চাকসুর গঠনতন্ত্রে প্রশাসনের নারীবিদ্বেষী মনোভাব স্পষ্ট: ছাত্রদল
Published: 12th, August 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) গঠনতন্ত্রে প্রশাসনের নারীবিদ্বেষী মনোভাব স্পষ্ট বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে চাকসু নির্বাচন ও ক্যাম্পাস পরিস্থিতি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান। এ সময় তাঁরা প্রশাসনের করা চাকসুর নতুন গঠনতন্ত্রের সমালোচনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে এই দুই নেতা বলেন, চাকসুর গঠনতন্ত্রের ৭(ক) ধারায় দপ্তর সম্পাদক পদটি শুধু পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এটি নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়নের পরিপন্থী হিসেবে নির্দেশিত হয়েছে। বর্তমান প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নারীবিদ্বেষী মনোভাব দেশজুড়ে সমালোচিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান রক্ষার্থে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য প্রশাসনের কাছে ছাত্রদল দাবি জানাচ্ছে।
এর বাইরেও চাকসুর গঠনতন্ত্রে খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়টি না থাকা, উপাচার্যের ক্ষমতা বেশি থাকা, নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকার সমালোচনা করেছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি এমফিল ও পিএইচডির শিক্ষার্থীরা প্রার্থী হতে পারবেন, এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। লিখিত বক্তব্যে তারা জানায়, ‘চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারে প্রশাসন দুই দফা ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। সর্বশেষ বৈঠকে চাকসুর প্রার্থিতার ক্ষেত্রে নিয়মিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই প্রার্থী হতে পারবেন, এমন কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা গেল এমফিল ও পিএইচডিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা প্রার্থী হতে পারবেন। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত তাদের আগের প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটায়। একটি বিশেষ সংগঠন ছাড়া চাকসুসংক্রান্ত সব অংশীজনের সম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রশাসন কী কারণে পরিবর্তন করেছে, সে ব্যাপারে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা ওয়াকিবহাল নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শাখার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মামুনুর রশীদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.
গঠনতন্ত্র নিয়ে ছাত্রদলের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) ও চাকসু গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন চাকসু নির্বাচনে কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে চাকসু নির্বাচন কমিটির সভাপতি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গঠনতন্ত্র সংস্কারের বিষয় প্রশাসনের হাতে। তিনি এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি।
অদৃশ্য শক্তি দখলদারি ও নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টা চালাচ্ছে
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অদৃশ্য একটি শক্তি দখলদারি কায়েমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অপচেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি হলের ডাইনিংয়ের খাবারে মিল সিস্টেম চালুর মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার, মব সৃষ্টি, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ ও শ্রেণিকক্ষকে রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছে।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘শহীদ হৃদয় ও ফরহাদদের রক্তে পাওয়া এই মুক্ত ক্যাম্পাসে আবার কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তির জন্ম হোক, সেটা আমরা চাই না। গুপ্ত কায়দায় শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করা হলে ছাত্রদল তা প্রতিরোধ করবে। সাধারণ শিক্ষার্থীর পরিচয় দিয়ে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা শিক্ষার্থীদের দ্বিধাবিভক্ত করেছেন। নিজেদের রাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে তাঁরা ক্যাম্পাসে এখনো বেশ তৎপর। বিশেষ ওই সংগঠনকে প্রত্যক্ষ মদদ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে বিরুদ্ধে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ছ ত রদল র জন ত স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
দল থেকে বহিষ্কৃত ওসমান পরিবারের দোসররা আপনার আশপাশে : টিপু
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু মডেল মাসুদকে হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া এখানে সমীচীন নয়, তারপরও বলতে চাই নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে যারা নতুন এসেছেন, বিশেষ করে কয়েকজন শিল্পপতি, তারা যেন দলের গঠনতন্ত্র ও চেইন অব কমান্ড মেনে কাজ করেন।
কিন্তু মাত্র কয়েকদিন আগে যোগদান করেই আপনি দলের ব্যানার ব্যবহার করে পাল্টা কাজ করছেন। আপনার আশপাশে রয়েছেন ওসমান পরিবারের দোসররা, যারা দল থেকে বহিষ্কৃত।
আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের কোনো ভূমিকা ছিল না, বরং তারা কর্মীদের ভয় দেখাতেন। গতকাল রাতে বন্দর ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে ঢাকা শরী মন্দিরে এক বক্তব্যে তিনি এ সতর্কতা জানান।
টিপু আরও বলেন, আজ আপনি পূজা মণ্ডপে গিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন এবং বলছেন দলে বিভক্তি করবেন না। অথচ বিভক্তি তো আপনিই করছেন। আপনাকে এ দায়িত্ব কে দিয়েছে? তারেক রহমান কি দিয়েছেন? দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও আপনি তা করেননি।
তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনি যদি চেইন অব কমান্ড ভেঙে দলকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেন, তবে বিগত বছরগুলোতে যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, তারা কিন্তু কোনোভাবেই ছাড় দেবেন না। আমরা তিল তিল করে এই দলকে দাঁড় করিয়েছি।
আপনার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকানা যেমন আপনার, তেমনি বিএনপি আমাদের ঘাম ও রক্তের বিনিময়ে গড়ে তোলা সংগঠন। একে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করার সাহস দেখাবেন না।
শেষে তিনি মডেল মাসুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি দলে এসেছেন, স্বাগত জানাই। তবে দলের আদর্শ, গঠনতন্ত্র ও নেতৃত্বকে অমান্য করে বিভক্তি তৈরি করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে প্রস্তাব রাখব। ওসমান পরিবারের দোসরদের পৃষ্ঠপোষকতা করে বিএনপিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
এ সময় আরো সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওত হোসেন খান ও মহানগরের আরো অনেক নেতৃবৃন্দ ও নারায়ণগঞ্জ পূজা পরিশোধের নেতৃবৃন্দ।