পুতিন না ট্রাম্প— কে কাকে আসলে ফাঁদে ফেলছেন
Published: 13th, August 2025 GMT
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের আসন্ন আলাস্কা বৈঠক নিয়ে জল্পনা–কল্পনার শেষ নেই। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই তাদের প্রথম বৈঠক।
এদিকে ইউক্রেনে ভলোদিমির জেলেনস্কি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করছেন ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। জেলেনস্কি বলেন, এটি কখনোই হওয়ার নয়।
এদিকে ইউরোপের দেশগুলো (যারা নিজেরা নিজেদের রক্ষা করতে অক্ষম এবং সামষ্টিক অক্ষমতার কারণে কোনোদিনই সেটি পারবে না) বৈঠকের টেবিলে আসন দাবি করেছে।
বৈঠকে ইউরোপীয়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে ট্রাম্প তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে পাঠিয়েছেন যাতে তাদের বুঝিয়ে–শুনিয়ে শান্ত রাখা যায়। তিনি তাঁর বসের নির্দেশমতোই কাজ করবেন। তিনি বলেন ট্রাম্প–পুতিন চুক্তি বর্তমান যুদ্ধরেখার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত।
এর বাইরে ট্রাম্প–পুতিন চুক্তি কেমন হতে পারে সেটি নিয়ে একজন শুধুই জল্পনাটাই করতে পারে। এটা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানোর মতো ব্যাপার। তবে ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন এবং রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান।
আরও পড়ুনপুতিনের যে সাত সত্যি জানেন না ট্রাম্প২৩ এপ্রিল ২০২৫পুতিন ও রাশিয়ার লক্ষ্য পরিষ্কার ও সুনির্দিষ্ট। সন্দেহ নেই যে ট্রাম্পও সেগুলো ভালো করেই জানেন। পুতিনের নেতৃত্বে রুশ রাজনীতিবিদেরা এগুলো বারবার করে বলে এসেছেন।
পুতিন ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে যে সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, পুতিন উইটকফকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, দুজনেই হাস্যোজ্জ্বল।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে আগে থেকেই অনেক প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এর কোনোটাতেই ইউক্রেন বা ইউক্রেনের কোনো নেতাকে সম্পৃক্ত করা হয়নি।
পূর্বপ্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পুতিন ও উইটকফের মধ্যে আলোচনা শেষ হতে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। এই বৈঠকের ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ায় উইটকফ–পুতিন বৈঠকের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে একটি বৈঠকের ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে।
এর বাইরে আমরা জানি ট্রাম্প এমন একটি চুক্তি চান যা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। কেউ এটিকে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ বলতে পারেন (যেটির বিরুদ্ধেই মূলত জেলেনস্কি লড়াই করছেন); তবে ট্রাম্পের ভাষায়, এটি একটি যুদ্ধবিরতি।
ট্রাম্প এমন কোনো প্রস্তাব তৈরি করতে পারবেন না, যেটা আমেরিকানদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। ইউরোপের দিক থেকে ইতিবাচক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম। আমরা আসলে জানি না ট্রাম্প একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সত্যিই সিরিয়াস, নাকি পুতিনকে ফাঁদে ফেলছেন।কিন্তু চুক্তির মধ্যে যদি আরও কিছু অমীমাংসিত বিষয় না থাকত, তাহলে ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকে বসার কোনো কারণ ছিল না। আর এই ‘অন্যান্য বিষয়’ই সবচেয়ে রহস্যময় ও অজানা।
সবাই জানে এবং জেলেনস্কিও জোরগলায় নিশ্চিত করেছেন, যে তিনি একচিলতে ভূখণ্ডও ছাড় দেবেন না। জেলেনস্কিকে রাজি করানোর মতো কোনো বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়া কঠিন এবং সম্ভবত ভবিষ্যতে ইউক্রেনের অন্য কোনো নেতাও (যদি না তিনি রাশিয়ার হাতের পুতুল হন, আর সে ক্ষেত্রে তাঁর রাজনৈতিক আয়ুষ্কাল খুবই সংক্ষিপ্ত হবে) এমন প্রস্তাবে রাজি হবেন না।
জেলেনস্কির দৃষ্টিকোণ (সম্ভবত এখন আর ইউক্রেনীয় জনগণের সমর্থন পাচ্ছেন না। কারণ, তাঁরা ক্রমে যুদ্ধ ও প্রাণহানিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন) থেকে বিবেচনা করলে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার মানে হচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পতন। ইউক্রেনকে পুরোপুরি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে সঁপে দেওয়া।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিন না ট্রাম্প— কে কাকে আসলে ফাঁদে ফেলছেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের আসন্ন আলাস্কা বৈঠক নিয়ে জল্পনা–কল্পনার শেষ নেই। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই তাদের প্রথম বৈঠক।
এদিকে ইউক্রেনে ভলোদিমির জেলেনস্কি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করছেন ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। জেলেনস্কি বলেন, এটি কখনোই হওয়ার নয়।
এদিকে ইউরোপের দেশগুলো (যারা নিজেরা নিজেদের রক্ষা করতে অক্ষম এবং সামষ্টিক অক্ষমতার কারণে কোনোদিনই সেটি পারবে না) বৈঠকের টেবিলে আসন দাবি করেছে।
বৈঠকে ইউরোপীয়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে ট্রাম্প তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে পাঠিয়েছেন যাতে তাদের বুঝিয়ে–শুনিয়ে শান্ত রাখা যায়। তিনি তাঁর বসের নির্দেশমতোই কাজ করবেন। তিনি বলেন ট্রাম্প–পুতিন চুক্তি বর্তমান যুদ্ধরেখার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত।
এর বাইরে ট্রাম্প–পুতিন চুক্তি কেমন হতে পারে সেটি নিয়ে একজন শুধুই জল্পনাটাই করতে পারে। এটা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানোর মতো ব্যাপার। তবে ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন এবং রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান।
আরও পড়ুনপুতিনের যে সাত সত্যি জানেন না ট্রাম্প২৩ এপ্রিল ২০২৫পুতিন ও রাশিয়ার লক্ষ্য পরিষ্কার ও সুনির্দিষ্ট। সন্দেহ নেই যে ট্রাম্পও সেগুলো ভালো করেই জানেন। পুতিনের নেতৃত্বে রুশ রাজনীতিবিদেরা এগুলো বারবার করে বলে এসেছেন।
পুতিন ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে যে সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, পুতিন উইটকফকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, দুজনেই হাস্যোজ্জ্বল।
এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে আগে থেকেই অনেক প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এর কোনোটাতেই ইউক্রেন বা ইউক্রেনের কোনো নেতাকে সম্পৃক্ত করা হয়নি।
পূর্বপ্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পুতিন ও উইটকফের মধ্যে আলোচনা শেষ হতে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। এই বৈঠকের ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ায় উইটকফ–পুতিন বৈঠকের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে একটি বৈঠকের ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে।
এর বাইরে আমরা জানি ট্রাম্প এমন একটি চুক্তি চান যা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। কেউ এটিকে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ বলতে পারেন (যেটির বিরুদ্ধেই মূলত জেলেনস্কি লড়াই করছেন); তবে ট্রাম্পের ভাষায়, এটি একটি যুদ্ধবিরতি।
ট্রাম্প এমন কোনো প্রস্তাব তৈরি করতে পারবেন না, যেটা আমেরিকানদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। ইউরোপের দিক থেকে ইতিবাচক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম। আমরা আসলে জানি না ট্রাম্প একটি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সত্যিই সিরিয়াস, নাকি পুতিনকে ফাঁদে ফেলছেন।কিন্তু চুক্তির মধ্যে যদি আরও কিছু অমীমাংসিত বিষয় না থাকত, তাহলে ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকে বসার কোনো কারণ ছিল না। আর এই ‘অন্যান্য বিষয়’ই সবচেয়ে রহস্যময় ও অজানা।
সবাই জানে এবং জেলেনস্কিও জোরগলায় নিশ্চিত করেছেন, যে তিনি একচিলতে ভূখণ্ডও ছাড় দেবেন না। জেলেনস্কিকে রাজি করানোর মতো কোনো বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়া কঠিন এবং সম্ভবত ভবিষ্যতে ইউক্রেনের অন্য কোনো নেতাও (যদি না তিনি রাশিয়ার হাতের পুতুল হন, আর সে ক্ষেত্রে তাঁর রাজনৈতিক আয়ুষ্কাল খুবই সংক্ষিপ্ত হবে) এমন প্রস্তাবে রাজি হবেন না।
জেলেনস্কির দৃষ্টিকোণ (সম্ভবত এখন আর ইউক্রেনীয় জনগণের সমর্থন পাচ্ছেন না। কারণ, তাঁরা ক্রমে যুদ্ধ ও প্রাণহানিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন) থেকে বিবেচনা করলে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার মানে হচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পতন। ইউক্রেনকে পুরোপুরি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে সঁপে দেওয়া।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন