ডাকসুতে প্রথম মনোনয়নপত্র জমা ছাত্রলীগের সিজারের, বাদ যাচ্ছে প্রার্থিতা
Published: 12th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার। তবে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় এবং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ভোটার তালিকা ও প্রার্থীতা—দুটো থেকেই তাকে বাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জাওয়াদ ইবনে ফরিদ জুলিয়াস সিজারের নাম ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড.
চিফ রিটার্নিং অফিসার ও প্রক্টরের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আপনার অবগতির জানানো যাচ্ছে যে, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদারের বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শিক্ষার্থী নির্যাতনের সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় ডাকসু ভোটার তালিকা থেকে ওই শিক্ষার্থীর নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
চিঠির বিষয়ে চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, তিনি হল সংসদ নির্বাচনের রিটার্ন কর্মকর্তার থেকে চিঠি পেয়েছেন। সিজারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ হলে নির্বাচন কমিশনারগণ মিটিংয়ে মাধ্যমে তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেবেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন এবং আধা ঘণ্টা পরই জমা দেন সিজার। এটা ছিল ওই পদে জমা দেওয়া প্রথম মনোনয়ন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই শিক্ষার্থীরা বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরবর্তীতে তারা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে ‘ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসমুক্ত’ ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি জানান।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘ডিম সিজারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘সন্ত্রাসী লীগারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘সফট লীগারের মনোনয়ন, বাতিল করো করতে হবে’, ‘ছি ছি, ভিসি’, ‘সন্ত্রাসী সিজারের মনোনয়ন, মানি না মানবো না’, ‘গুপ্ত লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘সফট লীগার মনোনয়ন নেয়, প্রশসন কী করে ‘ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে সিজারের ভোটার ও প্রার্থীতা বাতিলের আল্টিমেটাম দেন। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
তবে বেঁধে দেওয়া সময়ের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন জুলিয়াস সিজারের ভোটার তালিকা ও প্রার্থীতা বাতিলের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র মন ন অফ স র র র মন
এছাড়াও পড়ুন:
আট দিনে এনসিপির ১ হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি, লক্ষ্য ৩ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করার পর গত আট দিনে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মনোনয়নপত্র বিতরণের পূর্বঘোষিত সময় শেষ হলেও তা আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনা যাবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এ সময় তিন হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে আমরা এই লক্ষ্যমাত্রা ইনশা আল্লাহ ছুঁতে পারব।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা জনগণের জনপ্রতিনিধিদের সংসদে পাঠানোর জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র ছেড়েছিলাম। ইতিমধ্যে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। আমরা মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। চিকিৎসক, আইনজীবী, পেশাজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আলেম-ওলামা, শিক্ষক—সব জায়গা থেকে আমরা আবেদন পাচ্ছি। জনগণের উদ্দীপনা ও আগ্রহ দেখে আমরা এই সময়সীমা আরও বাড়িয়েছি। এটা আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।’
বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়া অনলাইন থেকেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান।
সাংবাদিকদের মধ্যে যাঁরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, তাঁদেরও এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘কারণ, আপনাদের যে মজুরি, এটা বাংলাদেশে এখনো ঠিক হয়নি। আপনারা সংসদে গিয়ে আপনাদের মজুরি, মালিকদের নিষ্পেষণ-নিপীড়ন নিয়ে কথা বলার জন্য মনোনয়নপত্র তুলবেন।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ পুরো বাংলাদেশের মানুষকে আমরা জানাতে চাই, আমরা দক্ষ ও যোগ্য প্রতিনিধি সংসদে পাঠাতে চাই। আমরা কোনো গডফাদারকে সংসদে পাঠাতে চাই না, চাঁদাবাজদের পাঠাতে চাই না, সন্ত্রাস যারা করে, তাদের পাঠাতে চাই না। আমরা কিছু ভালো মানুষকে পাঠাতে চাই।’
এর আগে ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। প্রতিটি মনোনয়নপত্রের মূল্য ১০ হাজার টাকা। তবে জুলাই যোদ্ধা এবং স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের জন্য মনোনয়নপত্রের দাম ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।