। ওই রকম আরকি! আপনাকে ঘর করল না। সেও বারান্দা হয়ে আপনার কাছে এল না। কিন্তু মাঝেমধ্যে ঘরে হাঁপিয়ে উঠলে বারান্দায় মানে আপনার কাছে এসে দাঁড়াল। তার ঘরের সঙ্গে আপনি সারা জীবন বারান্দা হয়ে ঝুলে রইলেন। তার ঘর থাকল। সংসার থাকল। বাচ্চাকাচ্চা থাকল। সব থাকল। আপনি অরক্ষিত ঝুলে থাকা বারান্দা হয়েই তার জীবনে থেকে গেলেন।

স্থপতি বন্ধুর কথাটি আমার মন্দ লাগেনি। কারণ, এক অর্থে দীর্ঘদিন থেকেই আমি ঝুলে থাকা মানুষ। যেন কার্নিশে আমার দুহাত শক্ত করে ধরা, পাগুলো ঝুলে আছে, শুধু ছিটকে পড়ার অপেক্ষা। এক অর্থে আমার ঘরও নেই। যেন উদ্বাস্তু মানুষ। আমি বিশ্বাস করতাম, সব সম্পর্কই রাজনৈতিক। কিন্তু বার্লিনে প্রাচীর ধসে পড়ল আর এদিকে ঢাকায় পল্টনে কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে দেয়াল উঠল। আমার মাথার ওপর থেকে ধীরে ধীরে সেই যে ছাদ সরে গেল, মানে ঘরহীন হয়ে গেলাম আমি। একটা বাসা ছিল আমাদের। আব্বা, আম্মা, ভাই, বোন সবাই ছিল। একে একে আব্বা-আম্মা মারা গেলেন। দুই ভাই, এক বোন ইউরোপ আর কানাডায় সেটেল করল আর ছোট ভাইটা কেন এনকাউন্টারে মারা গেল, জানি না। সে কোনো অ্যান্টিসোশ্যাল ছিল না। তবে থুতনিতে দাড়ি ছিল, নামাজি ছিল। তার লাশের পাশে পাওয়া গেল কিছু ইসলামি জিহাদি বই।

ওই বাসাও বিক্রি করে দিয়েছিল আব্বা–আম্মা মারা যাওয়ার পর সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে। ওই বাসায় এখন অন্যের বসবাস। আমি দূর থেকে ওই বাসা দুই–তিন দিন দেখেছি।

আমাকে একজন ভালোওবাসত। নাম শ্যামলিমা। আমার কথাগুলো তার খুব স্ববিরোধী মনে হতো।

কখনো বলতাম, শরীর শরীরই। শরীরকে স্পর্শ করলেই অপবিত্র হয়ে যায় না। অপবিত্র বা পবিত্র ধারণা বলেও কিছু নেই। আবার দেখা গেল দুদিন পর বলেছি, ইন্টেলেকচুয়ালি কমিউনিকেট না করলে তো কোনো নারীর সঙ্গে শোয়ার সম্পর্কই আসে না। এ রকম অনেক অনেক কথা। যেমন একদিন বলেছিলাম, আমার ভেতর দেশপ্রেম খুব কম কাজ করে। কারণ, জাতীয়তাবাদী হওয়াটাকে আমার কাছে ধার্মিক হওয়ার শামিল মনে হয়।

শ্যামলিমা বিভ্রান্ত হয়েছিল এবং এক সরকারি আমলাকে বিয়ে করে এখন সম্ভবত সুখী জীবন যাপন করছে।

মানে, ঘর বলতে যদি আশ্রয় বোঝায়, তবে একে একে সব আশ্রয়ই আমি যখন হারিয়ে ফেলে জগতের সব অবসাদ নিয়ে বারান্দায় বসে ঝিমোতাম, তখনই উম্মে গোলাপের বারান্দা আবিষ্কার করি।

পুরোনো শহরে কত দিন হলো ফিরে এসেছি, উম্মে গোলাপের বারান্দাটা দেখি না।

এক সাপ্তাহিক ছুটির সন্ধ্যায় আমার মধ্যে কী যে হয়, মনে হয় কেউ আমাকে ডাকছে। মনে হয় অপেক্ষা করছে। মনে হয় পানিতে ডুবে আছে রাস্তা। চারদিকে বড় বড় গাছ। শান্ত রাস্তা। স্তব্ধ সন্ধ্যা। ওই সন্ধ্যার আলোছায়ায় এক জোড়া চোখ দেখা যায়। মনে হয়, ওই চোখের ভেতর থেকে দুটো নীল কালো ভিজে যাওয়া মার্বেল গড়িয়ে পড়ছে।

আমি সেই সন্ধ্যায় এরপর আর কীভাবে কী ঘটল, কিছুই জানি না। সত্য কখনো কখনো নয়, সব সময়ই গল্পের চেয়ে অবাক করার বিষয়।

আমি দাঁড়িয়ে আছি উম্মে গোলাপের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে। কলিং বেল টিপেছি।

তিনি দরজা খুললে কী বলব আমি?

ঘর নেই, একটি বারান্দা হতে চেয়েছিলাম?

জানি না। বেল বাজছে। আমি দরজার এপাশে দাঁড়িয়ে। ওপাশে দরজা খুলে দাঁড়ালেন এক বৃদ্ধ, সেই সত্তরোর্ধ্ব চোখ, তারও অনেক পেছনে দাঁড়ানো উম্মে গোলাপ।

আমি চোখ থেকে যে দুটো মার্বেল পড়ে যেতে দেখেছিলাম, ওগুলো দেখি ওই বৃদ্ধের চোখে।

অপেক্ষার চোখ আমার আব্বার মতন।

আমি কিছু না বলেই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যেতে থাকি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ব র ন দ র ভ তর একদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নাঙ্গলকোটে বিএনপির সম্মেলন, ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও বিদ্যালয়-মাদ্রাসায় আসে। কিন্তু, মাঠে সম্মেলনের মঞ্চ, মাইকের আওয়াজ ও শত শত নেতাকর্মীর ভিড় দেখে শিক্ষকরা ক্লাস বন্ধ করতে বাধ্য হন। কিছু বিদ্যালয়ে সকালে কয়েক ঘণ্টা ক্লাস হলেও পরে মাইকের আওয়াজ ও ভিড়ের কারণে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন

যোগ্য হয়েও রাবির শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়ার অভিযোগ

ক্লাস বন্ধ করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলী ইউনিয়নের বটতলী এম এ মতিন উচ্চ বিদ্যালয়, বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা, বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জোড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা বাজার সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসা এবং জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের দুয়ারিয়া জা’মিউল উলূম কওমী মাদ্রাসা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫ ইউনিয়নের সম্মেলনের তারিখ ১২ ও ১৩ আগস্ট। এর মধ্যে প্রথম দিনে সাত ইউনিয়নের সম্মেলন হয়। দৌলখাঁড় ও আদ্রা উত্তর ইউনিয়নের সম্মেলন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে হলেও বাকি পাঁচ ইউনিয়নের সম্মেলন হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে। একই মাঠে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজির আহমেদ ভূঁইয়া বলেছেন,“নাঙ্গলকোটে যে প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন সম্মেলন হচ্ছে, তা দলীয় গঠনতন্ত্রের বিরোধী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দলীয় কার্যক্রম করার বিধান আমাদের দলে নেই। এটি দলের বদনাম করার শামিল। এ ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করব।”

নাঙ্গলকোট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, “বিএনপির ইউনিয়ন সম্মেলনের কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কিছু সময় ক্লাস চালিয়ে পরে ছুটি দিয়েছে।”

নাঙ্গলকোট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেছেন,“বিষয়টি আমার জানা ছিল না। রাজনৈতিক সভার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রুবেল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ