গাজীপুর-১: আলোচনায় বিএনপির ৫ প্রার্থী, চমক দেখাতে চায় জামায়াত
Published: 13th, August 2025 GMT
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর ও গাজীপুর সিটির একাংশ) আসনে আলোচনায় রয়েছে বিএনপির হেভিওয়েট পাঁচ নেতা। তাদের বিপক্ষে প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। প্রথমবারের মতো এই আসনে চমক দেখাতে চায় দলটি।
গাজীপুর-১ আসনটি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলা এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ হতে ১৮ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। শিল্প-কারখানা ও কৃষির সংমিশ্রণে গঠিত এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৬৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫১৫ জন এবং নারী ভোটার ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৮ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১১ জন। তবে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন এই আসনের সীমানা সিটি করপোরেশন থেকে ৬ ওয়ার্ড কমিয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা নিয়ে গাজীপুর-১ সংসদীয় আসন প্রস্তাব করেছে।
এই আসনে বিএনপি থেকে ভোটের মাঠে আলোচনায় রয়েছে হেভিওয়েট পাঁচ জন নেতা। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ূন কবীর খান ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার।
অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী এরইমধ্যে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের দলীয় নেতা নির্বাচন করে ফেলেছেন। তারা সাবেক সচিব শাহ আলম বকশীকে গাজীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি মাঠে কাজও শুরু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর-১ আসনে বিএনপি এবং জামায়াতের ভোটব্যাংক থাকলেও দল দুটি থেকে কেউ কখনো জয়লাভ করতে পারেনি। তবে বিএনপি থেকে পৌর মেয়র, ভাইসচেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছে। জামায়াত থেকে হয়েছিল ভাইস চেয়ারম্যান।
তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে। অনেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছে। ভোটের রাজনীতির কারণে গোপনে অনেকেই তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানা গেছে। এই আসনে স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ ক্ষমতা পায়নি। ফলে তাদের ভোট ফলাফলে ভূমিকা রাখবে।
এদিকে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গাজীপুরে প্রকাশ্যে সংগঠনের কর্মকাণ্ড চালাতে পারেনি জামায়াত। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নির্বিঘ্নে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। দলটি তৃণমূলে সভা-সমাবেশ করছে। নেতারা ধর্মীয় ও সামাজিক নানা আয়োজনে যোগ দিয়ে জনগণের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে কাজ করছেন। এবার আসনটিতে চমক দেখাতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে দলটির উচ্চপর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মীরা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এ আসনের প্রার্থী সাবেক সচিব শাহ আলম বকশী বলেন, “নির্বাচনে ভোটার হচ্ছে প্রাণ। আমাদের নেতাকর্মী ও আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। তাদের সুখ-দুঃখের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করছি। আমরা দোয়া ও ভোট চাচ্ছি তাদের কাছে। খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি ভোটারদের।”
বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে হেভিওয়েট নেতা ছিল চার জন। তবে বাবার রাজনৈতিক সূত্র ধরে হঠাৎই আলোচনায় চলে এসেছে চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী। এরইমধ্যে তিনি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব পদ পেয়েছেন। এরপর থেকেই সংসদ সদস্য পদে তার মনোনয়ন নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে।
তবে কালিয়াকৈরে বিএনপির বিভিন্ন কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও মিছিল মিটিং করতে দেখা গেছে। যা ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তৃণমূল ভোটারেরা। এছাড়া বিএনপির এই দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে বিপক্ষ দলের প্রার্থীরা।
চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “সামনে নির্বাচন, আমরা দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দল যাকে নমিনেশন দেবে আমরা তার হয়ে কাজ করব। আমরা এখন ভোটারদের কাছে যাচ্ছি, পাশাপাশি দলীয় প্রধানের নির্দেশে আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্যেও কাজ করছি।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী ছাইয়েদুল আলম বলেন, “তৃণমূল জনগণ আমাদের শক্তি। আমরা দলীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বছরের পর বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করছি। জেল-জুলুম সহ্য করেছি কিন্তু তৃণমূলকে কখনো ছেড়ে যাইনি। সামনে নির্বাচন, অনেক প্রার্থী থাকবে। বিভিন্ন কারণে ছোটখাটো অন্তঃকোন্দল থাকবে। সব ছাপিয়ে দল সবার আগে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছে সবার তথ্য রয়েছে। দল যাকে নির্বাচন করবে আমরা সবাই তার হয়ে দলের স্বার্থে কাজ করব।”
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র র জন ত ক জ কর আম দ র কম ট র সদস য আলম ব
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধূ উর্মি খাতুনের (৩০) মরদেহ উদ্ধারের অভিযোগে স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিক রানাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের মজমপুর গেট এলাকা থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
আরো পড়ুন:
সিলেটে ছুকিরাঘাতে মাদরাসা শিক্ষক নিহত
চাঁদপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিকশাচালক নিহত
এর আগে, শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে হাউজিং এফ ব্লকের একটি ভাড়া বাসা থেকে উর্মির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত উর্মি খাতুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মহিম মন্ডলের মেয়ে। প্রায় ৫ বছর আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার রানা খানের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। তারা কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন এবং সিটি কলেজের সামনে একটি কাপড় ও খাবারের দোকান পরিচালনা করতেন।
নিহতের ভাই আবু সাইদ অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের পর থেকেই রানা মাদকাসক্ত ছিলেন এবং এ কারণে একাধিকবার কারাগারে যান। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এ থেকেই ঝগড়া-বিবাদের জেরে মারধর ও শ্বাসরোধ করে উর্মিকে হত্যা করা হয়েছে।”
ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা স্বীকার করেছেন, স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহে তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে রানা উর্মিকে মারধর করে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তিনি বাইরে থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান।
ঢাকা/কাঞ্চন/মেহেদী