মাইন বিস্ফোরণে হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ। ওই পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। বাকি তিনটি পায়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে হাতিটিকে। পায়ের ক্ষতের যন্ত্রণা নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে হাতিটি। গত রোববার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাতিটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্ত ও পানিশূন্যতায় হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে নিবিড় পরিচর্যা দরকার আহত হাতিটির।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আহত হাতিটি গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা দক্ষিণ হামিদিয়াপাড়া এলাকায় ছিল। সেখানে বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা হাতিটির তত্ত্বাবধান করছেন। গতকাল দুপুরে হাতিটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাতিটির জন্য আশপাশে বেশ কিছু কলাগাছ কেটে রাখা হয়েছে।

রক্তশূন্যতা কীভাবে দূর করা যায়, সেটিই হাতিটির চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার দিয়ে রক্তশূন্যতা কাটাতে হবে। তাই হাতিটির দীর্ঘদিন নিবিড় পরিচর্যা দরকার। না হলে এটিকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হবে।হাতেম সাজ্জাদ মো.

জুলকারনাইন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক

কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন জানান, গতকাল দুপুরে হাতিটিকে ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে শান্ত করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হাতিটির একটি পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। প্রচণ্ড ফুলে গেছে ওই পা। তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের আঘাতের সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় হাতিটির শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পানি ও খাবার না পাওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়েছে হাতিটি। রক্তশূন্যতা কীভাবে দূর করা যায় সেটিই হাতিটির চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত খাবার দিয়ে রক্তশূন্যতা কাটাতে হবে। তাই হাতিটির দীর্ঘদিন নিবিড় পরিচর্যা দরকার। না হলে এটিকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হবে।’

আরও পড়ুনমাইন বিস্ফোরণে সাড়ে ৮ বছরে পা হারালেন ৪৪ জন০১ জুলাই ২০২৫

বন বিভাগের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সরকার বলেন, সীমান্তের মিয়ানমারের অংশে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে মাদি হাতিটি আহত হয়। আহত অবস্থায় সেটি গত রোববার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ি ও আশারতলির মাঝামাঝি সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে।

বন বিভাগ হাতিটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ। হাঁটাচলাও খুব একটা করতে পারছে না। বয়স্ক হাতিটি পাল হারিয়ে একাকী হয়ে পড়ায় মানসিকভাবেও খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তে মাইন কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ; কেউ পঙ্গু, কেউ নিঃস্ব০৩ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত শ ন যত আহত হ

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা

দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। 

আরো পড়ুন:

চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন

১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা

পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।  

বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ