সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি ক্যালেন পাড়ের পুলে যাওযার সড়কে নিত্য ঘটছে ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই এসব অপরাধীদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন  শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও বসবাসরত সাধারণ নিরীহ বাসিন্দারা। 

শিল্প-বাণিজ্যসমৃদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ। ইপিজেডসহ এই এলাকায় অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ উপজেলায় দিন দিন বেড়েছে ঘনবসতি। বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঘর ভাড়া নিয়ে অনেকেই ইপিজেডে বিভিন্ন ফ্যাপ্টোরি ও গার্মেন্টসে চাকরি করে জীবন জীবিকা জন্য।

কর্মশেষে সন্ধা হলেই দেখা যায় অনেক পোশাক শ্রমিক ছেলে-মেয়েরা রাস্তা দিয়ে হেটে যেতে দেখা যায়। এসব রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীরা ওতপেতে থাকে। 

আবার অনেক সময় দেখা যায় ডিএনডি লেকেরপার ঘুরতে এসোও চিনতেই কারীদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে অনেকেই। ছিনতাইকারীরা মোবাইল, টাকা আবার অনেক সময় ছেলে মেয়েদের ধরে নিয়ে ফিটিং দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেয় মোবাইল, টাকা।

এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় সচেতন কিছু ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায় সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ড মিজমিজি পাগলা বাড়ী এলকার মাদক সেবনকারী ও ছিনতাইকারি জনি, জজুসহ তাদের একটি বিশাল বাহিনী রয়েছে।

এক নারী শ্রমিক জানান, গত রবিবার সন্ধার পরে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে তিনজন অল্প বয়সী তরুণ তাকে আটকে সুইচ গিয়ার (চাকু) ঠেকিয়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান  আমরা সব সময় এই সকল রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করি ছিনতাইকারীরা চাকু দেখিয়ে বলে এ বিষয়ে কারো সাথে অথবা পুলিশকে কিছু জানালে ছিনতাইকারীরা চাকু দেখিয়ে বলে মেরে ফেলবো। আমাদের জীবন রক্ষা ও চাকরি করে জীবন-জিবীকা করতে হয়। তাই ভয়ে অনেক সময় অনেক কিছু করতে পারিনা। 

আমরা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এসব ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হোক। এতে দেশ ও সমাজের মঙ্গল হবে। আমরা সাধারণ শ্রমিকরাও শান্তিতে কর্ম ও জীবন জীবিকা করে পরিবার নিয়ে থাকতে পারবো।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ছ নত ই স দ ধ রগঞ জ ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি ২৩ সংগঠনের

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটের’ (চক্র) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। তারা বলেছে, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিসিএসএম।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিসিএসএম। এতে বলা হয়, অতীতে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে এবং কোনোভাবেই যেন তারা নতুন করে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হতে না পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সাবেক সংসদ সদস্য লোটাস কামালের (সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল) পরিবারসহ সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণে জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত স্থগিত করার মালয়েশিয়ার অনুরোধে বাংলাদেশ রাজি হয়েছে।

এসব খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বিসিএসএম বলেছে, মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি না দেওয়া এবং অভিযোগের পুনঃ তদন্ত এবং বিচারিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছে তারা। তা ছাড়া এই সিন্ডিকেটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে অভিযোগ আছে, সেই অগ্রগতি সম্পর্কেও সাধারণ নাগরিকদের অবহিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে বিসিএসএম। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং বিসিএসএম এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক শ্বেতপত্রে, গণমাধ্যমে গত এক বছরে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে একেকজন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, যার সঙ্গে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই সিন্ডিকেট জড়িত। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দশজনের সিন্ডিকেট হয়েছিল এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে ঘিরে নানা অনিয়মের খবর নতুন নয়। কিন্তু কখনোই তাদের বিচার হয়নি।

বিসিএসএমের চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী ও কো–চেয়ার সৈয়দ সাইফুল হকের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তারা আশঙ্কা করছেন, এখন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যদি জবাবদিহি ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পায়, তবে একই ধরনের সিন্ডিকেট আবারও গড়ে উঠবে। বিসিএসএম আহ্বান জানাচ্ছে, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরে শ্রমবাজার উন্মোচন করতে গিয়ে সিন্ডিকেট নির্মূল করার বিষয়টি যেন গুরুত্ব না হারায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি নাগরিক সংগঠনের জোট বিসিএসএম অতীতেও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আরেক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল আবার যেন ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

২৩ সংগঠন হচ্ছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), বাস্তব, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাসুগ-ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রাইট যশোর, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (ইনাফি), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (বিসিডব্লিউডব্লিউএফ), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), বোয়াফ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (ডেভকম) লিমিটেড, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকারস, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ), কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ